ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম সিটিসহ দেশে সব নির্বাচন স্থগিত

প্রকাশিত: ১১:০০, ২২ মার্চ ২০২০

চট্টগ্রাম সিটিসহ দেশে সব নির্বাচন স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনসহ দেশে সব ধরনের নির্বাচন স্থগিত করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। শনিবার এক বৈঠক শেষে তারা এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়। আগামী ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনসহ বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস আক্রান্তের ঢেউ এসে পড়েছে বাংলাদেশে। এ অবস্থায় জনস্বাস্থ্যের হুমকির বিষয়টি বিবেচনা করে তারা নির্বাচন বন্ধের এই ঘোষণা দেয়। যদিও জনস্বাস্থ্যের হুমকি উপেক্ষা করেই শনিবার ঢাকা-১০ আসনসহ দেশের তিন আসনে ভোট গ্রহণ করা হয়। কিন্তু করোনা ভীতির কারণে এসব নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল একেবারেই নগন্য। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে প্রতিরোধের ব্যবস্থা হিসেবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরেই গণজমায়েত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। এছাড়া দেশে এই ভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে সরকারের সব সেক্টরের সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। শনিবার রাত থেকে সীমিত কয়েকটি বাদে সব ধরনের আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই আতঙ্কের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার পরেই ইসির পক্ষ থেকে ভোট বন্ধের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হলো। শনিবার দুপুরে সিইসি কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে ইসির সভার পর বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এসে ২৯ মার্চের নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত সচিব মোঃ আলমগীর। তিনি বলেন, আগামী ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচন রয়েছে। এছাড়াও কিছু সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন পদে উপনির্বাচন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ বা উপনির্বাচন আছে সকল নির্বাচন আমরা স্থগিত করছি। তিনি বলেন করোনা নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আতঙ্কের কিছু নেই। তবুও নির্বাচন কমিশন সবার স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে সব নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সকল ধরনের নির্বাচন বন্ধ থাকবে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে যখন করোনা ঝুঁকিমুক্ত বলা হবে, তখন নির্বাচন কমিশন পরবর্তীতে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করবে। তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে দিন-ক্ষণের বাধ্যবাধকতা আছে। একটি আসন শূন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। আর সিটি কর্পোরেশনগুলোর ক্ষেত্রে ১৮০ দিন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে এ ধরনের বাধ্যবাধকতা নেই। যদি দৈব-বিপাক হয়, সেক্ষেত্রে আরও ৯০ দিন পরে নির্বাচন করার প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ক্ষমতা দেয়া আছে নির্বাচন করার। দুই ৯০ দিন যোগ করলে হয় ১৮০ দিন বা ৬ মাস। এতদিন পর্যন্ত করোনাভাইরাস আতঙ্ক হয়ে থাকবে বলে আমি মনে করি না। আশা করি, নির্বাচন কমিশন সংবিধানের যে সময় আছে, তার মধ্যে সংসদীয় নির্বাচনগুলো করতে পারবে। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটির ভোট গ্রহণ তারিখ নির্ধারিত ছিল। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী, বিএনপির শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন, পিপলস পার্টির আবুল মনজুর, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মোঃ জান্নাতুল ইসলাম নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিতে ভোটের মাঠে ছিলেন। তবে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর এখন থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ভোটের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। উল্লেখ্য, গত ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করে ইসি। আইন অনুযায়ী এ সিটির মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের ৫ আগস্ট। অন্যদিকে, গত ১৮ জানুয়ারি বগুড়া-১ আসন আর যশোর-৬ আসনটি শূন্য হয়েছে ২১ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, আসন শূন্য হওয়ার পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে বগুড়া-১ আসনে ১৬ এপ্রিল আর যশোর-৬ আসনে ১৯ এপ্রিলের মধ্যে ভোট গ্রহণ করতে হবে।
×