ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফেসবুকে গুজব ছড়ানোয় গাজীপুরে যুবক গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১১:০২, ১৮ মার্চ ২০২০

ফেসবুকে গুজব ছড়ানোয় গাজীপুরে যুবক গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরের শ্রীপুরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকরা হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে ফেসবুকে গুজব ও আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগে মঙ্গলবার এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতের নাম আনোয়ার হোসেন (৩৫), সে স্থানীয় ভাংনাহাটি এলাকার সুলতান উদ্দিনের ছেলে। ফেসবুকে সে নিজেকে শ্রীপুর নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক বলে পরিচয় দেয়। শ্রীপুর থানার ওসি মোঃ লিয়াকত আলী জানান, যুবকটি তার ফেসবুক আইডিতে করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ও আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশে লেখা একটি পোস্ট দেয়। এতে উল্লেখ করা হয়- গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ট্রেনিং শেষে বাড়ি ফিরেছেন। তিনি ট্রেনিং করার সময় বিদেশী পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই শিক্ষিকা শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে করোনার চিকিৎসা সেবা নিতে গেলে চিকিৎসকরা ছেড়ে পালিয়ে যান। করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর তিনিও হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান। আরও কয়েকজনের মধ্যে এমন উপসর্গ দেখা যায়। তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জানা নেই। আপনি আমি আমরা কেউ এখন নিরাপদ নই। তবে শ্রীপুর হাসপাতালে সেদিন ওই শিক্ষিকা চিকিৎসা না পেয়ে নিজে পালিয়ে গিয়ে সন্তানদের নিয়ে নিজ ঘরের দরজা বন্ধ করে রেখেছেন। আর এলাকাবাসী বাড়ির নির্দিষ্ট দূরত্বে পাহারা বসিয়ে আল্লাহ আল্লাহ করছেন। তিনি এখন রীতিমতো অবরুদ্ধ। ওই শিক্ষিকা এখন আতঙ্কের নাম। জানিনা তার ও তার পরিবারের সদস্যদের ভাগ্যে কি দুর্ভোগ আছে? ওসি আরও জানান, ফেসবুকে করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ও আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগে মঙ্গলবার আনোয়ারকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রণয় ভূষণ দাস জানান, শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই ধরনের কোন রোগী আসেনি এবং হাসপাতালে কোন ডাক্তারও অনুপস্থিত ছিলেন না। গুজবের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশকে অবগত করা হলে পুলিশ ওই যুবককে আটক করে। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শামছুল আরেফীন জানান, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রীপুর হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোন রোগী যায়নি। এক যুবককে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম জানান, গাজীপুরের ‘মেঘডুবি মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র’ হাসপাতালে ইতালি ফেরত অবশিষ্ট ৪০ জন তৃতীয় দিনেও (মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত) কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। অপর ৮জনের দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যাওয়ায় তাদের অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এ হাসপাতাল থেকে ঢাকার উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গাজীপুর সিভিল সার্জন মোঃ খায়রুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলায় একজন প্রধান শিক্ষিকাসহ আরও ১০জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩জন গাজীপুর জেলার সদর উপজেলায়, কাপাসিয়ায় ৩জন, কালীগঞ্জে ২জন এবং শ্রীপুরে ২জন রয়েছেন। তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
×