ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা কেড়ে নিল স্প্যানিশ কোচের প্রাণ

প্রকাশিত: ১১:৫৮, ১৮ মার্চ ২০২০

করোনা কেড়ে নিল স্প্যানিশ কোচের প্রাণ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাসের ভয়াভহ থাবায় ক্ষতবিক্ষত গোটা বিশ্ব। বর্তমানে এই থাবায় সবচেয়ে বেশি কাঁপছে ইতালি ও স্পেন। মারাত্মক এ সংক্রমণে স্পেনে এক কোচের মৃত্যু হয়েছে। ভয়াবহ বিপদে আছে স্প্যানিশ ক্লাব ভ্যালেন্সিয়া। ক্লাবটির ৩৫ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত। এমন অবস্থায় গোটা দুনিয়ায় খেলা বন্ধ হয়ে গেলেও ব্রাজিলে চলছে ফুটবল লীগ। যে কারণে চলছে নিন্দার ঝড়। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার (ফিফা) সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্টিনো এমন পরিস্থিতিতে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে মঙ্গলবার ইউরোপিয়ান ফুটবল সংস্থার (উয়েফা) জরুরী বৈঠকে জুন-জুলাইয়ে বসতে যাওয়া ইউরো ফুটবল এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। সমস্যা সমাধানে ৫৫ সদস্য সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনায় বসে উয়েফা। সেখানেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরের বছর টুর্নামেন্ট কিভাবে হবে সেটা পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে উয়েফা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে স্পেনে মৃত্যুবরণ করেছেন ফ্রান্সিসকো গার্সিয়া নামের এক ২১ বছর বয়সী ফুটবল কোচ। তিনি ২০১৬ সাল থেকে মালাগাভিত্তিক ফুটবল ক্লাব এ্যাটলেটিকো পোর্টাডা আল্টার জুনিয়র দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তরুণ কোচের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছে ক্লাবটি। নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুকে গার্সিয়ার ছবি পোস্ট করে স্প্যানিশ ভাষায় শোক প্রকাশ করেছে ক্লাবটি। শরীরে করোনাভাইরাসের বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়ার পর গার্সিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বয়স কম হওয়ায় তার দ্রুত সুস্থ হওয়ার কথায় ভেবেছিল সবাই। কিন্তু হাসপাতালে আনার পর জানা যায়, তিনি কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার পাশাপাশি লিউকোমিয়ায়ও আক্রান্ত। এরপর চিকিৎসকদের চেষ্টা সত্ত্বেও মৃত্যুর কাছে হার মানেন গার্সিয়া। স্প্যানিশ ফুটবল ক্লাব ভ্যালেন্সিয়ার খেলোয়াড় ও স্টাফদের প্রায় ৩৫ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে ঘরের মাঠে আটলান্টাকে আতিথ্য দিয়েছিল ভ্যালেন্সিয়া। রোমাঞ্চকর ম্যাচটি ৪-৩ গোলে জিতে দুই লেগ মিলিয়ে ৮-৪ গোলর ব্যবধানে এগিয়ে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখে আটলান্টা। কিন্তু ম্যাচটির কথা এখন সবাই প্রায় ভুলেই গেছে। কারণ এরপরই স্পেন আর ইতালির ফুটবল মহামারী করোনায় বন্ধ হয়ে গেছে। মূলত গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইতালির মিলানে আটলান্টার বিরুদ্ধে প্রথম লেগের ম্যাচটিকেই আক্রান্তের কারণ হিসেবে দেখছে ভ্যালেন্সিয়া। কারণ ওই ম্যাচের কয়েকদিন পরই ওই অঞ্চলকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল ইতালিয়ান প্রশাসন। গত রবিবার প্রথম দলের খেলোয়াড় এবং স্টাফদের মধ্যে ৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছিল। এখন সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ জনে। ভ্যালেন্সিয়ার ইজিকুয়েল গ্যারে লা লিগার খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। এরপর তার সতীর্থ এলিয়াকুইম মাঙ্গালাও তালিকায় যুক্ত হন। আগের পাঁচজনের সঙ্গে নতুন করে আরও চারজনের আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে ভ্যালেন্সিয়া। তবে ক্লাবটির তরফ থেকে আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থা বিপদমুক্ত বলে জানানো হয়েছে। তবে ক্লাবের সব খেলোয়াড় ও স্টাফদের আপাতত কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এদিকে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লীগ স্থগিত হলেও চালু রয়েছে ব্রাজিলের ফুটবল। যে কারণে নিন্দার ঝড় চলছে। তবে আতঙ্কের সময় মাঠে নামতে হওয়ায় খুশি হতে পারেনি ব্রাজিলের ক্লাব গ্রেমিও’র খেলোয়াড়রা। গাউচো স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের মাঠ এ্যারেনা দো গ্রেমিও’তে সাও লুইজের মুখোমুখি হয় গ্রেমিও। ওই দর্শকবিহীন-রুদ্ধদ্বার ম্যাচে শুরুতে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও ৩-২ ব্যবধানে জিতেছে তারা। তবে তার আগে করোনাভাইরাসের দিনগুলোতে খেলতে হওয়ায় গ্রেমিও’র খেলোয়াড়রা অভিনব প্রতিবাদ জানায় টুর্নামেন্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি। গাউচো স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপের গত আসরের চ্যাম্পিয়ন দলের ফুটবলাররা মাঠে নামেন সাদা মাস্ক পরে। মাঠে নামা থেকে শুরু দলীয় ফটোসেশন এবং সাইড-বেঞ্চেও মাস্ক পরা ছিল গ্রেমিও’র ফুটবলার ও ক্লাব কর্মকর্তাদের।
×