ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি

কিশোরগঞ্জে ৫০ ব্যবসায়ীকে তিন লাখ টাকা জরিমানা

প্রকাশিত: ০৯:১৫, ২২ মার্চ ২০২০

কিশোরগঞ্জে ৫০ ব্যবসায়ীকে তিন লাখ টাকা জরিমানা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ২১ মার্চ ॥ করোনাভাইরাস সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম কৃত্রিম সঙ্কটের মাধ্যমে বাড়িয়ে দিয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। আর জেলা শহরসহ ১৩টি উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে নিত্যপণ্য কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে মানুষ। প্রয়োজনেরও কয়েকগুণ বেশি নিত্যপণ্য কিনছেন ক্রেতারা। এ সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীরাও চাল-ডাল, তেল-পেঁয়াজসহ সব ধরনের নিত্যপণ্য বেশি দামে বিক্রি করছেন। এ পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন ‘বাজার মনিটরিং সেল’ গঠন করে দ্রব্যমূল্যের দাম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গত দুইদিন জেলার প্রতিটি উপজেলায় সক্রিয় ছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ পর্যন্ত র‌্যাব-পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে অভিযান পরিচালনা করে অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ীকে প্রায় তিন লাখ টাকা জরিমানা করেছে। সংশ্লিষ্টরা জানায়, হঠাৎ করে বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির ফলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় সবচেয়ে অস্থিরতা দেখা গেছে চালের বাজারে। অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি চাল ৬-৭ টাকা বাড়িয়ে দেয়ায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। বাজারভেদে দামের কিছু তারতম্য থাকলেও বাড়তি দামেই অনেক ক্রেতা বস্তা বস্তা চাল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া পেঁয়াজের কেজি ৩০-৩৫ টাকা থাকলেও ব্যবসায়ীরা হঠাৎ করেই ৫০-৬০ টাকা দাম বাড়িয়েছে। শুক্রবার রাতে জেলা শহরের কয়েকটি বাজার ঘুরে একই অবস্থা দেখা গেছে। ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে নিত্যপণ্যের মূল্য আরও বেড়ে যাবে, এমনটা মনে করেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পরিমাণে কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। কে কত বেশি নিত্যপণ্য বাসায় মজুদ করতে পারেন, এ প্রতিযোগিতাই যেন চলছে ক্রেতাদের মাঝে। এ সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজার অস্থির করে তোলে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি শুরু করার পর দ্রব্যমূল্যের কিছুটা লাগাম টানা সম্ভব হলেও বাজারে ক্রেতাদের ভিড় কমছেই না। জেলা ক্যাব সভাপতি আলম সারোয়ার টিটু জানান, দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ মজুদ থাকার পরও কিশোরগঞ্জে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে চাল, চিনি, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, শিশুখাদ্য এবং স্যানিটাইজেশন দ্রব্যাদির দাম কৃত্রিম সঙ্কটের মাধ্যমে বাড়িয়ে দিয়েছে। এসব ব্যবসায়ী ভোক্তাদের কাছে ‘গণদুষমন’। প্রশাসন থেকে প্রতিনিয়ত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নেত্রকোনা নিজস্ব সংবাদদাতা নেত্রকোনা থেকে জানান, করোনাভাইরাসকে পুঁজি করে চাল, ডাল, তেল ও পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর দায়ে সাত ব্যবসায়ীকে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। জানা যায়, বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখতে শনিবার জেলা সদরের বিভিন্ন বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল কাইয়ূম জয়ের বাজার ও মেছুয়া বাজারের সাত ব্যবসায়ীকে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করেন। বাজারদর নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম। সাতক্ষীরা স্টাফ রিপোর্টার সাতক্ষীরা থেকে জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ককে বাণিজ্য করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়ে উচ্চমূল্যে বিক্রি করার অভিযোগে সাতক্ষীরায় ৯ ব্যবসায়ীকে ১ লাখ ৭৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সকল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বাজার অস্থিতিশীল করে তোলা, কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করা ও পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করার অভিযোগ আনা হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ওই ৯ ব্যবসায়ীকে