ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে সাকিব

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ৩০ মার্চ ২০২০

সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে সাকিব

মিথুন আশরাফ ॥ দুই হাজার সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাকিব আল হাসান। দেশের সেরা এ অলরাউন্ডার করোনাভাইরাস মোকাবেলার লড়াইয়ে শামিল হয়েছেন। নিজের গড়া ‘সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশনের’ মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিতদের সাহায্য করতে যাচ্ছেন তিনি।বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা নিজেদের বেতনের অর্ধেক অর্থ দান করেছেন করোনা মোকাবেলায়। এবার অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাকিব। ২০০০ পরিবারকে সাহায্য করছেন তিনি ‘মিশন সেইভ বাংলাদেশ’ প্রজেক্টের মাধ্যমে। নিজের ফেসবুক পেজে সাকিব এ নিয়ে লিখেছেন, ‘মিশন সেইভ বাংলাদেশ’ প্রোজেক্টটির উদ্দেশ্য হলো করোনাভাইরাসের কারণে প্রভাবিত নি¤œ আয়ের এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জীবিকার যোগান দেয়া। এ পর্যন্ত ২০০০ সুবিধাবঞ্চিত পরিবারকে সাহায্য করেছে এই প্রকল্পটি এবং এই সংখ্যাকে বৃদ্ধি করতে নিরলস প্রচেষ্টা চলছে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘সারাদেশ আজ লড়ছে একটি মহামারীকে রুখতে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অসংখ্য সুবিধাবঞ্চিত মানুষ দিন গুনছে কবে তাদের রোজগার আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। এই মানুষগুলোর প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে ‘দ্য সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন’ পদক্ষেপ নিয়েছে দেশ এবং সারাবিশ্বের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা থেকে ফান্ড উত্তোলনের। এই ফান্ড ব্যবহার করা হবে করোনাভাইরাসের কারণে প্রভাবিত সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সাহায্য করবার জন্য।’ দ্য ডেইলি স্টার, ঝযবনধ.ীুু এবং সমকালের যৌথ উদ্যোগে চলমান ‘মিশন সেইভ বাংলাদেশ’ প্রজেক্টের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়েছে সাকিবের নিজের গড়া ফাউন্ডেশন। করোনার মহামারী রুখতে সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন নিজেদের কাজ চালিয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বিশ্বের অনেক ক্রিকেটারই চ্যারিটিতে নাম লিখিয়েছেন। সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন সাকিবও। তিনি নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নাম দিয়েছেন, ‘দ্য সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন’। নিজের ফেসবুক পেজে এই সংগঠনকে সবার সামনে নিয়ে আসেন সাকিব। ফেসবুকে সংগঠনটির লোগোও উন্মোচন করেছেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। সাকিব একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘দ্য সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন, একটি সংস্থা পুরো বাংলাদেশের সকলের জীবনকে নিরাপদ ও উন্নত করার জন্য নিবেদিত। একসঙ্গে আমরা যে কোন কিছু মোকাবেলা করতে পারি। আসুন সবাই মিলে দল হিসেবে কাজ করি এবং বাংলাদেশকে বাঁচাতে এগিয়ে আসি।’ বছরজুড়েই ক্রিকেটারদের তৈরি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম চোখে পড়ে। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার গ্লেন ম্যাকগ্রা প্রতিবছরই হাজির হন তার নিজের তৈরি ‘ম্যাকগ্রা ফাউন্ডেশন’ নিয়ে। তার এই সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য জনগণের মধ্যে স্তন ক্যান্সার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। এছাড়া পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি বিভিন্ন বিপর্যয়ে ‘শহীদ আফ্রিদি ফাউন্ডেশন’ নিয়ে সাহায্যের উদ্দেশে নেমে পড়েন। এছাড়া এবার করোনাভাইরাসের বিপর্যয় রুখতে এগিয়ে এসেছে স্টিভেন স্মিথের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্টিভ স্মিথ ফাউন্ডেশন’। বিশ্বের সব নামী ক্রিকেটারদেরই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আছে। কিংবা কোন না কোনভাবে সেচ্ছাসেবা করে যান। অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি স্পিনার শেন ওয়ার্ন যেমন তার জিন প্রস্তুতকারক সংস্থার কাজ বন্ধ রাখেন। তার বদলে করোনা প্রতিরোধের জন্য ৭০ শতাংশের বেশি এ্যালকোহল রয়েছে এমন হ্যান্ডস্যানিটাইজার তৈরি করার ঘোষণা দেন। তা আবার ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ান হাসপাতালগুলোতে ন্যূনতম মূল্যে এই স্যানিটাইজার দেয়ার জন্য চুক্তিও করেন। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বৈশ্বিক বিপর্যয়ে এবার তাদের মতোই নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন সাকিব। সাকিব এখন আছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি স্বেচ্ছায় হোটেলে ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ আছেন। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা না করে একটি হোটেলে যান এই তারকা। সেখানে একা একটি রুমে আছেন। এ জন্য নিজের মেয়ের সঙ্গেও দেখা করেননি তিনি। এক ভিডিও বার্তায় মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিতে গিয়ে সাকিব নিজেই ভিডিওতে বলেন, ‘আমি মাত্রই যুক্তরাষ্ট্র এসে পৌঁছলাম। যদিও প্লেনে সব সময় ভয় কাজ করেছে একটু হলেও। তারপরও চেষ্টা করেছি, নিজেকে কীভাবে জীবাণুমুক্ত রাখা যায়। তারপর যখন আমি যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছলাম, আমি সোজা একটি হোটেলের রুমে উঠেছি। আমি ওদের (পরিবারকে) অবগত করেছি, এখানে থাকব কিছুদিন এবং আমি যেহেতু ফ্লাই করে এসেছি আমার একটু হলেও ঝুঁকি আছে। তাই আমি নিজেকে আইসোলেটেড করে রেখেছি।’ সঙ্গে সাকিব যোগ করেন, ‘আমি আমার বাচ্চার সঙ্গে দেখা করিনি। এটা অবশ্যই আমার জন্য কষ্টের। তারপরও আমার কাছে মনে হয়, আমার এই সামান্য স্যাক্রিফাইসটুকু করতে পারলে অনেক দূর এগুতে পারব।’ সাকিব এবার তার ‘সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশনের’ মাধ্যমে ‘মিশন সেভ বাংলাদেশ’ প্রজেক্টের সঙ্গে একত্রিত হয়ে করোনাভাইরাসের কারণে প্রভাবিত নিম্ন আয়ের এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
×