ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পিপিইর ঘাটতি মেটাতে এগিয়ে এসেছে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি

প্রকাশিত: ১০:০৬, ২৬ মার্চ ২০২০

পিপিইর ঘাটতি মেটাতে এগিয়ে এসেছে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি

করোনাভাইরাসের কারণে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনে বিঘœ ঘটায় বেশিরভাগ দোকান ও শোরুম বন্ধ থাকলেও ডিজাইনার, নামীদামী ব্র্যান্ড ও ফ্যাশন জগতের জায়ান্টরা এখন উপদ্রুত দেশগুলোতে মাস্ক, পারসোনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) ও কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় নানান উপকরণের ঘাটতি মেটাতে নেমে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোতে বিভিন্ন কারখানা মাস্ক, পিপিই ও চিকিৎসা উপকরণের উৎপাদন বাড়াতে কাজ করলেও তা পর্যাপ্ত না হওয়ায় করোনাভাইরাসের দাপট কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন। বাধ্য হয়ে অনেক স্বাস্থ্যকর্মীকেই রোগীদের ব্যবহৃত পুরনো মাস্ক পুনর্ব্যবহার করতে হচ্ছে কিংবা নিজেদেরই বানিয়ে নিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ভাইরাস উপদ্রুত অঙ্গরাজ্য নিউইয়র্কের গবর্নর এ্যান্ড্রু কুমো টুইটারে সবাইকে সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। ‘আমাদের সৃজনশীল কোম্পানিগুলোকে দরকার যারা স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করতে পারবে,’ লিখেছিলেন তিনি। তার এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেক কোম্পানিই তাদের উৎপাদনের ধরন বদলে, সেলাই কর্মী ও অব্যবহৃত কাঁচামাল ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় উপকরণ বানানোর ঘোষণা দিয়েছে। কুমোর ডাকে সাড়া দেয়া প্রথম ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন ফ্যাশন ডিজাইনার ও ‘প্রজেক্ট রানওয়ে’র এ্যালামনাই ক্রিস্টিয়ান সিরিয়ানো। ‘যদি নিউইয়র্কের গবর্নর কুমো মাস্কের দরকারের কথা বলে থাকেন, আমার দল কিছু বানাতে পারেন। বাসা থেকে কাজ করা সেলাইকর্মীদের পূর্ণাঙ্গ দল আছে আমার, যারা সাহায্য করতে পারে,’ বলেছেন তিনি। কুমোর সঙ্গে অনলাইনে ওই আলাপচারিতার কয়েকদিন পরই ক্রিস্টিয়ানো তাদের ফেইসমাস্ক উৎপাদন কাজের একটি ভিডিও অনলাইনে পোস্ট করেন। নেপালি বংশোদ্ভূত আমেরিকান ডিজাইনার প্রবাল গুরুং তার প্রতিষ্ঠানের ইনস্টাগ্রাম এ্যাকাউন্ট থেকে পিপিই বানানোর ঘোষণা দিয়েছেন; লেডি গাগা ও মিশেল ওবামার মতো সেলিব্রেটিদের পোশাক বানিয়ে খ্যাতি অর্জন করা ডিজাইনার ব্র্যান্ডন ম্যাক্সওয়েল বানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য গাউন। সুপরিচিত সুইমওয়্যার ব্র্যান্ড কার্লা তাদের ভার্জিনিয়ার কারখানাকে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় উপকরণ বানাতে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে, লস এ্যাঞ্জেলস এ্যাপারেলস তাদের সাড়ে চার শ’র বেশি কর্মীকে মাস্ক বানানোর কাজে নামিয়ে দিয়েছে। এ্যাপ্রন ও রাঁধুনীদের বিশেষ পোশাক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হেডলি এ্যান্ড বেনেটও চাঁদা তুলে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সামনের কাতারে থাকা কর্মীদের জন্য মাস্ক উৎপাদন শুরু করেছে। ইউরোপের বেশিরভাগ সুপরিচিত ব্র্যান্ড কাজ করছে পিপিই বানাতে। মহাদেশটির দুই ফ্যাশন জায়ান্ট এইচএ্যান্ডএম ও ইনডিটেক্স চিকিৎসা খাতে ব্যবহারের জন্য এ প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট বিপুল পরিমাণ উৎপাদনের ঘোষণা দিয়েছে। ফরাসী প্রতিষ্ঠান কেরিং বলেছে তাদের দুটি ব্র্যান্ড বালেনসিয়াগা ও ইউভস সেইন্ট লরেন্ট কোভিড-১৯ এর মাস্ক বানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেরিং ফরাসী স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য ৩০ লাখ চীনা মাস্ক জোগাড় করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে; তাদের সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড গুচি ১১ লাখ মাস্ক ও ৫৫ হাজার গাউন ইতালিতে সরবরাহের চেষ্টা করছে। আরেক ফ্যাশন জায়ান্ট এলভিএমএইচও আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন ব্যবহার করে চীন থেকে ৪ কোটি মাস্ক জোগাড়ের চেষ্টা করছে। ইতালির প্রাডা বলেছে তারা তুসকানি অঞ্চল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে ৮০ হাজার মেডিক্যাল গাউন ও এক লাখ ১০ হাজার ফেইসমাস্কের উৎপাদন শুরু করেছে। টেক্সটাইল কোম্পানি মিরোগ্লিও গ্রুপ গত সপ্তাহে জরুরী বিভাগের কর্মী, এনজিও কর্মী ও সাংবাদিকদের জন্য ধোয়া যায় এমন সুতি ও ইলাস্টেনের ১০ হাজার মাস্ক সরবরাহ করেছে।-রয়টার্স
×