ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাদা-কালো আলোকচিত্রে বঙ্গবন্ধুর বহুমাত্রিক অভিব্যক্তি

প্রকাশিত: ১১:২৪, ২০ মার্চ ২০২০

সাদা-কালো আলোকচিত্রে বঙ্গবন্ধুর বহুমাত্রিক অভিব্যক্তি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ছবিজুড়ে বিরাজ করছে আলো-ছায়ার খেলা। সাদা-কালোর রহস্যময়তায় স্থিরচিত্রটিতে ভাসছে মহানায়কের মুখাবয়ব। আলো-আঁধারির মাঝে উদ্ভাসিত জাতির পিতার মুখচ্ছবি। সেই মুখের ডান পাশ আলোকিত। দৃশ্যমান হয়েছে সুদূরের পানে মেলে ধরা প্রজ্ঞাময় দৃষ্টি। ছবিতে মুখের পাশে অন্ধকার। মুখের অদেখা সেই অংশটিও যেন তুলে ধরেছে তার অসম সাহসী ব্যক্তিত্ব। এভাবেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ফ্রেমবন্দী করার সুযোগ পেয়েছিলেন পোর্ট্রেট কবিখ্যাত আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন। গত শতকের গোড়ার দিকে জাতির পিতার বেশ কিছু প্রতিকৃতি ধারণ করেছিলেন প্রখ্যাত এই আলোকচিত্রী। খুব কাছ থেকে স্বাধীনতার মহান স্থপতির নানা দুর্লভ মুহূর্তকে ধরে রেখেছিলেন ক্যামেরায়। এর মাঝে কিছু ছবি একইসঙ্গে ঐতিহাসিক ও অভূতপূর্ব। সে সব ছবি নিয়ে সজ্জিত প্রদর্শনীটির শিরোনাম ‘জয় বঙ্গবন্ধু’। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীটি উৎসর্গ করা হয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি। ধানম-ির ফরাসীর সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আলিয়ঁস ফ্রঁসেসের লা গ্যালারিতে চলমান এই প্রদর্শনীর শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। যদিও গত ৬ মার্চ থেকে সূচনা হওয়া প্রদর্শনীটি শেষ হওয়ার কথা ছিল আগামী ২৪ মার্চ। তবে প্রাণঘাতী করোনাভাইসের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ের আগেই সমাপ্তি টানা হয় প্রদর্শনীর। বাংলার অবিসংবাদিত নেতাকে নানাভাবে ফ্রেমবন্দী করেছেন নাসির আলী মামুন। সে সব ছবিতে দেখা মেলে বঙ্গবন্ধুর বহুমাত্রিক অভিব্যক্তি। একটি ছবিতে স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে অস্ত্র জমা দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু। এমন ছবির সঙ্গে আছে মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ করে মোনাজাত করছেন কিংবা ধানম-ি ৩২ নম্বর বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে নামছেন শেখ মুজিব। যুক্ত হয়েছে তর্জনি উঁচিয়ে ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণের ছবি। স্বাধীনতা যুদ্ধের পরপরই বাংলাদেশে নাসির আলী মামুন তার ক্যামেরায় পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফির প্রবর্তন করেন, যা পরবর্তীকালে এদেশের আলোকচিত্রে প্রতিকৃতির ধারার সূচনা করে। ‘ক্যামেরার কবি’ মামুন এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ধারণকৃত সবচেয়ে প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিকৃতিগুলোর মধ্যে সিংহভাগ ক্যামেরাবন্দী করেছেন। তার সাদাকালোয় তোলা ছবিগুলো আলো-আঁধারের এক আশ্চর্য রহস্যঘন অথচ অপরূপ শিল্পসুষমামতি সম্মিলন দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। প্রতিকৃতি ধারণে অসাধারণ দক্ষতায় আলোকচিত্রী পেয়েছে পোর্ট্রেটের কবির আখ্যা।
×