ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মোস্তাফা জব্বার

করোনার জন্য ডিজিটাল সমাধান

প্রকাশিত: ০৭:৪৮, ৩০ মার্চ ২০২০

 করোনার জন্য ডিজিটাল সমাধান

১৩ মার্চ ২০২০ খবরটা মোবাইল ওয়ার্ল্ডের লাইভ কর্মকা- থেকে আমার মেইলে এসেছে। এখন প্রতিদিনই বুলেটিনটি পাই। করোনা আক্রান্ত বিশ্বের জন্য খবরটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার নিজের কাছে মনে হয়েছে। ব্রিটিশ টেলিকমের প্রধান নির্বাহী ফিলিপ জেনসেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার পর স্বেচ্ছা গৃহবন্দিত্ব গ্রহণ করলেও তার প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই করে যাচ্ছেন। গত ১২ মার্চ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জেনসেন জানান যে, বিগত সপ্তাহে তিনি অনেকের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। ফলে এটি তার নৈতিক দায়িত্ব যে, সকলকে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত করণীয় বিষয়গুলো জানানো। তিনি ব্রিটিশ সরকারের জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলছেন বলেও জানানো হয়। ব্রিটেন গত ১১ মার্চ করোনাকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করে। ১২ মার্চ পর্যন্ত ব্রিটেনে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৯৬। ব্রিটিশ জনস্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ অনুসারে করোনা লক্ষ্মণ দৃশ্যমান হলে রোগীকে সাতদিন স্বেচ্ছাবন্দিত্ব নিতে হবে। প্রশ্নটা থেকেই যাবে, তিনি গৃহবন্দী থেকে কেমন করে তার প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। এরকম প্রশ্ন দেখা দেবে ব্রিটিশ রাজকুমার, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর জন্যও। একথা প্রযোজ্য হবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বা অন্য কোন দেশের মন্ত্রী সম্পর্কেও। করোনাভাইরাসের যে অবস্থা তাতে কোন দেশের কোন মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী, গ্রুপ অব কোম্পানিজের প্রধান নির্বাহী এর কবলে পড়ে গৃহবন্দী বা হাসপাতাল বন্দী হবেন, তার কোন নিশ্চয়তা বা খতিয়ান কেউ দিতে পারবে না। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীন করোনার প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দিয়ে ফেলেছে। ওদের জীবনযাত্রা এখন স্বাভাবিক হবার পথে। আমাদের প্রতিবেশী জনবহুল দেশ ভারত এখনও চীনের কাতারে বা ইতালির মতো না হলেও প্রবলভাবে সতর্ক রয়েছে। সেটি সীমান্ত বন্ধ করার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্ব যে এখন সীমান্তহীন তারও প্রমাণ আমরা নিজেরাই পেলাম। দক্ষিণ এশিয়ার নীতি নির্ধারকগণ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পরস্পর আলোচনা করে প্রমাণ করলেন যে, ডিজিটাল প্রযুক্তি সীমান্ত রেখাটিকে বিলীন করে দিয়েছে। আমরা সম্ভবত এই প্রথম আমাদের বয়সকালের সেরা অনুষ্ঠানটিকে কায়িক রূপরেখা থেকে ডিজিটাল করে দিয়েছি। ১৭ মার্চ ২০ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানটিকে ডিজিটাল করা হলো। করোনাভাইরাসের কারণে জনসমাগম বন্ধ করে দেয়ার ফলে অনুষ্ঠানটি মাঠ থেকে টিভি, কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের পর্দায় ওঠে এলো। এরই মাঝে অনেকেই ব্রিটেনের ফিলিপ জেনসেনের মতো ঘরে বসে অফিস করা শুরু করেছেন। এতে যে তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে তাও নয়। একজন সরকারী লোক হিসেবে আমি বরাবরই নথি বা ফাইলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকি। এ জন্য