ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার থাবায় বিপন্ন হতে পারে ইইউ

প্রকাশিত: ০৮:৫৭, ৩১ মার্চ ২০২০

করোনার থাবায় বিপন্ন হতে পারে ইইউ

ইউরোপজুড়ে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় ভবিষ্যতে আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এর ধ্বংসাত্মক প্রভাবের ব্যাপারে ইউরোপের কর্মকর্তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেফ কোঁতে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যদি কোন ভুল করে তাহলে ইইউর অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে। এমন সময় তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেন যখন যুক্তরাষ্ট্রের পর ইতালি হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম করোনাভাইরাসে আক্রান্তের দেশ। করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় ইতালি চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে। ইতালির ৯৭ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট। গত কয়েক সপ্তাহে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইইউর দেশগুলো স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ইইউ প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম সদস্য দেশগুলো করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি পৃথক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ পরিস্থিতি আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ইউরোপের জন্য বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ম্যাকরণ ইইউভুক্ত দেশগুলোতে অবাধ ভ্রমণের জন্য প্রচলিত শেঙ্গেন ভিসার মৃত্যুর আশঙ্কা করে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সব দেশ যদি পরস্পরকে সহযোগিতা না করে তাহলে ইইউর মূলভিত্তি অর্থাৎ ‘শেঙ্গেন ভিসা’ পদ্ধতির বিলুপ্তি ঘটবে। করোনার প্রাদুর্ভাব অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলার পাশাপাশি ইইউর সদস্য দেশগুলোর কর্মকর্তাদের মধ্যেও বিভেদ সৃষ্টি করেছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ইতালি ও স্পেন। এ ক্ষেত্রে সহায়তা না করার কারণে ওই দুই দেশ ইউরোপের অন্য দেশের তীব্র সমালোচনা করেছে। ব্রিটেন, ফ্রান্সসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ করোনা প্রতিরোধের জন্য ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় রোগ প্রতিরক্ষা সামগ্রী অন্য কোন দেশে রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যাতে দেশের অভ্যন্তরে কোন ঘাটতি দেখা না দেয়। মারাত্মকভাবে করোনায় আক্রান্ত দেশগুলো ব্রিটেন ও ফ্রান্সের এ নীতির তীব্র সমালোচনা করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনার প্রভাবে ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যকার দূরত্ব ক্রমেই বাড়ছে এবং এ বিপর্যয় রোধে এ দেশগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান ইউরোপীয় পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে করোনা প্রতিরোধে একসঙ্গে কাজ করার জন্য ইউরোপের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের সবারই অভিন্ন দায়-দায়িত্ব রয়েছে। কারণ কোন দেশের একার পক্ষে এ ভাইরাস মোকাবেলা করা সম্ভব নয়।’ করোনাভাইরাসের থাবায় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে যাচ্ছে ইউরোপের দেশগুলো।
×