ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকিং সেবার প্রতিটি পয়েন্টে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ রাখার নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ২২ মার্চ ২০২০

ব্যাংকিং সেবার প্রতিটি পয়েন্টে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ রাখার নির্দেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্যাংকের প্রতিটি শাখার ক্যাশ কাউন্টারসহ অন্যান্য সেবা এটিএম, পস, ইন্টারনেট, এ্যাপ ও ইউএসএসডি ভিত্তিক লেনদেন সেবা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে এবং ব্যাংকিং সেবার প্রতিটি পয়েন্টে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি পয়েন্টগুলো নিয়মিতভাবে জীবাণুমুক্ত ও স্থানগুলোতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এর পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক মেজবাউল হক ১৯ মার্চ এক সার্কুলারে এ নির্দেশনা দেন। করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিরবচ্ছিন্ন ব্যাংকিং ও পরিশোধ সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা প্রসঙ্গে, শীর্ষক ওই নির্দেশনায় বলা হয়, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরাপদ ব্যাংকিং ও পরিশোধ সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিষয়ে পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত পাঁচটি ব্যবস্থা অনুসরণে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।’ ‘ব্যাংক ও সব ধরনের আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, গ্রাহক সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ (আইসটি) স্ব স্ব ব্যবস্থাপনার (ক্রিটিক্যাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট) ক্ষেত্রে মূল ব্যক্তিকে (কি পারসন) চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করবে। বিশেষ পরিস্থিতিতে সেবা চালু রাখার জন্য জরুরী ভিত্তিতে সেবা চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা (বিজনেস কন্টিনিউটি প্ল্যান) প্রণয়ন করবে।’ ‘গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহের জন্য ব্যাংকের প্রতিটি শাখার ক্যাশ কাউন্টার, এটিএম বুথ এবং এজেন্ট ব্যাংকিং-এর এজেন্ট পয়েন্ট ও মোবাইল সেবার (এমএফএস) এজেন্ট পয়েন্টগুলোতে নগদ অর্থ ও ই-মানি সরবরাহের সেবা নিরবচ্ছিন্নভাবে নিশ্চিত করতে হবে। লেনদেনের স্থানসমূহ অর্থাৎ ব্যাংক, এটিএম, পস ও এজেন্ট পয়েন্টগুলো নিয়মিতভাবে জীবাণুমুক্ত ও স্থানগুলোতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে।’ ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও ওষুধ বিক্রয়কারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্ব স্ব ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব, এমএফএস হিসাব, এজেন্ট ব্যাংকিং হিসাব ও পিএসপি হিসাবকে ব্যবসায়িক লেনদেনের জন্য ব্যবহার করা যাবে।’ ‘শুধুমাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে এমএফএস এর ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি (পি-টু-পি) লেনদেনে (যে কোন চ্যানেলে) কোন চার্জ কর্তন করা যাবে না এবং এ লেনদেনের সর্বোচ্চ মাসিক সীমা ৭৫ হাজার টাকা থেকে দুই লাখ টাকায় উন্নীত করা যাচ্ছে। অন্য সব লেনদেন সীমা এ বিভাগের ১৯ মে ২০১৯ তারিখের সার্কুলার নম্বর ০১/২০১৯ অনুসারে বহাল থাকবে।’ ‘এমএফএস লেনদেনের ক্ষেত্রে দিনে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকার ক্যাশ আউট সম্পূর্ণ চার্জবিহীন রাখতে হবে।’ ‘দেশের অভ্যন্তরে শুধুমাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি এবং ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে এমডিআর (মার্চেন্ট ডিসকাউন্ট রেট) এবং আইআরএফ (ইন্টারচেঞ্জ রিইমবারসমেন্ট ফি) প্রযোজ্য হবে না এবং এক্ষেত্রে দৈনিক সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা লেনদেন সীমা প্রযোজ্য হবে।’ ‘এনএফসি (নেওয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন) সুবিধাযুক্ত কার্ড-এর এনএফসি লেনদেন সীমা তিন হাজার টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকায় উন্নীত করা হলো। একইসঙ্গে এ মাধ্যমেও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি এবং ওষুধ বিক্রয়কারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের জন্য এমডিআর (মার্চেন্ট ডিসকাউন্ট রেট) এবং আইআরএফ (ইন্টারচেঞ্জ রিইমবারসমেন্ট ফি) প্রযোজ্য হবে না।’ ‘সার্বক্ষণিকভাবে এটিএম, পস, ইন্টারনেট, এ্যাপ ও ইউএসএসডিভিত্তিক লেনদেন সেবা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে হবে। এ জন্য সকল ব্যাংক, এমএফএস, পিএসপি এবং পিএসওসমূহ স্ব স্ব সিস্টেম অবকাঠামোর ওপর সতর্ক নজরদারি রাখবে এবং সিস্টেম ও ডেটাবেইজে সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য ই-মেইল, ফিশিং ই-মেইল, রানসামওয়্যার আক্রমণ ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ নজরদারি পরিচালনা করবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুযায়ী সব অবকাঠামো যথারীতি চালু রাখতে হবে এবং এ সংক্রান্ত নিরাপত্তা ও সাইবার ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’ ‘গ্রাহক, মার্চেন্ট ও সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে লেনদেন সংক্রান্ত প্রতারণা ও স্যোশাল মিডিয়া, ই-মেইল, মোবাইল ফোন-এর মাধ্যমে করোনাভিত্তিক আর্থিক প্রতারণার বিষয়ে বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতির পাশাপাশি ওয়েবসাইটেও গ্রাহককে সতর্ক করতে হবে। এছাড়া ওয়েবসাইটে সকল মার্চেন্ট এর তালিকা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।’ ‘ব্যাংক ও পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অভিযোগ গ্রহণ ও পরামর্শ দেয়ার জন্য চব্বিশ ঘণ্টা (২৪/৭) হটলাইন ও ইন্টারনেটভিত্তিক গ্রাহক সেবা চালু রাখবে। একইসঙ্গে গ্রাহককে এ সময়ের সম্ভাব্য লেনদেনগত ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করার জন্য বিজ্ঞাপন প্রকাশ ও ই-মেইল, এসএমএস দেবে।’ ‘ব্যাংক, এমএফএস, পিএসপি, পিএসও এবং অন্যান্য আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের আইসটি অবকাঠামো, সিস্টেম, ডেটাবেইজ নিরাপত্তা এবং সরকারী স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী গ্রাহক ও নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের করোনা সংক্রান্ত সচেতনতা সৃষ্টি করতে কার্যক্রম গ্রহণ করবে।’
×