ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টোলারবাগে আতঙ্ক ॥ পুলিশ চেকপোস্ট, লকডাউন

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ২৭ মার্চ ২০২০

টোলারবাগে আতঙ্ক ॥ পুলিশ চেকপোস্ট, লকডাউন

গাফফার খান চৌধুরী ॥ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার টোলারবাগে দুজনের মৃত্যুর পর ওই বাড়ি দুটির চারদিকের অন্তত আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অলিখিত কারফিউ চলছে। বাড়িটির চারদিকের সব প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে বাড়িটি দুটির আশপাশের লোকজন আর যাতায়াত করতে পারছেন না। পুরো এলাকা লকডাউন হয়ে গেছে। বাড়ি দুটির চারদিকে আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়েছে। প্রতিটি চেকপোস্টে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এমন ঘটনার পর পুরো এলাকায় এমনিতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সেই আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) একটি ঘোষণা। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকের ভাষ্য মোতাবেক, টোলারবাগে স্বল্প পরিসরে করোনা ভাইরাসের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন অর্থাৎ সামাজিক বিস্তার ঘটতে পারে। এমন ঘোষণার পর টোলারবাগসহ আশপাশের এলাকার মানুষজন রীতিমতো আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। লকডাউন করে দেয়া বাড়ি দুটির আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এদিকে পুলিশ ও স্থানীয়রা ওই বাড়ি দুটির আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারা যাতে পালিয়ে যেতে না পারেন, এজন্য পাহারা দিচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, বাড়ি দুটির অবস্থান মিরপুর-১ নম্বরের দিকে যেতেই বাম দিকের উত্তর টোলারবাগের শেষ মাথায়। বাড়ি দুটির পেছন দিক দিয়ে এক খাল চলে গেছে। মৃতপ্রায় সেই খালের পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে বাড়ি দুটি। বাড়ি দুটির পাশেই ঢাকার মিরপুরের উত্তর বিশিলের বিশাল আবাসিক এলাকা। আর বাড়িটির সামনে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক কোয়ার্টার। বাড়ি দুটি থেকে পূর্ব দিকে মূল রাস্তার পাশেই পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়েছে। সেখানকার লোহারগেট তালা দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সকাল থেকে শুরু করে রাস্ত পর্যন্ত সেখানে পাহারায় রয়েছে পুলিশ ও স্থানীয় জনতা। বুধবার রাতে সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, লোহার গেটের পাশের পর পর তিনটি মুদি দোকান খোলা। দোকানের সামনেই এক যুবক টোলে বসে একটি প্লাস্টিকের টেবিলের ওপর মাস্ক বিক্রি করছেন। মাস্ক কেনার অজুহাতে কথা হচ্ছিল তার সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, আমি গরিব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। টাকা রোজগার না করলে না খেয়ে থাকতে হবে। ঢাকার এত জায়গা থাকতে ওই বাড়ির সামনে পুলিশ চেকপোস্টের কাছেই মাস্ক বিক্রি করার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইতেই তিনি চমকে উঠলেন। জানালেন, এখানে মাস্ক বিক্রি করার অন্য আরেকটি কারণ আছে। তিনি বলছিলেন, স্থানীয়দের অনুরোধে এবং নিজের স্বার্থেই তিনি এখানে পাহারা দিচ্ছেন। যাতে লকডাউন করে দেয়া বাড়ি দুটি বা তার আশপাশের বাড়ি থেকে কোন লোকজন যাতে পালাতে না পারে। অনেক সময় পুলিশ খাবার জন্য বা অন্য কোন জরুরী কাজে কাছাকাছি কোথাও চলে যায়। সেই সময় ওইসব বাড়ি থেকে যাতে লোকজন বেরিয়ে পালাতে না পারে, এজন্য তার মতো আশপাশের দোকানদাররাও পাহারা দিচ্ছেন।
×