ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

একে অপরকে মাস্ক পরিয়ে দিলেন রেজাউল শাহাদাত

প্রকাশিত: ১১:১৩, ২০ মার্চ ২০২০

একে অপরকে মাস্ক পরিয়ে দিলেন রেজাউল শাহাদাত

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ করোনাভাইরাস সতর্কতার প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে। একসঙ্গে ৪-৫ জনের বেশি জড়ো না হওয়ার নির্দেশনা থাকায় বৃহস্পতিবার প্রচারে নামেননি মেয়র পদের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। ভোটের গণসংযোগ এখন পর্যবসিত হয়েছে করোনা সতর্কতার প্রচারে। এদিন দুই প্রার্থী একে অপরের মুখে মাস্ক পরিয়ে দেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ভোটের প্রচার থেকে বিরত থাকেন। অপরদিকে বিএনপি প্রার্থী ডাঃ শাহাদাত হোসেন মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করেন। চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন শেষ পর্যন্ত স্থগিত হচ্ছে কিনা এমন দোলাচলের মধ্যেই চলছে প্রার্থীদের তৎপরতা। করোনা সতর্কতার কারণে অনিশ্চয়তা থাকায় নেই সেই ভোটের আমেজ। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৯ মার্চ ভোট। কিন্তু দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে উত্তাপ যেন ততই কমছে। অথচ হওয়ার কথা ছিল উল্টো। চট্টগ্রামে ইতোমধ্যেই হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও কমিউনিটি সেন্টারসহ বিভিন্ন স্থানে সামাজিক অনুষ্ঠান বা যে কোন ধরনের জনসমাগমের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ প্রশাসন। এ নির্দেশনা প্রভাবিত করেছে ভোটের প্রচারকে। কেননা, প্রার্থীরা প্রচারে নামলে জনসমাগম ঘটে থাকে। তাছাড়া সামাজিক অনুষ্ঠানের ওপর বিধিনিষেধ জারি হলে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল শিল্পকলা একাডেমির থিয়েটার হলে। আগের দিন বুধবার এ জন্য ঢাকা থেকে এসেছিলেন। কিন্তু ইসিতে জরুরী বৈঠকের জন্য তিনি ঢাকায় ফিরে যান এ সভা না করেই। চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোঃ হাসানুজ্জামান জানান, করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থাকায় একসঙ্গে অধিক লোক সমাগম না হওয়ার নির্দেশনা আছে। প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করলে সেখানে অনেকেই যেতে পারেন। কারণ এক প্রার্থীর সঙ্গে অন্তত কয়েকজন করে লোক আসবেন। এ বিবেচনায় মতবিনিময় সভা বাতিল করা হয়। বৃহস্পতিবার গণসংযোগে নামেননি আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির ডাঃ শাহাদাত হোসেন। এদিন তারা উপস্থিত হন একটি সামাজিক সংগঠন আয়োজিত মতবিনিময় সভায়, যেখানে সকল প্রার্থীকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ডাঃ শাহাদাত চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ডক্টরস এ্যাসোসিয়েসন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। মতবিনিময় সভা থেকে রেজাউল করিম চৌধুরীর বের হওয়া এবং ডাঃ শাহাদাতের প্রবেশের সময় দুজনের দেখা হয়ে যায়। সেখানে বিএনপি প্রার্থী আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে মাস্ক পরিয়ে দেন। এরপর আওয়ামী লীগ প্রার্থীও ডাঃ শাহাদাতের মুখে মাস্ক পরান। এ সময় উভয় প্রার্থীর সমর্থকরা উচ্ছ্বসিত হন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার তিনি কোন প্রচার চালাননি। নির্বাচন কমিশন থেকেও এ ধরনের নির্দেশনা রয়েছে। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় তিনি নগরবাসীকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান। নির্বাচন স্থগিত হওয়া উচিত কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। সবদিক বিবেচনা করে এ বিষয়ে কমিশনই সিদ্ধান্ত নেবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতারা বৃহস্পতিবার বিকেলে হোটেল পেনিনসুলায় এক সভায় মিলিত হন। সেখানে চসিক নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা এবং একইসঙ্গে করোনাভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সংসদ সদস্য এমএ লতিফ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলতাফ হোসেন বাচ্চু এবং মহানগর ও জেলা নেতারা। বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডাঃ শাহাদাত হোসেনের বৃহস্পতিবারের কার্যক্রম ছিল সকালে প্রেসক্লাব এলাকায় মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণের মধ্যে সীমিত। ড্যাবের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে ডাঃ শাহাদাত বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট এমন পরিস্থিতির মধ্যে যদি ভোট হয়, মানুষ ভোটকেন্দ্রে যেতে শঙ্কা বোধ করবে। একজন ডাক্তার হিসেবে প্রথমে চাইব মানুষের নিরাপত্তা। মানুষকে নিরাপত্তাহীনতায় রেখে যদি ভোট হয় এবং এর ফলে যদি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে তার দায়ভার সিইসিকে নিতে হবে।
×