ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শাইনপুকুরের কাছে হেরে গেল মোহামেডান

প্রকাশিত: ১২:০৩, ১৭ মার্চ ২০২০

শাইনপুকুরের কাছে হেরে গেল মোহামেডান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের (ডিপিএল) উদ্বোধনী দিনে বিশাল জয়ে শুরু করেছিল আবাহনী লিমিটেড। কিন্তু সোমবার প্রথম রাউন্ডের দ্বিতীয় দিনে হারে শুরু করেছে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের কাছে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে তারা হেরেছে ৫ উইকেটে। যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের দুই তারকা ব্যাটসম্যান তানজিদ হাসান তামিম ও তৌহিদ হৃদয়ের ফিফটিতে মোহামেডানের করা ২৫৭ রান শাইনপুকুর ৪৯.৩ ওভারে টপকে যায় ৫ উইকেটে ২৫৮ রান তুলে। এছাড়া মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তামিম ইকবালের প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৯ রানে হারিয়েছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে। অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান ৪৯ বলে হার না মানা ৫৬ রানের ইনিংস খেলার পরও প্রাইম ব্যাংকের করা ৬ উইকেটে ২৫১ রান টপকাতে পারেনি গাজী। তারা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪২ রান তোলে। বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে বড় জয় পেয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। দুর্বলতর খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতিকে তারা ৫৫ রানে হারিয়ে দেয়। প্রাইম ব্যাংক-গাজী গ্রুপ ম্যাচ (মিরপুর) ॥ এই ম্যাচে বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়ক হওয়া তামিমের দিকে নজর ছিল সবার। কিন্তু তিনি প্রাইম ব্যাংকের অধিনায়ক হিসেবে ব্যাট হাতে নেমে ব্যর্থ হয়েছেন। সাজঘরে ফিরেছেন ৪৭ বল খেলে মাত্র ১৯ রান করে। এর আগেই ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সাজঘরে ফিরে গেছেন আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয় (০)। রকিবুল হাসান (৫), মোহাম্মদ মিঠুন (২৭) ও অলক কাপালি (১৭) দ্রুতই সাজঘরে ফিরলে বিপদে পড়েছিল প্রাইম ব্যাংক। একপ্রান্তে দুর্দান্ত ব্যাট করা রনি তালুকদারও ১০৪ বলে ৭ চার, ২ ছক্কায় ৭৯ রানে সাজঘরে ফিরলে বিপদেই পড়ে প্রাইম ব্যাংক। তবে সপ্তম উইকেটে নাহিদুল ইসলাম ও নাঈম হাসান বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে দলকে সম্মানজনক পুঁজি পাইয়ে দেন। তারা মাত্র ৬৫ বলে ৯৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়লে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৫১ রান তোলে প্রাইম ব্যাংক। মাহমুদুল্লাহ ৩টি ও নাসুম আহমেদ ২টি উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে দলীয় ৫ রানে প্রথম উইকেট হারালেও দ্বিতীয় উইকেটে ৪৯, তৃতীয় উইকেটে ৫১ রান তুলে ভালভাবেই এগিয়ে যায় গাজী গ্রুপ। সৌম্য সরকার ৫১ বলে ৫ চার, ১ ছক্কায় ৪৯ রানে সাজঘরে ফেরেন। কিন্তু মাহমুদুল্লাহ ৬০ বলে ৩২ রানে সাজঘরে ফিরলে ধস নামে তাদের ইনিংসে। তবে মেহেদি একাই জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখেন। তার সঙ্গে কিছুক্ষণ লড়েছেন অনুর্ধ-১৯ দলের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর আলী। কিন্তু তিনি ২৮ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ৩১ রানে রানআউট হলে একাই চেষ্টা চালিয়েছেন মেহেদি। তিনি ৪৯ বলে ৬ চার, ৩ ছক্কায় ৫৬ রানে অপরাজিত থাকলেও গাজীর ইনিংস নির্ধারিত ৫০ ওভারে শেষ হয়েছে ৯ উইকেটে ২৪২ রানে। ৯ রানের জয় পায় প্রাইম ব্যাংক। স্কোর ॥ প্রাইম ব্যাংক ইনিংসÑ ২৫১/৬; ৫০ ওভার (রনি ৭৯, নাহিদুল ৫৩*, নাঈম হাসান ৪৬*; মাহমুদুল্লাহ ৩/৫৩, নাসুম ২/৪০)। গাজী গ্রুপ ইনিংসÑ ২৪২/৯; ৫০ ওভার (মেহেদি ৫৬*, সৌম্য ৪৯, মাহমুদুল্লাহ ৩২, আকবর ৩১; নাহিদুল ২/৩০, কাপালি ২/৩২, মুস্তাফিজ ২/৪২)। ফল ॥ প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৯ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ নাহিদুল ইসলাম (প্রাইম ব্যাংক)। মোহামেডান-শাইনপুকুর ম্যাচ (ফতুল্লা) ॥ টস জিতে মোহামেডান ব্যাটিংয়ে নেমেই উদ্বোধনী জুটিতে ৬১ ও দ্বিতীয় উইকেটে ৫৩ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায়। কিন্তু শাইনপুকুর বোলারদের দারুণ বোলিংয়ে বেশি বড় হয়নি তাদের ইনিংসটি। ইরফান শুক্কুর ৪০ বলে ২ চার, ৪ ছক্কায় ৪৬ ও মাহমুদুল হাসান ৬৩ বলে ৫ চার, ১ ছক্কায় ৫৮ রানের দুটি বড় ইনিংস খেলেছেন। ৮ উইকেটে ২৫৭ রানের পুঁজি পায় মোহামেডান। মোহর শেখ ও তানভীর ইসলাম ২টি করে উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে তানজিদ হাসান তামিমের দারুণ ব্যাটিংয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৫৩ ও দ্বিতীয় উইকেটে ৫২ রানের জুটি পায় শাইনপুকুর। যুব বিশ্বকাপজয়ী তানজিদ ৭৭ বলে ৩ চার, ২ ছক্কায় ৫৯ রানে সাজঘরে ফেরেন। এরপর রবিউল ইসলামের ৫১ বলে ৬ চারে ৫৪, হৃদয়ের ৭৯ বলে ১ চারে ৫০ ও মহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ৪৭ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় করা ৪৯ রানের সুবাদে জয়ের কাছে চলে যায় শাইনপুকুর। শেষ পর্যন্ত ৩ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটে ২৫৮ রান তুলে ৫ উইকেটের জয় পায় শাইনপুকুর। মোহামেডান ইনিংসÑ ২৫৭/৮; ৫০ ওভার (মাহমুদুল ৫৮, শুক্কুর ৪৬, মজিদ ৪২, শুভাগত ৩১; তানভির ২/৪৪, মোহর ২/৪৬)। শাইনপুকুর ইনিংসÑ ২৫৮/৫; ৪৯.৩ ওভার (তানজিদ ৫৯, রবিউল ৫৪*, হৃদয় ৫০, মহিদুল ৪৯; মাহমুদুল ১/২০, রাহী ১/৪৩, আবু হায়দার ১/৪৩)। ফল ॥ শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ তানজিদ হাসান তামিম (শাইনপুুকুর)। শেখ জামাল-খেলাঘর ম্যাচ (বিকেএসপি-৪) ॥ মোহাম্মদ আশরাফুল (৩) দ্রুতই সাজঘরে ফিরে গেলেও সৈকত আলী ৭৯ বলে ১০ চার, ২ ছক্কায় ৮৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস উপহার দেন। পরে নাসির হোসেন ৫৭ বলে ২ চার, ৪ ছক্কায় ৫৬ ও নুরুল হাসান সোহান ৬৭ বলে ৫ চার, ১ ছক্কায় ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন। তবে শেষদিকের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ৩০০ পেরোতে পারেনি শেখ জামাল। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৭৬ রান তোলে তারা। ইরফান হোসেন ৪, খালেদ আহমেদ ও মাসুম খান ২টি করে উইকেট নেন। জবাবে ৩৫ রানের উদ্বোধনী জুটি হলেও পরবর্তীতে ধস নামে খেলাঘরের ইনিংসে। অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম অমি শুধু ৭৮ বলে ৫ চারে ৫১ রানের একটি ইনিংস খেলতে পেরেছেন। এছাড়া মাসুম শেষদিকে ৪০ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় ৩২ রান করেন। কিন্তু নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২২১ রানের বেশি করতে পারেনি তারা। ৫৫ রানের এ বড় জয়ে শেখ জামালের দুই স্পিনার ইলিয়াস সানি ও সোহরাওয়ার্দী শুভ দারুণ ভূমিকা রেখেছেন দুটি করে উইকেট নিয়ে। শেখ জামাল ইনিংস- ২৭৬/৯; ৫০ ওভার (সৈকত ৮৩, সোহান ৫৮, নাসির ৫৬; ইরফান ৪/৪৩, খালেদ ২/৪৮, মাসুম ২/৬৪)। খেলাঘর ইনিংস- ২২১/৯; ৫০ ওভার (জহুরুল ৫১, মাসুম ৩২, ইমতিয়াজ ২৯; সোহরাওয়ার্দী ২/২৬, ইলিয়াস ২/৩৫, সাকিল ২/৩৬)। ফল ॥ শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব ৫৫ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ সৈকত আলী (শেখ জামাল)।
×