ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সি আর সেভেনকে পেতে ইচ্ছুক পিএসজি ও ম্যানইউ, তবে করোনাভাইরাসের থাবায় দলবদল হওয়া নিয়ে সংশয়

জুভেন্টাস ছাড়তে চান রোনাল্ডো

প্রকাশিত: ০৯:৫৫, ২৫ মার্চ ২০২০

জুভেন্টাস ছাড়তে চান রোনাল্ডো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই উড়ে বেড়াচ্ছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। পর্তুগীজ এই সুপারস্টার নিজ দেশের ক্লাব স্পোর্টিং সিপি থেকে প্রথমে আসেন ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। সেখানে ২০০৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কাটিয়ে নাম লেখান স্প্যানিশ পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদে। গালাক্টিকো শিবিরে ২০১৮ সাল পর্যন্ত থেকেই মূলত ক্যারিয়ারের সেরা পারফরমেন্স দেখিয়েছেন সি আর সেভেন। এরপর ২০১৮ সালে অনেকটা আচমকাই নাম লেখান ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাসে। কিন্তু মাত্র এক বছরের ব্যবধানেই নাকি ইতালি ভাল লাগছে না পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকার। বিশেষ করে গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে তার দল জুভেন্টাস বিদায় নেয়ার পর নাকি রোনাল্ডো ইতালি ছেড়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের উদ্ধৃতিতে ২০১৯ সালের এপ্রিলে এমনই জানা গিয়েছিল। এক বছর পর আবারও একই গুঞ্জন চাউর হয়েছে। তার মানে, সুযোগ পেলে তুরিনের ওল্ডলেডিদের গুডবাই জানাবেন রোনাল্ডো। রোনাল্ডোর জুভেন্টাস ছাড়ার গুঞ্জনে তাকে কেনার জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ফরাসী ক্লাব প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইন (পিএসজি) ও ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। জানা গেছে, নেইমারকে আগামী গ্রীষ্মেই বেঁচে দিতে পারে পিএসজি। সেক্ষেত্রে ফরাসী ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপের সঙ্গে জুটি বাঁধার জন্য রোনাল্ডোকেই পছন্দ ফরাসী চ্যাম্পিয়নদের। পর্তুগাল অধিনায়ক তার সাবেক ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকেও অফার পেয়েছেন। ইংলিশ জায়ান্টদের পুরনো সম্মান ফিরিয়ে আনতে রোনাল্ডোর চেয়ে বড় বিকল্প আর নেই। তবে এজন্য ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন্স লীগে কোয়ালিফাই করতে হবে। সিরি এ শিরোপা স্কুডেট্টো নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলা ইতালিয়ান জায়ান্টদের এখন আর লীগ শিরোপা দিয়ে মন ভরে না। প্রয়োজন চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ট্রফি। এ কারণেই রোনাল্ডোকে দলে ভেড়ায় তারা। কিন্তু গত মৌসুমে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়ের পর ইতালিয়ানদের একটাই প্রশ্ন, কী লাভ হয়েছে এত অর্থ ঢেলে রোনাল্ডোকে এনে!? এবারও শেষ ষোলোর প্রথম লেগে হেরেছে জুভরা। করোনার কারণে দ্বিতীয় লেগ স্থগিত হয়েছে। যে কারণে একই প্রশ্ন সম্ভবত ঘুরপাক খাচ্ছে রোনাল্ডোর মনেও! যে চ্যালেঞ্জ জয়ের উদ্দেশ্যে স্পেন ছেড়ে ইতালিতে আসা, তা পূরণ হবে তো? ২০২২ পর্যন্ত রোনাল্ডোর সঙ্গে চুক্তি আছে জুভেন্টাসের। জানা গেছে, এই সময় পর্যন্ত ইতালিতে থাকার ধৈর্য হবে না পর্তুগীজ মহাতারকার। হয়তো সর্বোচ্চ এই মৌসুমটা দেখবেন। সেটির ফলাফলও যদি গতবারের মতো হয়, তাহলেই শেষ! নতুন চ্যালেঞ্জের খোঁজে নেমে পড়বেন সি আর সেভেন। এদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় থেমে গেছে ফুটবলারদের দলবদল। যে কারণে পরের বছর কোন খেলোয়াড় কোথায় যাচ্ছে সেটি নিয়ে যে রকম গুঞ্জন উঠতে দেখা যেত সেটা এবার নেই বললেই চলে। সবারই জানার আগ্রহ আছে আগামী মৌসুমে নেইমার বা রোনাল্ডোরা নতুন ঠিকানায় যাচ্ছেন কিনা। নতুন করে মৌসুম কখন শুরু হবে সেটাই জানে না কেউ। আর ফুটবল ক্লাবগুলো যে আর্থিক সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে তার প্রভাব এমনিতেই পড়তে বাধ্য দলবদলের বাজারে। আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কেপিএমজির এক গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, যে করোনার কারণে মৌসুমের বাকি খেলাগুলো বাতিল হলে শুধুমাত্র ইউরোপের শীর্ষ ৫টি লীগের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে চার বিলিয়ন ইউরোরও বেশি। এতেই স্পষ্ট, ক্লাবগুলো কতটা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে। আর বিশ্বব্যাপী এর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়তে পারে ছোট ক্লাবগুলো। ফরাসী ক্লাব মোনাকোর কথাই ধরা যাক। এমবাপের মতো তারকা খেলোয়াড়দের বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করেছে তারা। শুধুমাত্র এমবাপেকে ২০১৮ সালে পিএসজির কাছে বিক্রি করেছে ১৮০ মিলিয়ন ইউরোতে। আয় করা ওই অর্থ তারা আবার খরচ করেছে নতুন খেলোয়াড় দলে ভেড়াতে। মোনাকোর সহ-সভাপতি ওলেগ পিট্টোভ এ বিষয়ে বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আমরা এভাবে অর্থ আয় করতে পারব না। এমনকি এমবাপে, নেইমার বা পোগবা কোথায় যোগ দিবেন এ বিষয়ে কারও কোন আগ্রহ নেই। এটি খুবই উদ্বেগের বিষয়।
×