ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কবিতা

প্রকাশিত: ১২:৩৫, ২০ মার্চ ২০২০

কবিতা

করোনা তুমি প্রেমময় গদ্য হও আনোয়ার কামাল এখন আমার ঠোঁট লুকিয়ে রেখেছি মাথার পেছনে হাতের আঙুলগুলো নিশপিশ করলেও হাতে হাত মিলাই না পরম বন্ধুর সাথেও, তিন ফুট তফাতে থাকি হাতের কব্জিগুলো গুটিয়ে গেছে- মাক্সে ঢেকেছি মুখ লোভাতুর ঠোঁট আর নাকের ডগায় কেবলই- ভয়ঙ্কর সুন্দর এক করোনা ধেয়ে আসছে আমার সাথে মিতালী গড়বে বলে করোনা তুমি কবিতা হয়ে যাও- কবিতায় বসত গাড়ো তখন ঠিক ঠিক তোমার নাভিমূলে নতজানু হয়ে ধ্যানমগ্ন হবো- করোনা তুমি কবিতা হও- প্রেমিক হও- প্রেমময় গদ্য হও ** রূপান্তর রফিকুজ্জামান রণি মৃত্যুর পর নিশ্চিত একটা বই হয়ে যাবো আমি। আমাকে পড়বে, স্পর্শ করবে, হাসবে এবং কাঁদবে- বিচিত্র অভিজ্ঞতার মুখোমুখি দাঁড়াবে তোমরা। আমার প্রতিটি রক্তকণিকা হঠাৎ রঙ পাল্টিয়ে হয়ে যাবে কালো কালো নিথর বর্ণমালা জ্যোৎস্না বল পৃষ্ঠায় পরিণত হবে বুকের পাটাতন চোখ-মুখ, নাক-কান ও গ্রীবাদেশের সমন্বয়ে তৈরি হবে নজরকাড়া মলাট তারপর চুল আর ভ্রুয়ের ক্রমস্পর্শে সম্পন্ন হবে বাঁধাই পর্ব হাড়-মাংস, শিরা-উপশিরার পারম্পর্যে একটা বুকসেলফও তৈরি হবে সেদিন আমি সংরক্ষিত হবো আমার ভেতরে তোমরা কেবল বারকোষ থেকে নামিয়ে নামিয়ে পড়বে উদ্বেলিত, উৎসাহিত হবে, কখনও কখনও গভীর বেদনায় চুপসে যাবে মৃত্যুর পর আমি সত্যিসত্যিই একটি বইয়ে রূপান্তরিত হয়ে যাবো! ** সময় ও জীবন আতিক আজিজ যে যখন পারছে হাঁটছে পথে। পথ মানে তো একটা জীবন, যার শেষ নেই। রাস্তার দু’পাশের বনজঙ্গলে পাখির ডাক নয়নজুলিতে নেতিয়ে থাকা সূর্যের আলো। যেনো- ‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা’। পথভোলা পথিকের ক্ষণিকের সান্ত¦না পুরস্কার। তাহলে কি ওই আলো নিভে যাবে? শুকনো কাদায় ভরে যাবে সময়ের চাকা? পথিক সময়কে দেখতে পায় না। সময় কিন্তু দেখছে সব। ** মুজিব মরে নাই মৃত বলো না তাঁকে নজমুল হেলাল যে জাগায় সে ঘুমায় না যে প্রেরণা যে শক্তি সাহস আলোকবর্তিকা তাঁকে মৃত বলতে নেই! যদি মৃত ভেবে অযৌক্তিক তৃপ্তি খোঁজো অন্যায় হবে - বীজমন্ত্র মরে গেলে মানুষের কী থাকে আর? মুজিব মরে নাই!! মৃত বলো না তাঁকে!! অধর্ম নাশক শোষকের কাছে ত্রাস বৈষম্যের দেওয়াল ভেঙে ভেঙে উন্মুক্ত আকাশ যে দ্যায় রঙিন করে আজও স্বপ্নভরা হৃদয়ের সৃষ্টিশীল চঞ্চল আকাশ - তাঁকে যারা মৃত বলতে চায় তারা বোধ হয় ইতিহাস পড়েনি মানুষের- দাবানল থেমে গেলে অরণ্যের জেগে ওঠা চির সবুজ দ্যাখেনি আজও ধ্বংস স্তূপের ভেতরে লুকিয়ে থাকা তারুণ্য দ্যাখা হলো না তাদের। অবহেলা অমর্যাদা