ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা আতঙ্কে স্বেচ্ছায় গৃহবন্দী সেরেনা

প্রকাশিত: ১২:০১, ১৮ মার্চ ২০২০

করোনা আতঙ্কে স্বেচ্ছায় গৃহবন্দী সেরেনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ করোনা আতঙ্কে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। ক্রীড়াঙ্গনও এর বাইরে নয়। বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়, কোচ এবং কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন করোনাভাইরাসে। অনেককেই রাখা হয়েছে কোয়ারেন্টাইনে। কেউ কেউ আবার স্বেচ্ছায় গৃহবন্দী থাকছেন। এই তালিকায় যোগ দিলেন আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি সেরেনা উইলিয়ামস। বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান তারকা সেরেনা উইলিয়ামস শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেই ভিডিও’র ক্যাপশনেই তিনি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। এ জন্য আগামী ছয় সপ্তাহ নির্জনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে এটা থেকে সবাইকে সাবধানে এবং নিরাপদে থাকারও পরামর্শ দেন গত দুই দশক ধরেই বিশ্ব টেনিসে দাপট দেখানো এই তারকা। এ প্রসঙ্গে সেরেনা উইলিয়ামস বলেন, ‘আগামী ছয় সপ্তাহ নির্জনে কাটাব। একজন স্ত্রী এবং মা হিসেবে এই সময়টাতে রান্না করব, ক্লিনিং কার্যক্রম করব, মেকআপ করব। অবশ্যই মাস্ক পরিধান করে। এই সময়টা কিভাবে কাটাব সেটাও সবাইকে জানাব...। এই সময়টাতে প্রত্যেকেই নিরাপদে থাকবেন। কেননা এটা ইতোমধ্যেই ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে।’ সেরেনা উইলিয়ামসের বর্তমান বয়স ৩৮। তারপরও টেনিস কোর্টে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে ২৩টি গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছেন আমেরিকান টেনিসের এই প্রতিভাবান খেলোয়াড়। কিন্তু নতুন বছরটা খুব একটা ভাল কাটেনি তার। নতুন মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেও নিষ্প্রভ ছিলেন তিনি। মেলবোর্নের রাউন্ড অব বত্রিশ থেকেই ছিটকে যান বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ে এই মুহূর্তে নয় নম্বরে থাকা সেরেনা উইলিয়ামস। সেরেনা সর্বশেষ মেজর শিরোপা জয়ের দেখা পেয়েছিলেন ২০১৭ সালে। নিয়তিই হয়তো ঠিক করে রেখেছিলেন এটা। সেরেনা উইলিয়ামসের ইতিহাস গড়ার মুহূর্তে পাশে থাকবেন তার বড় বোন ভেনাস উইলিয়ামস। প্রথম অভিনন্দনটা পাবেন এক বছরের বড় বোনের কাছ থেকেই। টেনিসের সর্বোচ্চ শিখরে ওঠায় যিনি তার সবচেয়ে বড় প্রেরণা। টেনিস কোর্টে যিনি তার সবচেয়ে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীও। তিন বছর আগে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে ভেনাস ছিলেন নেটের ওপাশেই। এর আগের আটটি গ্র্যান্ডস্লামের ফাইনালের মতোই প্রতিপক্ষ হয়ে। আগের ছয়বারের মতো তিন বছর আগে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালেও বড় বোনকে হারিয়ে দেন সেরেনা। সেই সঙ্গে জিতে নেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সপ্তম শিরোপা। সেই শিরোপা জিতেই রচিত হয় নতুন ইতিহাস। জার্মান কিংবদন্তি স্টেফিগ্রাফকে পেছনে ফেলে টেনিসের উন্মুক্ত যুগে সর্বোচ্চ ২৩টি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের রেকর্ড গড়েন সেরেনা উইলিয়ামস। তিন মৌসুম আগে সেরেনা বিয়ে করেছেন। হয়েছেন এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের মা। সাময়িক বিরতির পর আবার টেনিস কোর্টের লড়াইয়েও ফিরেছেন তিনি। কিন্তু মেজর কোন টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি সেরেনা উইলিয়ামস। আমেরিকান টেনিসের এই জীবন্ত কিংবদন্তির সামনে এখন শুধুই মার্গারেট কোর্ট। টেনিসে এ্যামেচার ও পেশাদার খেলোয়াড়দের পার্থক্য ঘুচে যায় ১৯৬৮ সালে। এরপরই শুরু উন্মুক্ত যুগের। সেরেনার চেয়ে বেশি গ্র্যান্ডস্লাম শিরোপা এখন শুধু দুই যুগেই খেলা অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি কোর্টেরই আছে। সেই কোর্টকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ এসেছিল সেরেনার সামনে। কিন্তু তীরে এসে তরী ডুবিয়েছেন আসছে সেপ্টেম্বরেই ৩৯ বছরে পা রাখতে যাওয়া এই টেনিস তারকা।
×