ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা সামগ্রীর বেশিরভাগই চীনে তৈরি

চিকিৎসা সামগ্রীর গুরুতর ঘাটতি

প্রকাশিত: ০৮:৫৬, ২২ মার্চ ২০২০

চিকিৎসা সামগ্রীর গুরুতর ঘাটতি

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহে গুরুতর ঘাটতি হঠাৎ করে আমদানিতে হ্রাস ঘটতে পারে। এ সবের মধ্যে রয়েছে টেস্টিং সোয়াবস, সুরক্ষামূলক মাস্ক, সার্জিকাল গাউন ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এসব পণ্যের অধিকাংশই চীন থেকে আমদানি করা হয়। বাণিজ্যের উপাত্তগুলিতে দেখা যায় যে, চীনে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে চালানের হ্রাস শুরু হয়েছিল। এর ফলে সেখানকার কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং বন্দরগুলোয় কাজকর্ম বাধাগ্রস্ত হয়। কিছু রুম, হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ মেডিক্যাল সরবরাহ শেষ হয়ে গেছে। অন্যরা গ্লোভস ও মাস্কের মতো ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রীর ব্যবহার নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে। এপি। যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে বিশাল সংখ্যক মেডিক্যাল সরবরাহ গ্রহণে তাকিয়ে আছে। চীনে করোনায় ৮০ হাজারেরও বেশি লোক আক্রান্ত হয়েছে এবং ৩ হাজার ২০০’র বেশি মারা গেছে। গত মাসে যখন চীনের মেডিক্যাল সরবরাহ কারখানাগুলো লাইনে ফিরে আসা শুরু করেছে তাদের প্রথম অগ্রাধিকার ছিল নিজেদের হাসপাতালগুলো। সরকার চেয়েছিল এন৯৫ মাস্কের প্রস্তুতকারীরা যুক্তরাষ্ট্রে রফতানির পরিবর্তে দেশেই তাদের উৎপাদনের সব অংশবিশেষ বিক্রি করুক। সম্প্রতি মেডিক্যাল গ্রেড এন৯৫ মাস্কের চালান চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে এক মাস আগে। এবং ১৩ টির মতো নন-মেডিক্যাল এন৯৫ মাস্কের চালান তারও আগে পৌঁছেছে। এন৯৫ মাস্ক কারখানার পাশাপাশি হাসপাতলে ব্যবহৃত হয় এবং সবরকম বায়ুবাহিত কণার ৯৫ শতাংশ পরিশুদ্ধ করে। স্টেটগুলোয় মেডিক্যাল সামগ্রী শেষ হয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে গভর্নররা আতঙ্কিত হয়ে উঠছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের খোলা বাজার থেকে মাস্ক কিনতে আহ্বান জানিয়েছেন, তবে অল্পকিছু। আমেরিকান হসপিটাল এ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ন্যান্সি ফোস্টার বলেন, পর্যাপ্ত সুরক্ষা ছাড়া আমাদের হাসপাতাল কর্মীদের অধিকাংশই অসুস্থ হয়ে যেতে পারে, যার অর্থ রোগীদের যতœ নেয়ার মতো লোক থাকবে না। তিনি আরও বলেন, কিছু হাসপাতালে ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জামের মাত্র এক বা দুই দিনে কমে গেছে। গত মাসে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সোয়াব উভয়ের আমদানি ৪০ শতাংশ কমে গেছে। এন ৯৫ মাস্কের আমদানি ৫৫ শতাংশ কমে গেছে এবং সার্জিক্যাল গাউনসের আমদানি প্রায় স্বাভাবিক মাত্রায় আছে। উৎস স্থানান্তরিত হয়ে হন্ডুরাস হওয়ায় এটি স্বাভাবিক আছে। এর মূল উৎস সাধারণত চীন। সাধারণত উভয় উপকূল দিয়ে মেডিক্যাল সামগ্রী সরবরাহ করা হয়। মধ্য ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে যে চিকিৎসা সরবরাহকারীদের জন্য সুরক্ষা সরঞ্জামের বিশ্বব্যাপী চাহিদা স্বাভাবিকের চেয়ে ১শ’ গুণ বেশি। সুরক্ষা সামগ্রীর দাম দশগুণ বেড়ে গেছে, স্টক সরবরাহ শেষ হয়ে গেছে এবং চার থেকে ছয় মাসের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এটি সত্ত্বেও, ফেডারেল চুক্তির ডেটায় দেখা যায় যে, এ বিষয়ে অর্ডার জমা দেয়ার জন্য বড় কোন প্রচেষ্টা চালানো হয়নি। বাণিজ্য কর্তৃপক্ষ সাহায্য করেনি। মেডিক্যাল সরবরাহের ওপর শুল্ক সেগুলোকে আরও ব্যয়বহুল করেছে এবং সেগুলো মাত্র ৫ মার্চে প্রত্যাহার করা হয়, এমনকি হেলথ কেয়ার এ্যাসেসিয়েশন প্রশাসনকে গত বছর মাস্ক, গ্লোভস ও গাউনের মতো সামগ্রীর ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করার কথা বলার পরও। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও তাইওয়ানের মতো দেশ তাদের নিজেদের নাগরিকদের জন্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে মাস্ক, গ্লোভস ও গাউনের মতো মেডিক্যাল সামগ্রী রফতানি বন্ধ করে দিচ্ছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে খুব কম বিকল্প থাকছে। আমেরিকান কলেজ অব ইমার্জেন্সি ফিজিশিয়ানদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসক, নার্স এবং প্রথম প্রতিক্রিয়াকারীরা প্রতিদিনের শেষে তাদের মুখোশগুলি ব্লিচ দিয়ে স্প্রে করে এবং পরের দিন ফের ব্যবহার করতে শুকানোর জন্য ঘরে ঝুলিয়ে রাখেন। করোনায় এ পর্যন্ত সারাবিশ্বে ১১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
×