ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জীবন বাঁচাতে দেশে ফিরে গেলেন নেইমার

প্রকাশিত: ১২:২২, ২০ মার্চ ২০২০

জীবন বাঁচাতে দেশে ফিরে গেলেন নেইমার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মরণঘাতী করোনাভাইরাস আতঙ্কে বিশ্বব্যাপী সবার ঘুম হারাম হয়ে গেছে। দিনকে দিন পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। এই ভাইরাসের ভয়ে ফ্রান্সের ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন (পিএসজি) থেকে নিজ দেশ ব্রাজিলে ফিরেছেন দুই সুপারস্টার নেইমার ও থিয়াগো সিলভা। ক্লাব সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ফরাসী সরকার দেশটিতে লকডাউন ঘোষণা করার পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দুই সেলেসাও সুপারস্টার। অন্যদিকে করোনার বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সুইডেনের সাবেক তারকা ফুটবলার জ¬াতান ইব্রাহিমোভিচ। এ লক্ষ্যে তারকা এই স্ট্রাইকার শুরু করেছেন সাহায্য সংগ্রহের ক্যাম্পেইন। যেটিকে তিনি নাম দিয়েছেন, ‘কিক দ্য করোনাভাইরাস’। অর্থাৎ ‘করোনাভাইরাসকে লাথি মেরে উড়িয়ে দিন’। ইতালির সঙ্কটময় পরিস্থিতি সামাল দিতেই মূলত এ মহতী উদ্যোগ নিয়েছেন ইব্রা। কয়েক দফায় অন্তত ৮ বছর ইতালির ক্লাব ফুটবলে খেলেছেন তিনি। ক্যাম্পেইনের লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে প্রাথমিকভাবে ১ মিলিয়ন ইউরো অর্থাৎ ৯৩ কোটি টাকা সাহায্য সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন ইব্রা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে সবাইকে আহ্বান জানিয়ে ইব্রা বলেন, ইতালি আমাকে সবসময়ই অনেক বেশি দিয়েছে। এখন একটা নাটকীয় সময়। আমি এখন এ দেশটাকে কিছু ফিরিয়ে দিতে চাই। কিভাবে কাজটা করবেন সে ব্যাখ্যা দিয়ে ইব্রাহিমোভিচ বলেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমার সঙ্গে যারা আছে তাদের নিয়ে কাজ করব। মানবিক হাসপাতালগুলোর জন্য সাহায্য সংগ্রহ করব। এ ব্যাপারে আমি আমার যোগাযোগ ক্ষমতাটা ব্যবহার করব যাতে করে বার্তাটা সবাই পায়। এটা সাধারণ কোন ভিডিও নয়, খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমি সবার ভেতরের মানবিকতার দিকে তাকিয়ে আছি। যাতে করে কিক মেরে ভাইরাসটি উড়িয়ে দেয়া যায়। আমরা সবাই মিলে হাসপাতালগুলোর জন্য দারুণ কিছুই করতে পারব। এছাড়া যেসব ডাক্তার, নার্স তাদের জীবনের পরোয়া না করে আমাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে তাদের জন্যও কিছু করা উচিত। সুইডেনের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা বলেন, সবার ছোট ছোট সাহায্যগুলোই একসঙ্গে অনেক বড় হবে। আমরা মিলান, বারগামো, কাস্তেলাঞ্জা ও তুরিনের হাসপাতালগুলোর ইনটেনসিভ কেয়ারের জন্য দান করব সব টাকা। এছাড়া প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি যেমন ঃ ফার্স্ট এইড, মাস্ক, গাউন এবং প্রটেক্টিভ গিয়ার কিনে দেব। সবার সাহায্য নিয়ে এই খেলায় আমরা জয়ী হতে পারি। ফরাসী ক্লাব পিএসজি তাদের সব বিদেশী খেলোয়াড়দের দেশে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। প্যারিসেও তারা সবাই সেল্ফ-আইসোলেশনে ছিল। যে কারণে নিজ দেশে ফিরেছেন নেইমাররা। পিএসজির অন্যান্য খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফরাও নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন। তবে কয়েকজন প্যারিসেই নিজেদের পরিবারের কাছে ফিরেছেন। জানা গেছে, ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মারকুইনহোস দেশে ফিরে না গিয়ে ফ্রান্সেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। করোনাভাইরাসের কারণে ফ্রান্সে সবধরনের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেলেও পিএসজি খেলোয়াড়দের তাদের ফিটনেস লেভেল ধরে রাখার কড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আট মিনিট ওয়ার্ম-আপ, ১০ মিনিট ওয়েইট ট্রেনিং, ট্রেডমিলে ৪০ মিনিট দৌড়ানো ও শেষে পাঁচ মিনিট ওয়ার্ম-ডাউন। এদিকে স্প্যানিশ লা লিগার ফুটবল ক্লাব আলাভেসের ১৫ খেলোয়াড়ের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে স্প্যানিশ ক্লাব সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে মূল দলের আছেন ৩ জন খলোয়াড়। আলাভেস জানিয়েছে, খেলোয়াড়রা ছাড়াও সাতজন কোচিং স্টাফের দেহেও এই ভাইরাস পজিটিভ এসেছে। তবে আক্রান্ত সকলের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে বলে ক্লাবটি জানিয়েছে। গত ৬ মার্চ আলাভেস তাদের ঘরের মাঠে লা লিগায় ভ্যালেন্সিয়ার বিরুদ্ধে খেলেছিল। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত ভ্যালেন্সিয়া ক্লাবের প্রায় ৩৫ শতাংশের দেহে কোভিড-১৯ পজিটিভ ধরা পড়েছে।
×