ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

করোনা আতঙ্কে দুধ সংগ্রহ বন্ধ, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

চট্টগ্রামে দেড় হাজার দুগ্ধ খামারি বিপাকে

প্রকাশিত: ১১:৪২, ২৬ মার্চ ২০২০

চট্টগ্রামে দেড় হাজার দুগ্ধ খামারি বিপাকে

বিকাশ চৌধুরী, পটিয়া, চট্টগ্রাম, ২৫ মার্চ ॥ করোনা আতঙ্ক সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমান সময়ে এখানকার দেড় হাজার দুগ্ধ খামারি বিপাকে পড়েছেন। আজ (বৃস্পতিবার) থেকে টানা ১০ দিন সরকারী ও বেসরকারী সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার পর দুগ্ধ খামারিদের মাঝে নতুন করে হতাশা দেখা দিয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় লিমিটেড (মিল্ক ভিটা) ইতোমধ্যে প্রান্তিক খামারিদের থেকে গরুর দুধ সংগ্রহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে দুগ্ধ খামারিরা প্রতিদিনের তিন লাখ ২৫ হাজার লিটার দুধ নিয়ে চিন্তিত। বুধবার সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডেইরি ফার্মারস এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। ডেইরি ফার্মারস এ্যাসোসিয়েশনের চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি মোঃ ইকবাল হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক ও মিল্ক ভিটার চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোঃ নাজিম উদ্দিন হায়দার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। হঠাৎ করে প্রান্তিক খামারিদের গরুর দুধ সংগ্রহ বন্ধ, গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধি ও মিষ্টির দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে মূলত খামারিরা বিপাকে পড়েছেন। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা, পটিয়াসহ দেড় হাজার দুগ্ধ খামারি রয়েছে। খামারিদের উৎপাদিত দুধ বিভিন্ন মিষ্টির দোকান, মিল্ক ভিটা ছাড়াও মানুষের নিত্যদিনের খাবার ছিল। খামারি সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা, পটিয়া উপজেলা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় দেড় হাজারের অধিক গরুর খামার রয়েছে। মিল্ক ভিটার চট্টগ্রামে পটিয়া দুগ্ধ শীতলীকরণ নামের একটি কেন্দ্র রয়েছে। এই শীতলীকরণ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ৭-১০ হাজার লিটার দুধ মিল্ক ভিটার ঢাকার পূর্ণাঙ্গ কারখানায় পাঠানো হয়। অন্য খামারিরা মিষ্টির দোকান ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় খুচরা ও পাইকারী দুধ বিক্রি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু করোনার ইস্যুতে বন্ধ হয়ে গেছে দুধ বিক্রি। এদিকে ওষুধ ও মুদির দোকান ছাড়া বাকি অন্যসব দোকান বন্ধ ঘোষণা করা হলে পাইকারী ও খুচরা দুধ ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েন। মিল্ক ভিটার কারখানা চালু রেখে প্রান্তিক খামারিদের থেকে অধিক দুধ সংগ্রহ, সরকারীভাবে ঘোষিত বন্ধের সময় খামারিদের উৎপাদিত দুধ (শিশু খাদ্য) বাজারজাত ও বিতরণ করার সুযোগ প্রদান, ডেইরি শিল্পকে ঠিকে রাখতে গো খাদ্যের দোকান খোলা রাখা ও গো খাদ্যের উচ্চমূল্য বিক্রির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের কিস্তি ন্যূনতম তিন মাস বন্ধ রাখার দাবি জানান। মিল্ক ভিটার চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডেইরি ফার্মারস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন হায়দার জানিয়েছেন, খামারিদের গরুর দুধ ইতোমধ্যে বাজারজাত বন্ধ হয়ে গেছে। যার কারণে চট্টগ্রামে দেড় হাজার দুগ্ধ খামারি বিপাকে পড়েছেন। খামারিদের উৎপাদিত দুধ বিভিন্ন মিষ্টির দোকান, মিল্ক ভিটা ছাড়াও মানুষের নিত্যদিনের খাবার ছিল। এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন। শিশু খাদ্য দুধ বাজারজাত স্বাভাবিক রাখতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
×