ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুবলীগ নেতা আটক

ফটিকছড়িতে পাহাড়ের মাটি কেটে সড়ক নির্মাণ

প্রকাশিত: ০৯:০৩, ২২ মার্চ ২০২০

ফটিকছড়িতে পাহাড়ের মাটি কেটে সড়ক নির্মাণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফটিকছড়ি, ২১ মার্চ ॥ উপজেলায় মহাসড়ক নির্মাণে ব্যবহৃত হচ্ছে পাহাড়ের মাটি। ভূমিদস্যুরা সক্রিয় হয়ে ধ্বংস করছে বন-পাহাড়, নদী-খাল, ছড়া-বিল। বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে পরিবেশ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান র‌্যাব আরসির নিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং একজন যুবলীগ নেতার যোগসাজশে এ লুটতরাজ চলছে বলে জানা গেছে। এ যেন দেখার কেউ নেই। পাহাড় এবং বনাঞ্চল কেটে রাস্তা তৈরি করায় বনবিভাগ মামলা দায়ের করেছে থানায়। হাতে-নাতে ধৃত দুজনকে পুলিশে দিয়েছে বন বিভাগ। আটক করেছে মাটি কাটার একটি এস্কেভেটর। জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের হাটহাজারী থেকে ফটিকছড়ির সীমান্ত পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে (১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুট প্রশস্তকরণ) উন্নীতকরণের কাজ চলছে ৩শ’ ৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে। ঢাকার ৩২ মতিঝিলের ‘র‌্যাব আরসি প্রাইভেট লিমিটেড’ হাটহাজারীর এনায়েতপুর অংশ থেকে ফটিকছড়ির শেষ সীমান্ত পর্যন্ত ২৪ দশমিক ৫০ কিলোমিটার কাজ পেয়েছে, যার ব্যয় মূল্য প্রায় ২শ’ ৩৭ কোটি টাকা। এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরুর পর থেকেই ফটিকছড়ির ‘কারবালা টিলা’ নামক স্থানে অস্থায়ী ক্যাম্প গেঁড়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার মহাসড়কের দুপাশে পাহাড় কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। ফলে খাগড়াছড়ি জেলার বৈদ্যুতিক লাইন ঝুঁকিতে পড়েছে। সাড়ে ২৪ কিলোমিটার মহাসড়কের দুপাশে প্রশস্তকরণের জন্য ফটিকছড়ির পাহাড়গুলো থেকে সরকার দলের চিহ্নিত লোকদের মাধ্যমে পাহাড় কেটে ভরাট করা হচ্ছে। হালদা নদী থেকে বালি উত্তোলন সরকারী নিষিদ্ধ হলেও এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘র‌্যাব আরসি’র ওই চিহ্নিত লোকদের মাধ্যমে বালি-মাটি লুটতরাজ চালাচ্ছে। উপজেলার পিলখানা মৌজা এলাকায় হালদার বালি লুটসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কেটে বিরান ভূমিতে পরিণত করা হচ্ছে। এ সড়কের জন্য বালি-মাটি লুট করতে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং পাহাড় কেটে ৫/৬ কিলোমিটার সড়ক তৈরি করা হয়েছে। পাহাড় কাটার এ মহোৎসবে পরিবেশ অধিদফতর নাকে তৈল দিয়ে ঘুমালেও বন বিভাগ গেল ৩ মার্চ ফটিকছড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। এতে দেখা যায়, ফটিকছড়ির ইউএনও মোঃ সায়েদুল আরেফিনের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট চলাকালে র‌্যাব আরসির একটি এস্কেভেটর দিয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং পাহাড় কেটে গোপন সড়ক তৈরি করা হচ্ছে। তৎক্ষণাৎ ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশিত হয়ে পুলিশ এস্কেভেটর চালক মোঃ রঞ্জু প্রামাণিক এবং এস্কেভেটরটি আটক করে। পরে তার স্বীকারোক্তি মতে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট র‌্যাব আরসির জিএম নাসির, কর্মকর্তা আনোয়ার, মাজেদ, জনৈক দেলোয়ার, ফটিকছড়ি এক পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা শাকিল, অপর এস্কেভেটর চালক সাইফুলকে আসামি করে ফটিকছড়ি থানায় এ মামলা করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে আটক এস্কেভেটর চালক রঞ্জু এবং পরে গ্রেফতার যুবলীগ নেতা শাকিলকে জেলে পাঠায় পুলিশ এবং আটক এস্কেভেটর বন বিভাগের হেফাজতে রাখা হয়। এ ব্যাপারে, র‌্যাব আরসির প্রকল্প পরিচালক নুরুজ্জামান কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমদ বলেন, পাহাড় বা বন কাটার কোন অনুমতি আমাদের নেই।
×