এ জরিমানা করা হয়। জানা যায়, শনিবার দুপুরে শহরের সুলতানপুর বড়বাজারে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। এ সময় কাঁচামাল পাইকারি ব্যবসায়ী রনি ভা-ারের স্বত্বাধিকারী আব্দুল গফফরকে ভুয়া ভাউচার বানিয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করার অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা ও খুচরা কাঁচামাল ব্যবসায়ী ইশার আলীকে বেশি দামে কাঁচা পণ্য বিক্রির অভিযোগে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া সদর উপজেলা ঝাউডাঙ্গা বাজারের দুই কাঁচামাল ব্যবসায়ীকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এদিকে, তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা ও ত্রিশমাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আজহার আলী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আরও ছয় ব্যবসায়ীকে ৫৪ হাজার টাকা জরিমানা করেন। নড়াইল নিজস্ব সংবাদদাতা নড়াইল থেকে জানান, নড়াইলে করোনাভাইরাসকে পুঁজি করে অধিক দামে পেঁয়াজ বিক্রির অপরাধে ১৩ ব্যবসায়ীকে ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। জানা গেছে, শনিবার দুপুরে শহরের রূপগঞ্জ বাজারে অধিকমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রির অপরাধে সাত ব্যবসায়ীকে ১৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ বিন শফিক। এছাড়া অধিক দামে বিক্রির কারণে লোহাগড়া বাজারে ৬ ব্যবসায়ীকে ১৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার (ভূমি) রানী ব্যানার্জী। এছাড়া করোনা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচার ও দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে নড়াইল জেলা প্রশাসক আনজুমান আরার নেতৃত্বে প্রচার চালানো হয়েছে। মঠবাড়িয়া সংবাদদাতা মঠবাড়িয়া থেকে জানান, সারাদেশে করোনা আতঙ্কে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রির অভিযোগে মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৬ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৩১ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। শনিবার দুপুরে পৌর শহর বাজারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রিপন বিশ^াস অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করেন। এ সময় মঠবাড়িয়া থানার ওসিসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। অর্থদ-প্রাপ্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, মোল্লা ট্রেডার্স ৭ হাজার, মক্কা ট্রেডার্স ৫ হাজার, চাল ব্যবসায়ী নবী হোসেন ১০ হাজার, বাবুল মুদি দোকান ৫ হাজার, নূর নবী মুদি দোকান ২ হাজার, মজনু মুদি দোকান ২ হাজার টাকা। কুষ্টিয়া নিজস্ব সংবাদদাতা কুষ্টিয়া থেকে জানান, কুষ্টিয়ায় এক ব্যবসায়ীর চালের গুদামে অভিযান চালিয়ে মজুদদারির প্রমাণ পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রাজার হাট মোড়ে বিশ^নাথ সাহার গুদামে এই অভিযান পরিচালনা করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জোবায়ের হোসেন চৌধুরী জানান, কোন প্রকার যৌক্তিক কারণ ছাড়াই স্পর্শকাতর সময়কে পুঁজি করে কেবল অধিক মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা চালের মজুত করে বাজারে মূল্য বৃদ্ধি করেছে এমন সংবাদ পেয়েই আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযানকালে বিশ^নাথ এ্যান্ড ব্রাদার্স নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের গুদামে ঘটনার প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে খাদ্যশস্য মজুত বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ স্বীকার করেন প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী বিশ^নাথ কুমার। মজুতবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদ- করা ছাড়াও তার গুদামে রক্ষিত সকল চাল আগামীকালের মধ্যে বাজারে ছাড়ার মুচলেকা নেয়া হয়। হাতিয়া নিজস্ব সংবাদদাতা হাতিয়া থেকে জানান, হাতিয়ায় অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রি করায় ১৬ ব্যবসায়ীকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রেজাউল করিম। শনিবার দুপরে উপজেলার তমরদ্দি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, করোনাভাইরাস আতঙ্ককে পুঁজি করে হাতিয়ার তমরদ্দি বাজারে বিভিন্ন আড়তে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ভাই ভাই ট্রেডার্স, ছাইফুল ট্রেডার্স, সেলিম এন্টারপ্রাইজ, আমান উল্যাহ স্টোর, সাইব এন্টারপ্রাইজ, তোহিদ স্টোর, পাখি স্টোর, বিসমিল্লাহ স্টোর, সাখাওয়াত স্টোর, আল ফারুখ ট্রেডার্স, হক ট্রেডার্সসহ ১৬ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিককে পণ্য তালিকা না টানানো ও উচ্চ মূলে পণ্য বিক্রি করায় ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯এর ৩৮ ধারায় জরিমানা করে। এ সময় সকল মজুতদারদের সতর্ক করে বলেন, কেউ যদি করোনাভাইরাসকে পুঁজি করে দ্রব্যমূল্যোর দাম বাড়ায় তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হবে। