ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এ ছুটি কর্তব্য সাধনের

প্রকাশিত: ০৭:৪৩, ৩০ মার্চ ২০২০

এ ছুটি কর্তব্য সাধনের

ছুটিতে গোটা বিশ্ব- এই ছিল শনিবারের জনকণ্ঠের প্রধান শিরোনাম। বলাবাহুল্য, এই ছুটি মধুর ছুটি নয়, নয় অবকাশ যাপনের সুবর্ণ সুযোগ। এই ছুটির পরতে পরতে রয়েছে উৎকণ্ঠা, আতঙ্ক, দুশ্চিন্তা। তবে এই ছুটি সার্বক্ষণিকভাবে কর্তব্য পালনের। পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মঙ্গল সাধনের জন্য প্রতিটি দিন সক্রিয়তার, সচেতনতার। পরিবারের যিনি প্রধান তার দায়িত্ব বেশি। তিনি যথাযথ নির্দেশনা দেবেন পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে। তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। এখন এটা স্পষ্ট যে, আমরা যদি সতর্ক ও সচেতন থাকি, সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করি তাহলে ভাইরাসটি আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। পৃথিবীব্যাপী কোটি কোটি মানুষ অফিস-আদালতে না গিয়ে ঘরে থাকায় অনেক ইতিবাচক পরিবর্তনও দেখা দিতে শুরু করেছে। কলকারখানা বন্ধ থাকায় কার্বন নিঃসরণ কম হচ্ছে। পরিবেশ দূষণ কম হচ্ছে। ফলে প্রকৃতি যেন আবার পরিশুদ্ধ হয়ে উঠছে। চীন জানুয়ারির শুরুতেই আঁচ করতে পেরেছিল মানুষকে বিচ্ছিন্ন না করতে পারলে এই ভাইরাসের বিস্তৃৃতি রোধ করা যাবে না। খানিকটা দেরিতে হলেও হুবেই প্রদেশের উহানকে বিচ্ছিন্ন করে সবাইকে ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছিল। বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল গোটা চীনের সব কারখানা। চীন গোটা রাষ্ট্রকে ছুটি দিয়ে নোভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার থামিয়ে দিয়েছে। করোনার বিস্তার রোধে তিন সপ্তাহের জন্য যুক্তরাজ্যকে লকডাউন করার আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসকে দশকের ‘বৃহত্তম হুমকি’ উল্লেখ করেন। বাস্তবতা হলো এখন তিনিও করোনাভাইরাস সংক্রমিত। সুখবরও আছে। মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে হতে যাওয়া অর্থনৈতিক ক্ষতির মোকাবেলা এবং যে কোন মূল্যে কোভিড-১৯-এর বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ২০ অর্থনীতির দেশের নেতারা। বৃহস্পতিবার দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা প্রাণঘাতী নোভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জি-২০-এর পদক্ষেপ কি হতে পারে তা ঠিক করতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ জরুরী সম্মেলনে যোগ দেন। দেশে মানুষ ঘরে অবস্থান করছে। কিন্তু ঘরের বাইরেও যেতে হচ্ছে অনেককে জরুরী প্রয়োজনে। সার্বক্ষণিকভাবে ঘরে থাকার জন্য মানুষের ওপর বন্দিত্বের অনুভূতিসহ নানা মনোস্তাত্ত্বিক চাপ আসাটা স্বাভাবিক। এ সময় তার করণীয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা চাই। একই সঙ্গে একান্ত জরুরী প্রয়োজনে পরিবারের কাউকে না কাউকে নিয়মিত বা অনিয়মিতভাবে ঘরের বাইরে যেতে হচ্ছে। ঘরের বাইরে বেরোনো ওই ব্যক্তিই যখন আবার ঘরে ফিরে আসছেন তখন তার নিজের ও পরিবারের সুরক্ষার জন্য নির্দিষ্ট করণীয় রয়েছে। এসব তথ্য ও বার্তা ঘরে ঘরে পৌঁছানোর জন্য গণমাধ্যমের ভূমিকাই প্রধান। তবে স্থানীয়ভাবে জনপ্রতিনিধিরও দায়িত্ব রয়েছে। অনলাইনে বার্তা প্রেরণের সুবিধা এনে দিয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। শুধু কম্পিউটার নয়, একই সঙ্গে টেলিভিশনের মাধ্যমে ভিডিও বার্তা দেয়া যায়। টেলিফোনেও তথ্য সহায়তা দেয়া সম্ভব। এসব বিষয়ে মানুষের ভোটে নির্বাচিত মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী হিসেবে স্থানীয় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির ভূমিকা গ্রহণের বিরাট সুযোগ রয়েছে। জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণের বিশেষ বিশেষ অংশ বারবার প্রচার করা যেতে পারে। ছুটি শেষে সুস্থ শরীরে কাজে যোগদানের জন্য ঘরে থাকা ও নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনের কোন বিকল্প নেই।
×