ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভিডিও কনফারেন্সে চিকিৎসা সহায়তা পাবেন চিকিৎসকরা

প্রকাশিত: ১১:০২, ২৯ মার্চ ২০২০

ভিডিও কনফারেন্সে চিকিৎসা সহায়তা পাবেন চিকিৎসকরা

ফিরোজ মান্না ॥ বাংলাদেশে কঠোরভাবে ‘কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস’ মোকাবেলা করতে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ভিডিও কনফারেন্স সিস্টেমে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবায় সহযোগিতা পাবেন দেশের চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় হুয়াওয়ের কাছ থেকে এই সহযোগিতা সহজেই নিতে পারবে। ইতোমধ্যে হুয়াওয়ে স্বাস্থ্য, পররাষ্ট্র ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। হুয়াওয়ের উন্নত প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে দূরবর্তী যোগাযোগ এবং ‘কোভিড-১৯’ শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে পারবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ভিডিও কনফারেন্স সিস্টেমটি ফোর-কে ভিডিও প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ক্ষেত্র ও প্রেক্ষাপটে বুদ্ধিবৃত্তিক সমাধান দিতে সক্ষম হুয়াওয়ে। এর সাহায্যে করোনাভাইরাসের মতো মহামারীর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে। দূর থেকে পর্যবেক্ষণ ও কার্যকর সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে দূরবর্তী স্থান থেকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেয়ার বিষয়টি হুয়াওয়ে বেশ আগে থেকেই করে আসছে। এছাড়া এআই-ভিত্তিক স্ক্রিনিং সমাধান ও পরিমাণগত বিশ্লেষণ পদ্ধতির সেবা হাসপাতালগুলোর রোগ নির্ণয় দক্ষতাকে আরও উন্নত করতে সহায়তা করবে। করোনা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়Ñ সেটাকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহযোগিতায়ও দেবে এই প্রযুক্তি। সম্প্রতি হুয়াওয়ের সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সরাসরি আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনা শেষে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য আমি হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিক সমাধানগুলো কঠিন এই সময়ে দক্ষভাবে সবকিছু সামাল দিতে চীনকে যথেষ্ট সহায়তা করেছে। বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে আমরাও এগুলো কাজে লাগাতে পারি। হুয়াওয়ে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিতকরণ ও উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি উন্নত ও সংযুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলার চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে হুয়াওয়ে একটি পরিপূর্ণ আইসিটি সল্যুশন পোর্টফোলিও প্রতিষ্ঠা করেছে। গ্রাহকদের টেলিকম ও এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক, ডিভাইস এবং ক্লাউড কম্পিউটিংর সুবিধাসমূহ প্রদান করে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ১৭০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে সেবা দিচ্ছে, যা বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার সমান। এক লাখ ৮০ হাজার কর্মী নিয়ে বিশ্বব্যাপী টেলিকম অপারেটর, উদ্যোক্তা ও গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করে ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক সমাজ তৈরির লক্ষ্যে হুয়াওয়ে এগিয়ে চলেছে। একভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন হুয়ায়ের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের দীর্ঘদিনের এই সম্পর্ক বন্ধুত্বের অনন্য এক উদাহরণ। বন্ধুত্বের এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ‘কোভিড-১৯’ মোকাবেলায় হুয়াওয়ের মতো একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, সেটা সত্যিই অসাধারণ। আমরা হুয়াওয়ের সহযোগিতায় বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ভাল ফল পাবো। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনায় যোগ দেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। তিনি হুয়াওয়ের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি চীনের করোনা চিকিৎসায় বড় ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমানে চীনে করোনা পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবেলা করে বিশ্বে অন্যান্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দেশের জন্য হুয়াওয়ের এই সহযোগিতা একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। বাংলাদেশে নিযুক্ত হুয়াওয়ে টেকনোলজিস লিমিটেডের সিইও ঝাং ঝেংজুন ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন। তিনি হুয়াওয়ে বাংলাদেশ ‘কোভিড-১৯’ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ভাইরাসটির আক্রমণ থেকে কর্মীদের রক্ষা করতে ইতোমধ্যেই কঠিন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে হুয়াওয়ে বাংলাদেশ। ‘কোভিড-১৯’ মোকাবেলায় হুয়াওয়ে সব সময়ই বাংলাদেশের পাশে থাকবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করবে। চীনে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করেই করোনাভাইরাস মোকাবেলা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, শীর্ষস্থানীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে, গত ২১ বছর ধরে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প, টেলিকম অপারেটর এবং স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যার মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে তথ্যপ্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিয়ে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’র স্বপ্ন পূরণে অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছে। এছাড়া বিভিন্ন সিএসআর কর্মসূচী পরিচালনার মাধ্যমে সামাজিক ক্ষেত্রেও নানান অবদান রাখছে হুয়াওয়ে।
×