ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পবিত্র শব-ই মেরাজ আজ

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ২২ মার্চ ২০২০

পবিত্র শব-ই মেরাজ আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পবিত্র শব-ই মেরাজ আজ। রবিবার দিন শেষে যে রজনী বিশ্ববাসীর সামনে হাজির হচ্ছে তা মহাসম্মানিত রজনী হিসেবে খ্যাত। এই রাতে প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) উর্ধগমনে ভ্রমণ করেছিলেন। আল্লাহর দিদার লাভ করেন। এই সাক্ষাতে বিশ্বের মুসলমান বা বিশ্বাসীদের জন্য তিনি বিশেষ নির্দেশনা বয়ে আনেন। যার মধ্যে রয়েছে প্রত্যহ ৫ ওয়াক্ত সালাত। বিশ্বের মুসলমানরা এবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে এই রজনী অতিবাহিত করবেন। বিশেষ করে বর্তমানে সারাবিশ্ব করোনাভাইরাস মহামারীতে আক্রান্ত। এই মহামারী থেকে মুক্তি কামনায় ইবাদত-বন্দেগি, আলোচনা সভা ও বিশেষ মোনাজাত পরিচালিত হবে এই রজনী উপলক্ষে। ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব অনেক। কেননা এই মেরাজের মাধ্যমেই নামাজ অত্যাবশ্যক (ফরজ) করা হয়। এদিকে শব-ই মেরাজ বা পবিত্র রজনী উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংসদে বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ পৃথক বাণী দিয়েছেন। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইবাদত-বন্দেগি পালনের কর্মসূচী নেয়া হয়েছে। মেরাজ বা উর্ধাকাশে গমণের বিষয়টি কোরানের ১৭ নম্বর সুরা ইসরাইলে বর্ণনা করা হয়েছে। এই সুরার প্রথম আয়াতে আল্লাহ্তাআলা বলেন, পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্তÑ যার চারদিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি। যাতে আমি তাকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও সর্বদ্রষ্টা। ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী মুহম্মদের (সা.) নবুওয়াত প্রকাশের একাদশ বছরের (৬২০ খ্রিস্টাব্দ) রজব মাসের ২৬ তারিখের দিবাগত রাতে প্রথমে কাবা শরিফ থেকে জেরুজালেমে অবস্থিত বায়তুল মুকাদ্দাস বা মসজিদুল আকসায় গমন করেন এবং সেখানে তিনি নবীদের নামাজের জামায়াতে ইমামতি করেন। অতঃপর তিনি বোরাক নামক বিশেষ বাহনে আসীন হয়ে উর্ধলোকে গমন করেন। ঊর্ধাকাশে সিদরাতুল মুনতাহায় তিনি আল্লাহর সাক্ষাত লাভ করেন। এই সফরে ফেরেশতা জিবরাইল তার সফরসঙ্গী ছিলেন। হাদিস গ্রন্থ বোখারি শরীফের বর্ণনা অনুযায়ী উর্ধাকাশে যাওয়ার পথে তিনি বিভিন্ন নবী রাসুলের সাক্ষাত লাভ করেন। এর মধ্যে প্রথম আসমানে সাক্ষাত লাভ করেন প্রথম মানব এবং নবী আদম আঃ, দ্বিতীয় আকাশে হযরত ইসা আঃ এবং ইয়াহইয়া আঃ, তৃতীয় আসমানে হযরত ইউসুফ আঃ চতুর্থ আসমানে ইদ্রিস আঃ, পঞ্চম আসমানে দেখা পান হযরত হারুন আঃ, ষষ্ঠ আসমানে মুসা আঃ এবং সপ্ত আসমানে তিনি সাক্ষাত লাভ করেন হযরত ইব্রাহিম আঃ এর। এই মেরাজের রাতেই মুসলমানদের জন্য বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়। এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ইবাদত করা যাবে না। উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। পিতামাতার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতে হবে। নিকট আত্মীয়-স্বজনের অধিকার দিতে হবে, মিসকিন ও পথশিশুদের অধিকার দিতে হবে। অপচয় করা যাবে না। অপচয়কারী শয়তানের ভাই। কার্পণ্য বা কৃপণতাও করা যাবে না। সন্তান হত্যা করা যাবে না। ব্যভিচারের ধারে কাছেও যাওয়া যাবে না। মানব হত্যা করা যাবে না। এতিমের সম্পদ আত্মসাত করা যাবে না। প্রতিশ্রুতি পালন বা ওয়াদা পূর্ণ করতে হবে। ওজন বা মাপে কম দেয়া যাবে না। অজ্ঞতার সঙ্গে কোন কিছু করা যাবে না। পৃথিবী বা জমিনের ওপর দম্ভভরে চলাফেরা করা যাবে না। এছাড়াও মুসলমানদের ইমানের পরেই নামাজ যা মেরাজের রাতেই আল্লহর কাছ থেকে উপহার হিসেবে লাভ করেন তিনি।
×