ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১ লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকায় এডিপি সংশোধন

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ২০ মার্চ ২০২০

১ লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকায় এডিপি সংশোধন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রত্যাশা অনুযায়ী বিদেশী সাহায্য না পাওয়ায় চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী কাটছাঁট করা হলো। বৈদেশিক সহায়তার ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা খরচ কমিয়ে চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী ১ লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকায় সংশোধন করা হলো। এর মধ্যে সরকারী অর্থায়ন ১ লাখ ৩০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা ৬২ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার বরাদ্দ ৮ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার নগরীর শেরে বাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) জন্য উন্নয়ন বাজেটের প্রধান অংশ তথা সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (আরএডিপি) চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার চাহিদার ওপর ভিত্তি করেই আরএডিপি’র অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এডিপি বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতাও বাড়ছে। সরকারী অর্থ শতভাগ খরচ হয়েছে, তবে প্রকল্প ঋণের টাকা শতভাগ খরচ হয়নি। ঋণের টাকা খরচের নানা শর্ত থাকে। তবে দিন শেষে আমরা ঠিকই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেড়েছি। এ সময় বৈদেশিক বরাদ্দ থেকে কমানোর কারণ জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে দাতাদের নীতিমালার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে ব্যয় কিছুটা পিছিয়ে পড়লে শেষ পর্যন্ত বরাদ্দ কাটছাঁট করতে হয়। তাই প্রকল্প সহায়তার শতভাগ অর্থ ব্যয় করা কখনই সম্ভব হয় না। এর ফলে প্রতিবছরই বৈদেশিক সহায়তা খাত থেকে বরাদ্দ কাটছাঁট করতে হয়। মূল এডিপিতে ১ হাজার ৪৭৫টি প্রকল্প ছিল। ২৬৯টি বেড়ে আরএডিপিতে প্রকল্প সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৪৪টিতে। তবে এরমধ্যে নতুনভাবে অনুমোদিত প্রকল্প রয়েছে ২৪৬টি। অন্যদিকে, বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তির সুবিধার্তে ১৯০টি উন্নয়ন প্রকল্পের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। পরিবহনখাতে ৪৭ হাজার ৫৫৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা মোট সংশোধিত এডিপির ২৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ভৌতপরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন খাতে। এ খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৬ হাজার ৫১৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। যা ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এছাড়া বিদ্যুতখাতে তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ ধরা হয়েছে। এ খাতে বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৩ হাজার ৭৬৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। যা মোট আরএডিপির ১২ দশমিক ৩২ শতাংশ। অন্যান্য খাতে প্রাথমিক বরাদ্দ হচ্ছে- কৃষিখাতে ছয় হাজার ৭১৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। পল্লী উন্নয়নে ১৫ হাজার ৭৫৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, পানিসম্পদ খাতে ছয় হাজার ৩৬৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। শিল্প খাতে তিন হাজার ৫৫০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। তৈল-গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ খাতে দুই হাজার ৪১৭ কোটি টাকা। যোগাযোগে দুই হাজার ২২৮ কোটি টাকা। শিক্ষা ও ধর্মে ২০ হাজার ৪৩২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে ৬১০ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য-পুষ্টি-জনসংখ্যা ও পরিবারকল্যাণে ১০ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা। গণসংযোগে ১৯৮ কোটি টাকা। সমাজকল্যাণ-মহিলাবিষয়ক ও যুবউন্নয়নে ৭৯৮ কোটি টাকা। জনপ্রশাসনে পাঁচহাজার ১৫৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা। বিজ্ঞান-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ১৬ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান খাতে বরাদ্দ ধরা হচ্ছে ৫৪৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এছাড়া স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার জন্য মোট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৮ হাজার ২৭৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৪ হাজার ৪১২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, বাকি ৩ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে যোগান দেয়া হবে।
×