ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর চিঠি

প্রকাশিত: ০৮:৫৭, ১৯ মার্চ ২০২০

প্রধানমন্ত্রীর চিঠি

১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন পালিত হয়। এ উপলক্ষে ছোট্ট সোনামণিদের এক চিঠির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনীয় বার্তা তাদের কাছে পৌঁছে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চিঠিটি মূলত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে খুদে শিক্ষার্থীদের কাছে প্রেরণ করা হয়। কথা ছিল চিঠিটা পাঠ করেই তাদের শোনানো হবে। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে পত্রপাঠ বন্ধ করা হলেও প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের কাছে এই চিঠি চলে আসে। ছোট্ট সোনামণিদের প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক শুভেচ্ছা ও প্রাণঢালা ভালবাসা জানান। প্রচলিত পত্র লিখনের নিয়ম অনুসরণ করে পরিবারের ভাই-বোন ও পিতা-মাতার প্রতিও প্রাসঙ্গিক শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বাবা-মাকে দেন সালাম, সঙ্গে ভাই-বোনদের প্রতি থাকে স্নেহাশীষ। চারপাশের মানুষের জন্য দিয়ে যান তাঁর আন্তরিক ধন্যবাদ। প্রাসঙ্গিক সৌজন্য বোধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি আবহমান বাংলার মহানায়ক মাতৃভূমির জন্য যে অনন্য গৌরব আর অহঙ্কার বয়ে আনেন বঙ্গবন্ধু তার একটি দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে ছোট্ট মণিদের জানিয়ে দেন ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্ম নেয়া বঙ্গবন্ধু তার শততম জন্মবর্ষের শুভক্ষণে। শ্যামল বাংলার সোঁদা মাটির গন্ধে শিকড়ের গভীরে প্রোথিত এই ক্ষণজন্মা মহাপুরুষের জীবনব্যাপী স্বপ্ন, কর্ম, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ব্যাপারটিও আবেগাপ্লুত বার্তায় ছোট্ট মণিদের নজরে নিয়ে আসেন। বাঙালীর আত্মপরিচয় ও অস্তিত্ব রক্ষায় এই মহামানবের যুগান্তকারী অবদানে আজ আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর যোগ্যতা, ক্ষমতা ও সম্মানটুকু অর্জন করতে পেরেছি। বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামের মাটি ভেদ করে বেড়ে ওঠা এই অসাধারণ ব্যক্তিসত্তা সারা জীবন অতি সাধারণ মানুষের জন্য লড়াই, সংগ্রাম করে সোনার বাংলাদেশ তৈরির স্বপ্ন দেখেছেন। অধিকারহীন মানুষদের অসহায়, বিপন্ন জীবনকে নতুন আশা-আকাক্সক্ষা আর সম্ভাবনায় ভরিয়ে তুলতে প্রতি মুহূর্তে নিজের প্রাণটাকেও বাজি রাখতে হয়। তিনি শুধু আবহমান বাংলা নয়, সারা বিশ্বের নেতৃস্থানীয় এক অকুতোভয় নির্ভীক যোদ্ধা। মুজিববর্ষ পালনের এমন গৌরবান্বিত পর্বে তোমাদের সবাইকে আন্তরিক অভিবাদন। স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দেয়া এই বীরশ্রেষ্ঠ বাঙালী তাঁর যুগান্তকারী কর্মদ্যোতনায় অর্জন করেছেন বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির জনকের মর্যাদা। এমন কৃতিত্ব নিজেই জীবনভর সংগ্রামী অভিযাত্রায় আপন ভূমিকাকে স্মরণীয় আর বরণীয় করে রেখেছেন। সেই মহানায়ককে চলে যেতে হয় ঘাতকের নির্মম বুলেটে ক্ষতবিক্ষত হয়ে। তেমন রক্তবিন্দু থেকে তৈরি হয়েছে নতুন প্রজন্ম, স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার আকাক্সিক্ষত প্রত্যয়। সত্যের অপলাপ ইতিহাস মেনে নেয় না। সাময়িক বিচ্যুতির দায়ও ইতিহাসকেই বহন করতে হয়। বঙ্গবন্ধুও তেমনি ঐতিহাসিক শৌর্যবীর্যে এক অবিস্মরণীয় স্থপতি যাকে বেশি দিন আড়াল করা ষড়যন্ত্রকারীদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। সবুজ বাংলার নৈসর্গিক অবহে তিল তিল করে তৈরি এই অকৃত্রিম, লড়াকু ব্যক্তিত্বের স্বপ্নকে আমাদের সবাই মিলে বাস্তবের দরজায় নিয়ে যেতে হবে। মুজিববর্ষ মানেই তেমনই সব উন্নয়ন পরিকল্পনা যা একটি নিরাপদ, আধুনিক ও নতুন বাংলাদেশ তোমাদের জন্য বাসযোগ্য করা হবে। ছোট্ট মণিদের লেখাপড়ায় মনোযোগ দিয়ে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে পূরণ করতে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে নিরলস কর্মপ্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে।
×