ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিশাল অঙ্কের ক্ষতির শঙ্কায় ভারতীয় ক্রিকেট

প্রকাশিত: ১২:০৩, ১৮ মার্চ ২০২০

বিশাল অঙ্কের ক্ষতির শঙ্কায় ভারতীয় ক্রিকেট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কেউ স্বীকার করুক বা না করুক, অর্থের বিচারে বিশ্ব ক্রিকেটের চালিকাশক্তি ভারত। ধারণা করা হয় বিশ্বে ক্রিকেট বা এ সংক্রান্ত আয়ের অন্তত ৮০ শতাংশ আসে দেশটি থেকে। সেখানে ক্রিকেটীয় অর্থনীতির বড় একটা জ্বালানি আবার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল)। করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে যখন একের পর এক আন্তর্জাতিক সিরিজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তখনও আইপিএল আয়োজনের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছে না ইন্ডিয়ান বোর্ড (বিসিসিআই)। এ মাসের ২৯ তারিখ পূর্ব নির্ধারিত সূচী অন্তত ১৫ দিন পিছিয়ে ১৫ এপ্রিল করা হয়েছে। কিন্তু সেটিও নিশ্চিত নয়। কারণ ভারতজুড়ে ক্রমাগত করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় খোদ বিসিসিআইয়ের কর্মকা-ই ক্লোজডাউন করা হয়েছে। কর্মীদের বাসায় বসে কাজের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলী। একবার ভাবুন তো আইপিএল বন্ধ হয়ে গেলে ক্ষতির অঙ্কটা কেমন হতে পারে? ধারণার বাইরে। ৩৮৬৯.৫ কোটি টাকা। প্রায় ৩,৯০০ কোটি। আইপিএল বাতিল হলে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হবে সম্প্রচার স্বত্বে। তার পরিমাণ ৩২৬৯.৫ কোটি টাকা। আর কেন্দ্রীয় ও টাইটেল স্পন্সরশিপে লোকসান হবে যথাক্রমে ২০০ কোটি এবং ৪০০ কোটি টাকা। টুর্নামেন্টের ৭৫ শতাংশ প্রচার স্বত্ব স্টার ইন্ডিয়ার। আইপিএল থেকে তাদের আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩০০ কোটি টাকা। আসর বাতিল হলে এর কিছুই পাওয়া যাবে না। এ সপ্তাহে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের সঙ্গে এক জরুরী বৈঠক করেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ। সেখানে দর্শকশূন্য গ্যালারিতে অতি সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও আইপিএল আয়োজনের পক্ষে অনেকে। তবে ভিনদেশী ক্রিকেটারদের ছাড়া সেটি আদৌ সম্ভব কি না আছে সেই প্রশ্নও। এক ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তা ধরেই নিয়েছেন এবার আইপিএল হচ্ছে না, ‘এর ফলে আমাদের অন্তত ১৫-২০ কোটি টাকা লোকসান হবে। শুধু ক্রিকেটারদের বেতন এবং অন্যান্য কর্মীর বেতন বাবদই হবে এই লোকসন। কিন্তু আমরা বুঝতে পারছি মানুষের সুরক্ষার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু হতে পারে না। তাই বিসিসিআই‘র যে কোন সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার মানসিক প্রস্তুতি রয়েছে।’ পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ সেটি বোঝা যায় বোর্ডের সিদ্ধান্তে। মুম্বাইয়ে বিসিসিআইয়ের প্রধান কার্যালয় একেবারে বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে কাজ বন্ধ হবে না। ওয়ার্ক ফ্রম হোম, অর্থাৎ কর্মীদের বাড়িতে বসে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বোর্ডের এক কর্তা বলেন, ‘ফিজিক্যাল কন্ট্রাক্ট এড়াতে এমন অবস্থায় কোন ঝুঁকি নেয়া যায় না। অনলাইনের এ যুগে দৈনন্দিন কাজ বাড়িতে বসেই হতে পারে।’ বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত সর্বমহলে প্রশংশা কুড়িয়েছে। করোনার কারণে ইতোমধ্যে ভারত-দ. আফ্রিকা সিরিজ বাতিল করা হয়েছে। প্রথম ওয়ানডে বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ার পর বাকি দুই ম্যাচ না খেলেই দেশে ফিরে গেছে প্রোটিয়ারা। এমনকি ভারতের রাজ্যগুলোতে ঘরোয়া যত ক্রিকেট আছে তার সবগুলোই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। একাধিক রাজ্যে চলছে জরুরী অবস্থা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভিনদেশীদের সঙ্গে আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে। আর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তারকা ক্রিকেটাররাই আইপিএলের প্রাণ। এই অবস্থায় আসরটির ভাগ্য সত্যি অনিশ্চিত।
×