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বিদেশ ফেরত কেউ যদি বাজার ঘাটে আসেন তাদের সম্পর্কে প্রশাসনকে জানানোর অনুরোধ করেন। সোনারগাঁও নিজস্ব সংবাদদাতা সোনারগাঁ থেকে জানান, সোনারগাঁ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের ব্যবসায়ীরা করোনাভাইরাসের সুযোগ নিয়ে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করার অপরাধে ১৬ ব্যবসায়ীকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার সকাল থেকে পৃথকভাবে দিনব্যাপী বিভিন্ন হাট-বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল- মামুন। সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম জানান, আনন্দবাজার ও মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করি। এ সময় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিত্যপণ্যের দাম বেশি রাখার অপরাধে গোলাম মোস্তফা রাইস এজেন্সিকে ২৫ হাজার, সিরাজ রাইস এজেন্সিকে ১৫ হাজার ও আলী আহাদকে ৩০ হাজার, পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রাসেল মিয়াকে ১০ হাজার ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মাংস বিক্রি করায় আমজাদ হোসেন নামের একজনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাসহ মোট ১ লাখ ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল-মামুন জানান, গত কয়েকদিন ধরে করোনাভাইরাসের কারণে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে দোকানে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি না করে অধিক মূল্যে চাল, পেঁয়াজ ও আলু বিক্রিসহ বিভিন্ন অপরাধে নয়াপুর বাজারের চাল ব্যবসায়ী মনির হোসেনকে ৫০ হাজার, পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সোহেলকে ২০ হাজার, তালতলা বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রুহুল আমিনকে ৮ হাজার, নাজমুল মিয়াকে ২ হাজার, শরীফ মিয়াকে ১ হাজার, মহজমপুর বাজারের পেঁয়াজ ও আলু ব্যবসায়ীকে ৩ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৮৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ফটিকছড়ি নিজস্ব সংবাদদাতা ফটিকছড়ি থেকে জানান, করোনাভাইরাসের ইস্যু তুলে হাটহাজারী ও বৃহত্তর ফটিকছড়িতে অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি করার কারণে উভয় উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন। শুক্রবার রাতে এ উপজেলার বাণিজ্য কেন্দ্র নাজিরহাটে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ৫ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া, প্রচুর পরিমাণ নকল ও ভেজাল ঘি জব্দ করা হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সায়েদুল আরেফিনের নেতৃত্বে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জানে আলম পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে করে এ আদালত পরিচালনা করা হয়। এদিকে, এ উপজেলার লেলাং ইউনিয়নের তিন সদ্য ফেরত প্রবাসীকে বার বার নিষেধ করা সত্ত্বেও ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনের আদেশ ভঙ্গ করে বাইরে ঘোরাঘুরি করার কারণে ৩০ হাজার টাকা অর্থদ- প্রদান করা হয়। রাত ১০টায় অভিযান শেষে নাজিরহাট হাসপাতাল পরিদর্শন করা হয়। ঝালকাঠি নিজস্ব সংবাদদাতা ঝালকাঠি থেকে জানান, ঝালকাঠিতে চাল, আলু, পেঁয়াজ, রসুনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি অপরাধে ১০ ব্যবসায়ীকে ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাছবির হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম শহরের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাজারে অভিযান চালায়। এ সময় চারটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বেশিদামে নিত্যপণ্য বিক্রির অপরাধে ৩০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দীন ৫টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৮ হাজার টাকা ও নলছিটিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ সাখাওয়াত হোসেন একটি দোকানে অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রির অপরাধে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। শাহজাদপুর