ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রশংসিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘আষাঢ়’

প্রকাশিত: ১৩:০৬, ২৪ মার্চ ২০২০

প্রশংসিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘আষাঢ়’

সাজু আহমেদ ॥ বাংলাদেশের একজন জীবন্ত কিংবদন্তি সমাজ ব্যক্তিত্ব, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক জেলা জজ মোঃ সাইফুল আলমের জীবনীভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘আষাঢ়’। এমন একজন সমাজ সেবক ও মানবিক মানুষকে নিয়ে নির্মিত ব্যতিক্রমী প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘আষাঢ়’ এর বিশেষ প্রদর্শনী হলো সম্প্রতি। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ প্রদর্শনী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনী শেষে আগত অতিথিরা তাদের বক্তব্যে চলচ্চিত্রটির ব্যতিক্রমী বিষয়বস্তু উপস্থাপনায় ভূয়সী প্রশংসা করেন। এমন একজন দেশ বরেণ্য মানবিক মানুষকে প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরায় সংশ্লিষ্টদের সাধুবাদ জানান অতিথিরা। চলচ্চিত্রে দেখা যায় দেশের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বনামধন্য গীতিকার এবং সফল ও গর্বিত বাবার গল্প অত্যন্ত সাবলীল ও প্রাঞ্জল ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে। যার রক্তে ছিল অক্লান্ত পরিশ্রম, কর্তব্য নিষ্ঠা এবং দেশ, সমাজ, মানুষ এবং পরিবারের জন্য অকুণ্ঠ নিরলস ভালবাসা। যিনি নিরন্তরভাবে কাজ করে গেছেন দেশের মানুষের জন্য। তার সৃজনশীল এবং মানবিক কর্মের গ-ি দেশ পেড়িয়ে বিদেশেও মাটিতেও বিস্তৃত হয়েছে। কর্ম জীবনে সরকারের বিচারিক বিভাগ থেকে অবসর নিলেও দেশ মাতৃকার সেবায় আবার তিনি কাজে নেমে পড়েছেন। বর্তমানে তার পেশা অধ্যাপনা। পড়ান বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরই ফাঁকে লিখে চলেছেন আইন বিষয়ক গ্রন্থ। এখন পর্যন্ত তার রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩৫। শুধু সংখ্যা বাড়ানোর জন্য লেখা নয়। আইনের ভাষা যেন সবার জন্য বোধগম্য হয় সেজন্য তিনি প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ‘আষাঢ়’ প্রামাণ্য চলচ্চিত্রে তুলে ধরা হয়েছে দেশ মাতৃকার জন্য আজন্ম ত্যাগী মানুষ মোঃ সাইফুল আলমের জীবনের নানা সংগ্রাম। যার প্রতিটি বাকে বাকে রয়েছে নানা ত্যাগ তিতিক্ষা, বৈচিত্রময় অভিজ্ঞা আর সাফল্যের ইতিহাস। পাশাপাশি যেখানে ঝরেছে অসহায় জীবনের জন্য তার কান্না, ঠিক আষাঢ়ে ঝরা বৃষ্টির মতো। সংগ্রামী সেই বাবার বর্নাঢ্য জীবন নিয়েই এগিয়েছে কাহিনীচিত্র ‘আষাঢ়’। যার গল্পটা এক ৭০ বছরের প্রবীণ কিশোরের। কিশোর বেলার আগেই মাতা-পিতাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় নিয়তি, তাই তো এতিম হওয়ার পর বিধবা নানির ভালবাসার উঞ্চতা আর মমতায় বেড়ে ওঠে সেই কিশোর। অর্থিক সঙ্গতি ছিল না, তবুও শিক্ষা লাভের স্বপ্নকে চাপা দেননি। এর জন্য স্কুল ছুটির পর হকার হয়ে বসতেন সেই স্কুলের গেটে যে স্কুলে তিনি পড়তেন। এরপর নিজ মেধা, নিষ্ঠা, ধৈর্য এবং সততার জোরে একজন সমৃদ্ধ মানুষ হিসেবে একে একে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। ‘আষাঢ়’ প্রমাণ্য চলচ্চিত্রে ত্যাগী দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধার বর্ণিল এবং বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন গল্প উঠে এসেছে। প্রামাণ্য চলচ্চিত্রে মোঃ সাইফুল আলমের লেখা পাঁচটি গান ব্যবহার করা হয়েছে। সবমিলে প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটি ভাল লাগায় উপস্থিত অতিথি দর্শকরা এর ভূয়সী প্রশংসা করেন। এমন একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়ার জন্য মোঃ সাইফুল আলমের সন্তান ড. লিপন মুস্তাফিজেরও প্রশংসা করেন অতিথিরা। ‘আষাঢ়’ প্রমাণ্য চলচ্চিত্রের মূল ভাবনা এবং প্রযোজনা ড. লিপন মুস্তাফিজ, চিত্রনাট্য, চিত্রগ্রহণ, সম্পাদনা ও পরিচালনা ইমতিয়াজ পাভেল নীল। প্রযোজনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে সাবরোজা কবির, সাউন্ড সোহাগ চাঁদ ও মুক্তা ঠাকুর, সঙ্গীত অমিত চ্যাটার্জি, গীতিকার সাইফুল আলম আশারাহ, টাইটেল ডিজাইন আসমা সুলতানা, ভয়েস আর্টিস্ট সবুর খান চৌধুরী ও ড. লিপন মুুস্তাফিজ, গান রেকর্ডিং ও স্কেচ ইমতিয়াজ পাভেল নীল, স্টুডিও সাউন্ড রেকর্ডিং আহসান হাবিব ছবি। সহযোগিতায় চৈতালী সমদ্দার, নাহিদ মাসুদ, ইয়া সায়কন, এম রাজন, মানিক, টি বাপ্পা, এফ মনির, এমএম ওরিয়ন এবং এএইচ শানু। প্রসঙ্গত জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আষাঢ়’ এর প্রদর্শনীতে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন এপিলেট ডিভিশনের বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোঃ সাইফুল আলম, বিশিষ্ট লেখক ড. লিপন মুস্তাফিজ, নির্মাতা ইমতিয়াজ পাভেল, মুন্সীগঞ্জ জেলা জজ হোসনে আরা আজাদ চৌধুরীসহ আরও অনেকে।
×