ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে পালানোদের ধরতে পুলিশ হিমশিম

প্রকাশিত: ১১:১৫, ২৬ মার্চ ২০২০

হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে পালানোদের ধরতে পুলিশ হিমশিম

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও থানা এলাকায় প্রতিদিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বা আসা লোকের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে বিভিন্ন জেলায় এমন লোকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৮ হাজার। পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিজ নিজ অঞ্চলে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এদিকে বিদেশফেরতদের মধ্যে অনেকে পালিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে গেছে। পুলিশ ছাড়াও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন এদের ধরতে মরিয়া হয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে স্বেচ্ছা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বহু লোক ১৪ দিন পর সুস্থতার ছাড়পত্র নিয়ে নিরাপদ অবস্থানে চলে যাচ্ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ২০১, কিশোরগঞ্জে ১১১, নরসিংদীতে ৫৬৬, নীলফামারীতে ২১৪, মুন্সীগঞ্জে ৪২৭, রাঙ্গামাটিতে ১১৭, গাইবান্ধায় ২৮৪, নওগাঁয় ৯২২, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৪৬২, যশোরের কেশবপুরে ৬১, মৌলভীবাজারে ১২৮, ভোলায় ৩৫৮, মানিকগঞ্জে ছয়টি পরিবার, বগুড়ায় ৭৮, সাতক্ষীরায় ১৫৬২, বরিশালে ১২৩ ও হবিগঞ্জে ৮৯৫, বাঁশখালীতে ১৬৭ জন। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতার পাঠানো। নারায়ণগঞ্জ ॥ জেলায় নতুন করে আরও ১৫ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে এসেছেন। এ নিয়ে জেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনের সংখ্যা দাঁড়ালো ২০১ জনে। বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ জানান, এরই মধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২৩ জন। মঙ্গলবার পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিল ১৮৬ জন। তিনি বিদেশ ফেরত লোকজনকে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে দ্রুত হোম কোয়ারেন্টাইনে অবস্থান করার আহবান জানান। কিশোরগঞ্জ ॥ বুধবার দুপুর পর্যন্ত এখানে নতুন করে ১১১ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় ৮ জন, হোসেনপুরে ৩ জন, তাড়াইলে ১ জন, কটিয়াদীতে ১৮ জন, কুলিয়ারচরে ২ জন, ভৈরবে ৭০ জন, বাজিতপুরে ৬ জন ও ইটনায় ৩ জনকে নতুন করে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। খুলনা ॥ খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (খুমেক) করোনা আইসোলিশন ইউনিটে এক পুলিশ সদস্যকে ভর্তি করে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে তাকে হাসপাতালে আনা হলে শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তাকে করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে (কেএমপি) কর্মরত। নরসিংদী ॥ করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কায় নরসিংদীতে জনমনে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। ইতোমধ্যেই জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার দোকান পাট বন্ধ হয়ে গেছে। রাস্তাঘাট হয়ে পড়েছে জনশূন্য। করোনা ভাইরাস সন্দেহে বিদেশ ফেরত ৫৬৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাইকিং চলছে জেলার সর্বত্র। নীলফামারী ॥ নীলফামারীতে নতুন করে বিদেশ ফেরত হোম কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হয়েছেন ১৬ জন। এ নিয়ে জেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনের সংখ্যা ২১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ হয়েছে ৬৫ জনের। তারা সকলে সুস্থ আছেন। বুধবার দুপুরে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র মতে, জেলায় গত ১ ডিসেম্বর থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত বিদেশ ফেরতের সংখ্যা ২৭৯ জন। তবে জেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনের থাকা ২১৪ ব্যক্তিদের বাড়িতে লাল পতাকা টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়নি। মুন্সীগঞ্জ ॥ জেলার ছয়টি উপজেলায় ৪২৭ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। তাদেরকে বাড়িতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবস্থান করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আরও একজন মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনে এক কক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন থেকে হোম কোয়ারেন্টাইনে গেছেন। এরা সবাই প্রবাসী। গেল ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৪০ জন হোম কোয়ারেন্টানে আছেন এবং ছাড়পত্র পেয়েছেন ১০ জন। এই নিয়ে গেল কয়েকদিনে ১৭০ জন হোম কোয়ারেন্টাইন সম্পন্ন করেছেন। বুধবার দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডাঃ আবুল কালাম আজাদ। রাঙ্গামাটি ॥ করোনাভাইরাসের ছোবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য রাঙ্গামাটি পৌরসভা সারা শহরের সড়কগুলোতে জীবাণু নাশক ওষুদের পানি দিয়ে স্প্রে করা অভিযান শুরু হরেছে। বুধবার থেকে পৌরসভার কয়েকটি পানির ট্রাংকার দিয়ে সড়কে স্প্রে করার এই অভিযান শুরু করেছে। এদিকে ২০টি দেশ থেকে রাঙ্গামাটিতে ফেরা ২৬৩ প্রবাসীর মধ্যে ১১৭ জনের কোন হদিস মেলেনি। এই সব প্রবাসী গত ১ থেকে ২১ মার্চ মধ্যে রাঙ্গামাটি প্রবেশ করেছে। গাইবান্ধা ॥ করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে গাইবান্ধার বিভিন্ন স্থানে বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের উপর কড়া নজরদাড়ি রাখা হচ্ছে। আগত ২৮৪ জন ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন বিদেশী, ১৭৫ জন প্রবাসী ও ১০০ জন দেশী। এদের মধ্যে ২ জন আক্রান্ত। এছাড়া ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকায় ৪৩ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এখন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ২৩৯ জন। পাবনা ॥ পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত্র সন্দেহে তাকে কোয়ারেন্টাইনে প্রেরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেয়া চিকিৎসক নার্সসহ ৯ জনকে ও হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বুধবার সকালে পাবনার সিভিল সার্জন বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে নিশ্চিত করেছেন। বাউফল ॥ বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসক (৩৬) ও এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইবারকে (৩৮) হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে এক যুবকে (২৫) চিকিৎসা নিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। এর পর থেকে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইবারকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। নওগাঁ ॥ জেলার ১১ উপজেলার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮টি উপজেলায় নতুন করে ৩৮ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানা হয়েছে। এই ২৪ ঘণ্টায় ১৪ দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ১০টি উপজেলা থেকে মোট ৯১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ শত ২৮ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বর্তমানে ১৪৬২ জন প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। করোনা মোকাবেলায় বিশেষ ব্যাবস্থা হিসেবে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়ার বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ব্রাহ্মণবাড়িয়া হার্ট ফাউন্ডেশন ও পৌর আধুনিক সুপার ভবনের ৩য় তলা চিকিৎসা দেয়ার জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জন মোঃ শাহ আলম জানান, এখনও পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত কোন ব্যক্তি শনাক্ত হয়নি।
×