নিজস্ব সংবাদদাতা শাহজাদপুর থেকে জানান, সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে বেশি দামে চাউল বিক্রি ও বেচাকেনার রশিদ না থাকায় একটি চালকল মালিক সহ ৪ জন চাল ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ২৮ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ মোঃ শামসুজ্জোহা বলেন, শাহজাদপুর সদর দ্বারিয়াপুর চালের বাজারে বেশি দামে চালসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হচ্ছে। এমন খবর পেয়ে শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত বাজার ও চালকলে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় দ্বারিয়াপুর বাজারে চাল ব্যবসায়ী মহাব্বৎ আলী, চন্দন কুমার দাস ও জিন্নার চালের দোকানে গিয়ে চাল বেচাকেনার দামে অসঙ্গতি দেখা যায় এবং এ সংক্রান্ত কোন কোন রসিদ পাওয়া যায়নি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে এ তিন ব্যবসায়ীকে ১৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ইউএনও জানান, এছাড়া উপজেলার নরিনা বাজারে এন এইচ রাইচ মিলে বেচাকেনার রসিদে অসঙ্গতি থাকায় মিল মালিক হাবিবুর রহমানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। নড়াইল নিজস্ব সংবাদদাতা নড়াইল থেকে জানান, করোনার অজুহাতে নড়াইলে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় পেঁয়াজের মূল্য বেশি রাখায় ৪ ব্যবসায়ীকে ১১ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রম্যমাণ আদালতের বিচারক এসএম আব্দুল্লাহ বিন শফিক। শনিবার দুপুরে শহরের বাণিজ্যিক এলাকা রূপগঞ্জ বাজারে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসচেতনামূলক লিফলেট বিতরণ ও গুজবে কান না দিতে জনসাধারণকে আহ্বান জানানো হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসক। এ সময় জলা প্রশাসক আনজুমান আরা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, নোজারত ডেপুটি কালেক্টর (এসডিসি) জাহিদ হাসান, জেলা চেম্বার আব কমার্সের সভাপতি হাসানুজ্জামান ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। কচুয়া নিজস্ব সংবাদদাতা কচুয়া থেকে জানান, চাল, পেঁয়াজসহ দ্রব্যমূল্য চড়া দামে বিক্রির দায়ে ৭ ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ১ লাখ ২ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। শনিবার উপজেলার সাচার বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপায়ন দাস শুভ অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ী মোজাফ্ফর হোসেন, মোঃ শাহজাহান, কাউছার আহমেদকে জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে ৬০ হাজার, সফিউল্লাহকে ৩০ হাজার, মজিবুর রহমান ও উত্তম সাহাকে জনপ্রতি ৫ হাজার করে ১০ হাজার টাকাএবং আমান উল্লাহকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপায়ন দাস শুভ সকল ব্যবসায়ীকে পণ্যের মূল্য তালিকা সাঁটিয়ে দিয়ে নির্ধারিত মূল্যে বিক্রির কথা বলেন। ফরিদপুর নিজস্ব সংবাদদাতা ফরিদপুর থেকে জানান, করোনাভাইরাস আতঙ্কে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ চালের মূল্য বৃদ্ধি করায় ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা সদর ও ময়েনদিয়া বাজারে সাত চাল ব্যবসায়ীকে ভোক্তা অধিকার আইনে মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার উপজেলা প্রশাসন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ফরিদপুর যৌথভাবে এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এদিকে গত শুক্রবার রাতে চরভদ্রাসনের দুটি বাজারে অভিযান চালিয়ে ১২ ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বোয়ালমারীতে নির্বাহী হাকিম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বোয়ালমারী সদর বাজারে চাল ব্যবসায়ী বিকাশ এগ্রো ৫ হাজার, রমেশ সাধু এ্যান্ড সন্স ৩ হাজার ও দুই খুচরা ব্যবসায়ীকে ১ হাজার করে ২ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অপরদিকে চাল বেশি দামে বিক্রয় করায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ফরিদপুরের সহকারী পরিচালক সোহেল শেখ একই উপজেলার ময়েনদিয়া বাজারের পোদ্দার ট্রেডার্স ৫ হাজার, লক্ষ্মীনারায়ণ বাণিজ্য ভা-ারকে ৩ হাজার ও ত্রিনাথ বাণিজ্য ভা-ারকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় উপজেলা স্যানিটারি পরিদর্শক ফরিদুল ইসলাম, কনজ্যুমার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বোয়ালমারী উপজেলা শাখার সভাপতি মুহাব্বত জান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুর ইসলাম উপস্থিত র্ছিলেন।
×