ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মোহাঃ মারুফ আখ্্তার (মজনু)

সচেতনতাই ঠেকাবে বিপদ

প্রকাশিত: ০৯:০৭, ১৯ মার্চ ২০২০

সচেতনতাই ঠেকাবে বিপদ

চীনের উহান থেকে এখন সারাবিশ্বের অধিকাংশ দেশ করোনাভাইরাসে (কোভিড ১৯) আক্রান্ত। চীনের তুলনায় বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ গুণ বেড়েছে। এটা বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ের আভাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য করোনাভাইরাসকে বিশ্বব্যাপী মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং আক্রান্ত প্রতিটি দেশকে জরুরী পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার আহ্বান জানিয়েছেন। সময়ে সময়ে এ পৃথিবীতে করোনার চেয়েও ভয়াবহ অনেক রোগ যেমনÑ ইনফ্লুয়েঞ্জা, এইডস, সার্স-মার্স, জিকা, গুটিবসন্ত, পোলিও, ইবোলায় কোটি কোটি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে কিন্তু এখনকার মতো এত ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়নি। করোনায় মৃত্যুর হার কম হলেও বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ‘ডিজিজ এক্স’ নামে নতুন রহস্যময় রোগ মহামারী আকার ধারণ করে মানবজাতিকে কঠিন সঙ্কটে ফেলতে পারে এমন ধারণা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। এর কবল থেকে রক্ষা পেতে এখন থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করে প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত। চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক উন্নত তার পরও কোন না কোন ভাইরাস থাবা দিলে হাজারও সতর্কতার মধ্যে অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তেমনি বাংলাদেশও এর হাত থেকে রক্ষা পায়নি করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে। ভাইরাসটি বাংলাদেশে শনাক্ত হলেও এখনও ছড়িয়ে পড়েনি। এখনও আক্রান্তের সংখ্যা এক ডিজিটেই অবস্থান করছে। বিদেশ ফেরত অনেককেই হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ঝুঁকি থাকলেও মারাত্মক নয়। এটা সম্ভব হয়েছে সচেতনতা এবং সতর্কতার কারণে। এ দুর্যোগে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি আমরা বাংলাদেশীরা অনেক সচেতন ও সতর্ক। সচেতনতাই প্রমাণ করে ভাইরাসটি দমন ও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। আতঙ্কিত না হয়ে ভয়কে জয় করতে হলে এর বিরুদ্ধে সচেতনতার লড়াই জোরদার করলে অনেকাংশে প্রাণঘাতী রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী যা যা করণীয় তা মেনে চললে এর বিরুদ্ধে সফলভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব। লক্ষণীয় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের দুটি অভ্যাস গড়ে উঠেছে যেমন- বাইরে মাস্ক ব্যবহার করা, বাইরে থেকে এসে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। এ অভ্যাস যেন অভ্যাসই থেকে যায় এ প্রত্যাশা সচেতন নাগরিকদের প্রতি। ভাইরাসটি যেহেতু সংক্রামক সেহেতু লোক সমাগম থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। ঘনবসতি হিসেবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। বাংলাদেশও ঘনবসতির দেশ সে হিসেবে আমরাও ঝুঁকির মধ্যেÑ ফলে মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা থাকবেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও ঝুঁকি রয়েছে। এ জন্য আতঙ্ক কাটিয়ে সচেতন ও সতর্ক হতে হবে। সবকিছু স্বাভাবিক করতে হবে। সাহস ও সচেতনতায় হারাতে হবে সবকিছু। সরকারকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে তথ্য প্রদান করে ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। সরকারকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কি কি করণীয় এবং বর্জনীয় সে বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সচেতনতা বাড়ালে মানুষ অধিক সতর্ক হবে। করোনাভাইরাসের প্রতিরোধের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল উপকরণ সহজলভ্য করতে এ দুর্যোগে ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফার মনোভাব ত্যাগ করতে হবে। সকল সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোকে মানবসেবায় ব্রতী হয়ে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষ পরাস্ত হবে না। পরাস্ত হবে রোগ। এ জন্য আমাদের সাহস যোগাতে হবে, সচেতন হতে হবে, সতর্ক হতে হবে। বনগ্রাম, পঞ্চগড় থেকে
×