কায়িকভাবে অফিসে উপস্থিত থাকার প্রয়োজন নেই। ২৫ মার্চ আমি এডিপি সংক্রান্ত সভা করলাম ভিডিও কনফারেন্স। একইভাবে সভাসমূহ এমনকি হোয়াটসঅ্যাপ/স্কাইপেতে বা পেশাদারী ভিডিও পদ্ধতিতেও সম্পন্ন করা যেতে পারে। যোগাযোগর জন্য ইন্টারনেট বা মোবাইল প্রযুক্তি তো আছেই। যারা ভাবেন যে, এসব ভীষণ দামী বা জটিল প্রযুক্তি তারা ভুল ভাবছেন। এসব মোটেও দামী বা জটিল প্রযুক্তি নয়। আমাদের টেলিকম অপারেটরা তাদের কর্মীদের ঘরে বসেই কাজ করতে দিচ্ছে। তবে বিদেশ থেকে আসা কয়েক লাখ লোক সরকারী নির্দেশ অনুসারে ১৪ দিনের গৃহবন্দিত্ব না মেনে, পর্যটন কেন্দ্র ইত্যাদিতে ভিড় জমিয়ে বা সভা-সমাবেশ-বিয়ের অনুষ্ঠান-রাজনৈতিক জমায়েত ইত্যাদি করে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। প্রযুক্তির এই যুগে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরাও এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারি- আশা করি সবাই এটি উপলব্ধি করবেন। দেশের অবস্থাটা এখন অবশ্য বদলেছে। সেনাবাহিনী মাঠে নামায় অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। করোনা মোকাবেলায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ১৪ মার্চ আমাদের দেশীয় একটি পত্রিকায় এমএন ইসলাম নামক একজন তথ্যপ্রযুক্তির মানুষের লেখা ছাপা হয়েছে। তিনি কোরিয়া থেকে লেখাটি পাঠিয়েছেন। লেখাটির সঙ্গে একটি ছবিও ছাপা হয়েছে যাতে দেখানো হয়েছে যে, গাড়ি চালাতে চালাতে কেমন করে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা যায়। আমি কৃতজ্ঞচিত্তে এমএন ইসলামের লেখা থেকে কোরিয়া কর্তৃক করোনা প্রতিরোধের প্রযুক্তিগত বিষয়গুলোর অংশবিশেষ তুলে ধরছি। ‘প্রযুক্তিগত দক্ষতার ওপর নির্ভর করে দক্ষিণ কোরিয়া করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। কোরিয়ার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বা বিগডেটা ভান্ডার অত্যন্ত সমৃদ্ধ। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স-এআই)। কোরিয়ানরা ক্ষিপ্র গতিতে কাজ করতে অভ্যস্ত। ফলে নিজেদের কাজের গতি-দক্ষতা বেড়েছে কয়েকগুণ। এতদিন তারা প্রযুক্তিগত খাতে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের এ্যাপলের সঙ্গে সমান বা একটু এগিয়ে কোরিয়ান স্যামসং প্রতিযোগিতা করছে। জাপানের মতো প্রযুক্তির দেশেও কোরিয়ান স্যামসংয়ের আধিপত্য দৃশ্যমান হয়েছে। বিগডেটা এনালাইসিস, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আগাম সতর্কতা সহায়তা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া বেশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে করোনা আতঙ্ক মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।...সরকার নিয়ন্ত্রিত ‘বিগডেটা’র বিশাল তথ্য ভান্ডারে কোরিয়ার প্রতিটি নাগরিক ও বসবাসরত বিদেশিদের সব তথ্য থাকে। প্রতিটি সরকারি সংস্থা, হাসপাতাল পরিষেবা, আর্থিক সেবা সংস্থা, মোবাইল ফোন অপারেটরসহ সব ধরনের সেবা প্রদানকারীদের সিস্টেমের সঙ্গে ইন্ট্রিগেটেড এই তথ্য ভান্ডার। বিগ ডাটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে এটি একটি অনন্য দৃষ্টান্তও বটে। এই ইন্ট্রিগেটেড ডেটা ওয়্যারহাউসের পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কোরিয়া লড়াই করছে করোনাভাইরাসের সঙ্গে। এই বৈপ্লবিক তথ্য-উপাত্তের নানা রিয়েলটাইম রেসপন্স বা তথ্য দেশবাসীর কাছে পাঠাতে সহায়তা করছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় বানানো নানা এ্যাপ্লিকেশন। কোরিয়া তার তথ্য ভান্ডারকে প্রতি মুহূর্তে সমৃদ্ধ করছে। এমনকি নতুন করে করোনা আক্রান্ত মানুষদের চলাচল, ভ্রমণ বিবরণ বা বিগত দিনের বিভিন্ন কর্মকান্ড সংগ্রহ করে। এজন্য তারা মোবাইল নোটিফিকেশনের তথ্যাদিও সংগ্রহ করছে। এই তথ্যাদি একদিকে নাগরিকদের সহায়তা করছে, অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা যারা দিচ্ছেন তারাও পর্যাপ্ত তথ্য পাচ্ছেন। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, তথ্যই বস্তুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। কোরিয়া সেই তথ্য যাচাই বাছাই করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও বিগডাটাকে ব্যবহার করছে। এবার এটি প্রমাণিত হলো যে, নাগরিকদের তথ্যাদির ভান্ডার যদি গড়ে তোলা যায় তবে সেই তথ্য জরুরী অবস্থায় কত বিচিত্রভাবে ব্যবহার করা যায়। কোরিয়ার অগ্রযাত্রার পেছনে প্রযুক্তি যে বড় ভূমিকা পালন করছে, তাতে বিশ্ববাসীর কারও কোন সন্দেহ নেই। এবার করোনাভাইরাস মোকাবেলাতেই কোরিয়া ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার দৃষ্টান্তমূলকভাবে দেখিয়ে দিল। ড্রাইভ থ্রো ও মোবাইল পরীক্ষা কোরিয়ার একটি যুগান্তকারী কার্যক্রম হচ্ছে ড্রাইভ থ্রো পরীক্ষা। এই ব্যবস্থায় গাড়িচালক পরীক্ষা করে দেখে নিতে পারেন যে, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা। এমনকি নিজের মোবাইলেই খবর পাওয়া যায় যে, নিজের যাত্রাপথের কোথায় এমন ড্রাইভ থ্রো রয়েছে। এর বাইরেও দক্ষিণ কোরিয়া মোবাইল হাসপাতাল চালু করে করোনা মোকাবেলায় বাড়তি সুবিধা তৈরি করতে পেরেছে। এসব হাসপাতাল করোনাভাইরাস পরীক্ষায় সাধারণ মানুষের জন্য যুগান্তকারী সহায়তা করেছে। করোনা মোকাবেলায় ৫জি এটি সম্ভবত প্রথম দৃষ্টান্ত যে, কোরিয়ার ড্রাইভ থ্রো ব্যবস্থায় প্রয়োগ করা হয়েছে ৫জি প্রযুক্তি। অতি উচ্চ গতির এই মোবাইল প্রযুক্তি ড্রাইভ থ্রো ব্যবস্থাকে সক্রিয় রাখার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করেছে। আমরা যারা সারা বিশ্বে ৫জি প্রযুক্তির আগমন ও প্রসারের বিষয়গুলোর খবর রাখি, তাদের কাছে এটি একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। গতকালই লাইভ মোবাইল ওয়ার্ল্ড একটি প্রতিবেদন দেখছিলাম আর অনুভব করছিলাম যে, বহুল আলোচিত ৫জি পুরো সভ্যতাকে কোথায় নিয়ে যাবে। দক্ষিণ কোরিয়া খুব স্পষ্ট করে দেখিয়ে দিল যে, দুনিয়ার সকল দেশের আগে ৫জি চালু করার ইতিবাচক ব্যবহার তারা করতে পেরেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে কোরিয়ার যখন এমন সব খবর তখন নিজের অজান্তেই জানার ইচ্ছা হলো যে, বিভিন্ন দেশ করোনাভাইরাসের উৎপত্তি এবং এই ভাইরাস মোকাবেলায় কিভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তিকে ব্যবহার করছে। গুগল সন্ধান করে বিবিসির ৩ মার্চ তারিখের একটি প্রতিবেদন নজর কাড়ল। প্রতীক জাখারের এই প্রতিবেদনটিতে (https:/www.bbc.com/news/technology-51717164) চীনের প্রযুক্তি ব্যবহারের একটি খন্ড চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এতে বর্ণিত হয়েছে কেমন করে রোবট, স্মার্ট হেলমেট, তাপ পরিমাপক ক্যামেরা সংবলিত ড্রোন ও চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তির সফটওয়্যার ব্যবহার করে সেসবকে করোনা মোকাবেলায় ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, সেনজেনের পুডু টেকনোলজি অন্তত ৪০টি হাসপাতালে এমন রোবট সরবরাহ করেছে যা স্পর্শবিহীন সরবরাহ, জীবাণুমুক্তকরণ স্প্রে ও রোগ শনাক্তকরণের প্রাথমিক কাজ করতে সক্ষম। সেনজেনেরই মাইক্রোমাল্টিকপ্টার নামক একটি প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ, তাপমাত্র পরিমাপ ইত্যাদি কাজ করার জন্য ড্রোন তৈরি করে সরবরাহ করেছে। অন্যদিকে চীন উচ্চতর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির চর্চা করছে করোনাভাইরাস বিষয়ক গবেষণা করার জন্য। আলীবাবার মতে, তাদের কাছে শতকরা ৯০ ভাগ সঠিকতাসম্পন্ন ভাইরাস শনাক্তকরণের প্রযুক্তি রয়েছে। খুব সঙ্গত কারণেই জ্যাক মা ভ্যাকসিন তৈরির জন্য ২.