ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে বাজার নিয়ে বৃদ্ধ রিক্সা চালকের বাড়ি গেলেন ওসি

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ২৮ মার্চ ২০২০

বাউফলে বাজার নিয়ে বৃদ্ধ রিক্সা চালকের বাড়ি গেলেন ওসি

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল ॥ করোনাভাইরাসের কারণে হতদরিদ্র মানুষ যখন ঘরের বাইরে যেতে পারছেনা। একরকম অর্ধহারে-অনাহারে কাটছিল তাদের দিন। ঠিক সেই সময় তাদের পাশে এসে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বাউফল থানার ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি ১০ দিনের চাল,ডাল, আলু, পিয়াজ আর তৈল কিনে তাদের বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিচ্ছেন। দাশপাড়া ইউনিয়নের ষাটোবর্ধ রিকশাচালক লাল মিয়া হাওলাদার বলেন, ‘দৈনিক রিক্সা চালাইয়্যা যা কামাই করতাম তা দিয়া কোনরকম আমার ৬ জনের সংসার চলতো। করোনার ভয়ে অহন রিক্সা চালাইতে পারিনা। তাই ৪দিন ধইরা কোন রকম খাইয়া না খাইয়া আছি। শুক্রুবার ওসি স্যারে আমার বাসায় আইয়্যা হাজির। সাথে দুই তিনজন পুলিশ। তহন আমি ভয় পাইছি, মনে করছি কোন কারণে আমারে মনে হয় ধরতে আইছে। তহন ওসি স্যারে হাসি দিয়া কইলো, আমি আপনাকে ধরতে আসিনাই, আপনার জন্য বাজার করে নিয়া আসছি। এই বস্তার মধ্যে চাল, ডাল, আলু, পিয়াজ ও তৈল আছে। তহন আমি আনন্দে কাইন্দা দিছি। সত্যি ওসি স্যার একজন ভাল মানুষ।’ দাশপাড়া ৪নং ওয়ার্ডের শারীরিক প্রতিবন্ধী রিকশাচালক ফিরোজ আলম (৩৮) বলেন, ‘আমি দিন আনি দিন খাই। চারদিন ধরে আয় বন্ধ। ঘরের খাওন শেষ। বউ বাচ্চা ঘ্যান ঘ্যান করে। কি করমু ভেবে পাইনা। ঠিক তহন ওসি স্যারে বাজার সওদায় নিয়া আমার ঘরে হাজির। কি আর কইবো, তহন আনন্দে চোহে পানি আইয়্যা গ্যাছে।’ পৌর শহরের ৫নং ওয়ার্ডের বিধবা সূর্য ভানু বলেন,‘ অন্যর ঘরে ঝিএর কাম করতাম। করোনাভাইরাসের কারণে কাম বন্ধ হইয়্যা গ্যাছে। বড় পোলায় বাজারে কাম করতো, অহন তারও কামকাইজ নাই। কোন রহম খাইয়্যা না খাইয়্যা আছি। আইজ সকালে (শনিবার) ওসি স্যারে ঘরে আইয়্যা চাউল, ডাইল বাজার সওদায় দিয়া গ্যাছে। ম্যালা খুশি হইছি, আল্লাহ স্যারের বাচাইয়া রাখুক।’ এরক আরও অনেক দিনমজুর হতদরিদ্রদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল, ডাল, আলু, পিয়াজ ও তৈল কিনে পৌঁছে দিয়েছেন ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। বাউফল থানার ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘জেলা পুলিশের অভিভাবক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান স্যারের নির্দেশনায় প্রকৃত অসহায়, রিকশাচালক, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের বাড়িতে গিয়ে ১০ দিনের চাল, আলু, মুসুরের ডাল, পেঁয়াজ, সয়াবিন তৈল পৌঁছে দিয়েছি। এই সেবা অব্যহত থাকবে।’
×