অনাদর যাঁকে দুর্বল করে না জাতি আর জাতির কণ্ঠস্বর অভিন্ন নক্ষত্র হয়ে ওঠে দেশ দশ আর পতাকার বিকল্প যিনি তাঁকে কেন মৃত বলার দুঃসাহস দ্যাখাও? এ্যাখন যে মুজিব বেঁচে আছে অন্তরে অম্লান সে মুজিব মরে নাই মৃত বলো না তাঁকে!! বঙ্গ ছাড়িয়ে মানববন্ধু প্রেরণা বিশ্বময় দুর্নীতিবাজদের চোখে জীবন্ত আতঙ্ক আজও ধর্ষক লুটেরাও জানে বিজয় মানে মুজিব স্বাধীনতা মানে মুজিব মুক্তি মুজিবের আরেক নাম মুক্তিবাহিনী মুক্তিযোদ্ধার এক একটি লাল গোলাপ প্রতিবাদের মশাল যেন মুজিব ছাড়া আর কিছু নয় আজও অহঙ্কার আমাদের কোটি কোটি জনতার!! মুজিব রাঙা ফুল সুবাসিত মুজিব মর্মমূল চেতনার ভাষা আশাতে দেশপ্রেম মানুষে মানুষে ভালবাসাতে বাতিঘর জাতিস্বর মুজিব এ্যাখনও স্বপ্ন দ্যাখায় অমর কবিতা লেখায় মুুজিব আমাদের মৃত বলো না তাঁকে মুজিব মরে নাই মুজিব চেতনায়!! ** পুষ্পের সম্মোহন বজলুর রশীদ তোমার সম্মতি আর বিশ্বাসে- অকপটে এই কবিতার পাতায় কতটুকু উন্মুুখ হবে ফাগুনের দুপুর ঘুমের আকাশে বিবিধ বাতাস। বাসন্তীর চোখে বসে আছে কিছু শৈল্পিক অনিন্দ্য কারুকাজের ভাব; ভাবটা কেবল হল্লা করে উঠতে চাইছে অথচ শিমুল ঝরার বিষণ্নতা জ্বলে উঠছে তোমার অনুজ্জ্বল নখে- সিক্ত হচ্ছো বার বার খোঁপার ক্যানভাসে অবিরাম সৃজনের ভ্রুণ। আর আমি তখন বোকা চাঁদের মতো ঘর খুলে খুঁজে চলেছি পুষ্পের সম্মোহন- শিমুলের পাপড়ি মাড়িয়ে বিবিধ বাতাস... ** শ্রদ্ধাঞ্জলি সৈয়দা ফাহিমা বেগম আজ এ বসন্ত আম্র কাননে শুধু মুকুল নয় যেন বকুল ফুলও ঝরছে বয়ে চলা পদ্মা মেঘনা যমুনা মধুমতি অশ্রু সজল জলে বয়ে চলে বঙ্গবন্ধু তোমায় ভালবেসে। সব ফুল মিলে সব ঋতু হেসে একাকার হয়ে গেছে যেন কিছু নয় তুমি জন্মেছে এ দেশে। শতবর্ষ পূর্বে তুমি জন্মেছিলে এই টুঙ্গিপাড়া গ্রামে কে জানত তোমার রক্তের ফেনিনে মজলুম নেতা বীর তিতুমীর কাজী নজরুল বইছে। বড় বড় ত্যাগী শহীদ হয়েছে ধর্মের পদতলে তুমি কম কিসে? তুমিও তো এগিয়ে এসেছো সাত কোটি মানুষের ভাষাকে বাঁচাতে তুমি বুঝেছিলে এ ভাষা বিধাতার দান তাই ভাষাকে বাঁচাতে হবে। নীল গগনে মাঝে মাঝে আল্লাহর নাম ভেসে ওঠে মনে হয় যেন ফেরেশতারা তোমার জন্য দোয়া। হে বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী তুমি তোমায় মোরা শ্রদ্ধার নামে স্মরণ করি। ** নদীর মায়া দালান জাহান অন্ধকার পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে নদী নামের এক কিশোরী মেয়ে মরে যায় আহা মরে যায় তৃষ্ণাতে। দোলাক দোলাক ঢোলক বাজে শালের জাহাজে চড়ে নদী শহরের আলোতে যায় কাজে। অদূরে কি নড়ে মানুষ ওড়ে বাঁধে নদী তো বয়েই যায় চিরকাল ওপারে বসে কেন ছেলেটি কাঁদে।
×