১৫ মিলিয়ন ডলার দান করেছেন। চীনারা এত সচেতন যে, তারা হোয়াংজুর হোটেলে খাবার সরবরাহ করার জন্য রোবট ব্যবহার করছে। চীন দক্ষিণ কোরিয়ার মতোই বিগ ডাটা ব্যবহার করছে। তারা ফেস রিকগনিসন সফটওয়্যার ব্যবহার করছে এবং করোনা শনাক্ত করার কাজে সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। সেন্সটাইম নামক একটি প্রতিষ্ঠান এমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সফটওয়্যার তৈরি করেছে, যেটি স্পর্শ ছাড়াই তাপমাত্রা পরিমাপ করতে পারে। মেট্রো স্টেশন, কমিউনিটি সেন্টার বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব প্রযুক্তি স্থাপন করা হয়েছে। মেঘবি নামের আরও একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিষ্ঠান তাপমাত্রা পরিমাপক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সফটওয়্যার স্থাপন করেছে। সিচুয়ান প্রদেশ কর্তৃপক্ষ এমন সমআর্ট হেলমেট চালু করেছে, যা দিয়ে ৫ মিটারের মাঝে তাপমাত্রা পরিমাপ করা যায়। আলী পে হেলথ কোড নামের একটি মোবাইল এ্যাপ দিয়ে করোনাভাইরাস শনাক্ত করার সুযোগও তৈরি হয়েছে। এরই মাঝে চীনের ২০০ নগরীতে বিগ ডাটা শনাক্তকরণ প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে। পক্ষান্তরে আমরা যারা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লড়াই করছি, তারা এখনও সম্ভবত তৃতীয় শিল্প বিপ্লব ও তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিতেই সীমিত হয়ে আছি। কোরিয়া বা চীন যে ধরনের প্রযুক্তিকে দৈনন্দিন জীবনের অংশ বানিয়ে ফেলেছে, আমরা সেই পথে তেমনভাবে চলার কথাই ভাবছি না। আমাদের কাছে রোবোটিক্স, বিগডাটা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শখের বিষয়। রোবোটিক্স নিয়ে ক্লাব ধরনের কর্মকান্ড চলছে। বাকি সব বিষয়ে বস্তুত আমাদের নড়াচড়াই নেই। খুব সঙ্গত কারণেই করোনাভাইরাস বা স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে আমরা তেমন কোন সক্ষমতাই প্রদর্শন করতে পারবোনা। আমি আশা করবো, এই অভিজ্ঞতা থেকেও আমরা শিক্ষা নেব এবং সামনের দিন সম্পর্কে সচেতন হবো। বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি বাংলাদেশেও আমরা টেলিকম খাতের পক্ষ থেকে ডিজিটাল প্রযুক্তি দিয়ে করোনাভাইরাস মোকাবেলা করার উদ্যোগ নিয়েছি। টেলিকম কোম্পানিগুলোর ডিজিটাল পদ্ধতির অফিস করা ছাড়াও করোনার তথ্যসেবা গ্রহণকে টোল ফ্রি করে দিয়েছে। ফোনের রিং টোনে বাজছে করোনার সতর্কতা। ফোনে এসএমএস যাচ্ছে করোনার সতর্কতা বিষয়ক। সর্বোপরি টেলিকম কোম্পানি ও বিটিআরসির দেয়া তথ্য দিয়ে করোনা রোগী বা সন্দেহভাজনদের অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছে। এটি আমি নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি যে, আমরাও ডিজিটাল প্রযুক্তিকে করোনা প্রতিরোধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারি। এরই মাঝে অনলাইন শিক্ষার কার্যক্রমও শুরু করার কর্মসূচী নেয়া হয়েছে। ঢাকা ২৭ মার্চ ২০২০ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাসের চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক [email protected], www.bijoyekushe.net.bd, www.bijoydigital.com
×