ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে বিদেশী জাহাজ

প্রকাশিত: ০৮:৪৮, ২৭ মার্চ ২০২০

কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে বিদেশী জাহাজ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ করোনাভাইরাস ঠেকাতে সতর্কতা হিসাবে নানা উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। নাবিকদের জ¦র পরিমাপ ছাড়াও কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে বিদেশী জাহাজগুলোকে। বিশেষ করে চীন থেকে আসা জাহাজগুলোর জন্য ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করেছে বন্দর। এদিকে, কর্মপদ্ধতি নির্ধারণে মঙ্গলবার বৈঠক করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও সশস্ত্র বাহিনী। একসঙ্গে ৫-৭ জনের বেশি জড়ো হওয়া ঠেকাতে মাঠ পর্যায়ে সিভিল প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করবেন সেনা সদস্যরা। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনসহ রাষ্ট্রায়াত্ত সেবা সংস্থাসমূহ যে যার মতো করে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এদিকে, সরকার ঘোষিত ছুটি শুরু না হলেও মঙ্গলবার থেকেই সড়কে যানবাহন চলাচল কমে গেছে। সময় যতই গড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা ততই বাড়ছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, বিদেশ থেকে আসা জাহাজের এ পর্যন্ত ৭ হাজার ১৭২ জন নাবিকের জ¦র পরিমাপ এবং তাদের মধ্যে করোনার লক্ষণ রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়েছে। বাংলাদেশে বেশি পণ্য আমদানি হয় চীন থেকে। করোনার প্রাদুর্ভাব প্রথমে চীন থেকে শুরু হওয়ায় ওই দেশ থেকে আসা জাহাজগুলোকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। চীনের বন্দর ত্যাগের দিন থেকে হিসাব করা হচ্ছে এ ১৪ দিন। সে হিসাবে একটি জাহাজ যদি ১২দিনে পৌঁছে যায় তাহলে বাকি দু’দিন থাকতে হবে কোয়ারেন্টাইনে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মোঃ জাফর আলম জানান, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে বন্দরে প্রবেশের প্রতিটি গেটে হাতধোঁয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কারও শরীরে জ¦র ধরা পড়লে তাকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেই হ্যান্ডস্যানিটাইজার প্রস্তুতের উদ্যোগ নিয়েছে। বন্দরের প্রতিটি টার্মিনালে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও রয়েছে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। তবে নিষেধাজ্ঞা থানায় এ মুহূর্তে কোন ফ্লাইট আসছে না। যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা প্রস্তুত রয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়েছে। প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া লোকজন যেন ঘর থেকে বের না হন এবং বের হলেও নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে চলে তা নিশ্চিত করা হবে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার এক বৈঠকে কর্মকৌশল ঠিক করা হয়েছে। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোলা হয়েছে ফ্লু কর্নার। জেনারেল হাসপাতালেও করা হয়েছে একই ধরনের ব্যবস্থা। ফৌজদারহাটে অবস্থিত বক্ষব্যাধি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হবে। এছাড়া বেসরকারী প্রত্যেকটি হাসপাতালকে কমপক্ষে দুটি করে আইসিইউ বেড প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ভেন্যু ঠিক করা হয়েছে ৫টি। এগুলো হচ্ছে সিআরবিতে অবস্থিত রেলওয়ে হাসপাতাল, হালিশহরের পিএইচ আমিন একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়, বহদ্দারহাটের সিডিএ গার্লস স্কুল, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের শেখ ফজিলাতুন্নেসা হল এবং পটিয়ার মুজাফফরাবাদ স্কুল। জীবাণুনাশক ছিটাল সিএমপি ॥ চট্টগ্রাম মহানগরীতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে মঙ্গলবার জীবাণুনাশক ছিটিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। দুপুরে নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইন্স, পুনাক মোড় এবং ওয়াসা মোড়সহ আশপাশের এলাকায় জলকামান দিয়ে এ জীবাণুনাশক ছিটানো হয়। কর্মসূচী উদ্বোধন করেন সিএমপি কমিশনার মোঃ মাহবুবর রহমান।
×