স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ ২৫ মার্চ। জাতীয় গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানী হানাদাররা ঢাকার ঘুমন্ত মানুষের ওপর অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নির্বিচার গণহত্যা চালায়। ওইদিন শুরু হওয়া গণহত্যা মুক্তিযুদ্ধের পুরো নয় মাস ধরে চলে। সে ইতিহাস স্মরণের বিশেষ দিবস আজ। কালরাত্রি স্মরণে প্রতি বছরই নানা কর্মসূচী পালন করা হয়। তবে এবার ভিন্ন পরিস্থিতি। কোভিড-১৯ ভাইরাসের আক্রমণে তছনছ হয়ে গেছে গোটা বিশ্ব। শঙ্কায় আছে বাংলাদেশও।
এ অবস্থায় ঘরের ভেতরে থেকেই কালরাত্রীর কর্মসূচী পালনের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ১৪ বিশিষ্ট নাগরিক। আজ রাত সাড়ে ১০টায় স্ব স্ব অবস্থানে থেকে মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে কালারাতের শহীদদের স্মরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। সেইসঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সারাবিশ্বে মৃত্যুবরণ করা হাজার হাজার মানুষের আত্মার শান্তি কামনা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক অনুপম সেন, কামাল লোহানী, সৈয়দ হাসান ইমাম, রামেন্দু মজুমদার, ড. সরোয়ার আলী, ফেরদৌসী মজুমদার, মামুনুর রশীদ, নাসির উদ্দিন ইউসুফ, আবেদ খান, গোলাম কুদ্দুছ, ডাঃ কামরুল হাসান খান ও হাসান আরিফ। বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমানে বিশ^ এক কঠিন পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। করোনাভাইরাসের সংক্রামণে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। বাংলাদেশে এ ভাইরাস ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১৯৭১ সালের গণহত্যার কালরাত্রি স্মরণে ও করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারীদের আত্মার শান্তি এবং বিশ^ মানবের কল্যাণ কামনায় রাত সাড়ে ১০টায় প্রত্যেক বাসা বাড়িতে মোমবাতি প্রজ্বালনের জন্য আমরা সবার প্রতি আহ্বান জানাই। করোনা প্রতিরোধে সরকার ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সকল নির্দেশনা জনস্বার্থে পুরোপুরি মেনে চলারও আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ জনকণ্ঠকে বলেন, বাঙালীর অধিকার আদায়ের আন্দোলন দমন করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামে নৃশংসতম হত্যাকা- চালানো হয়। পাকিস্তানীরা এক রাতেই অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে। সেই কালরাতের কথা বাঙালী কোনদিন ভুলতে পারবে না। রাতটি স্মরণে আমরা প্রতি বছর নানা কর্মসূচী পালন করে আসছি। প্রতি বছর ২৫ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে মোমবাতি প্রজ্বল করা হয়। এবার একই সময়ে যে যার ঘরে স্ব উদ্যোগে মোমবাতি প্রজ্বল করবেন। একইসঙ্গে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করবেন। আমরা এ আহ্বান জানিয়েছি।