ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নৌকা ও ধানের শীষের প্রচারে সরব পাড়া-মহল্লা

প্রকাশিত: ১০:১৩, ১৭ মার্চ ২০২০

নৌকা ও ধানের শীষের প্রচারে সরব পাড়া-মহল্লা

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে পাড়া-মহল্লায় নির্ঘুম গণসংযোগে মেয়র প্রার্থীরা। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন পরিকল্পিত বন্দরনগরী গড়ার। অলি-গলি মুখর হচ্ছে নৌকা ও ধানের শীষসহ বিভিন্ন প্রতীকের স্লোগানে। পাশাপাশি আসছে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগও। এদিকে, মূল আকর্ষণ মেয়র পদ হলেও প্রচারে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তাদের কর্মী-সমর্থকরা প্রার্থীর পক্ষে যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এই কাউন্সিলর প্রার্থীদেরই বিবেচনা করা হচ্ছে কেন্দ্রে ভোটার বৃদ্ধির নিয়ামক হিসেবে। আওয়ামী প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী সোমবার গণসংযোগ চালান পাহাড়তলী, লালখান বাজার এবং সংলগ্ন এলাকায়। তার সঙ্গে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বিপুল উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। নৌকা প্রতীকের এই প্রার্থী এই পিকআপে চড়ে হাত উঁচিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কুশলবিনিময় ও ভোট প্রার্থনা করেন। একাধিক স্থানে পথসভায়ও বক্তৃতা করেন। বক্তব্যে তিনি বর্তমান সরকারের আমলে চট্টগ্রামের উন্নয়নে গৃহীত ও চলমান প্রকল্পগুলোর কথা তুলে ধরার পাশাপাশি ধারাবাহিক উন্নয়নের স্বার্থে আওয়ামী লীগ বিজয়ী করার আহ্বান জানান। নৌকাকে উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ নৌকা স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, দেশকে উন্নয়ন দিচ্ছে। জনগণ একটি পরিকল্পিত নগরী গড়ার প্রত্যাশায় আবারও নৌকাকে জয়ী করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। প্রচারে বাধা দেয়ার অভিযোগ বিএনপির ॥ ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ডাঃ শাহাদাত হোসেনের প্রচারে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। সোমবার রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামানের কাছে লিখিতভাবে এ অভিযোগ করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, নগরের নাসিরাবাদ ও পলিটেকনিক এলাকায় গত কয়েকদিনে পোস্টার লাগাতে গেলে সন্ত্রাসীরা বাধা দিয়েছে। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে, কর্মীদের মারধর করে প্রচারণায় ব্যবহৃত মাইক ভেঙ্গে ফেলেছে। এছাড়া পুলিশও বিএনপির পোস্টার লাগাতে বাঁধা দিচ্ছে। নোমান বলেন, গত ১৫ মার্চ পলিটেকনিক এলাকায় ডাঃ শাহাদাতের প্রচারে ব্যবহৃত মাইক ভাংচুর করা হয়। এতে বিএনপির এক কর্মী আহত হন। এছাড়া ওইদিন রাত একটার দিকে বক্সিরহাট রাজাখালী এলাকায় ধানের শীষের পোস্টার ছেঁড়া হয়েছে। তখন পোস্টার লাগাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে বিএনপি’র কর্মীরা। পূর্ব বাকলিয়া, নতুন ব্রিজসহ আরও কিছু এলাকায় সন্ত্রাসীরা বিএনপির কর্মীদের বাধা দিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক এরশাদ উল্লাহ, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দীন, বিএনপি নেতা এম এ হাশেম রাজু প্রমুখ। প্রচারে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা ॥ চসিক নির্বাচনে মূল আকর্ষণ মেয়র পদ হলেও উৎসব আমেজ মূলত কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্যই। প্রতিটি অলি-গলি চষে বেড়াচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকরা। প্রার্থী এবং ভোটাররা ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত হওয়ায় এই পদের প্রচার অধিকতর প্রাণবন্ত। প্রতিটি ওয়ার্ডে অসংখ্য গ্রুপে বিভক্ত হয়ে সমর্থকরা যাচ্ছেন ভোটারের কাছে। চলছে পাল্টাপাল্টি স্লোগান। এর মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। তবে খুব বেশি অভিযোগ আসেনি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে। চসিক নির্বাচনে মেয়রের পাশাপাশি কাউন্সিলর পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছেন দলীয় মনোনয়নের ভিত্তিতে। তবে এ পদে দলীয় প্রতীক ব্যবহারের সুযোগ নেই। ফলে বিদ্রোহী প্রার্থীও রয়েছে। বিএনপিতে বিদ্রোহ না থাকলেও আওয়ামী লীগে প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক করে প্রার্থী রয়েছেন। তাদের সমর্থনে প্রচারও চলছে বেশ জোরেশোরে। এদিকে, কোন্দল মেটানো সম্ভব না হলেও প্রতি ওয়ার্ডে একাধিক করে প্রার্থী থাকার সুফল মেয়র পদে পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই। তাদের মতে, মূলত কেন্দ্রে ভোটার নিয়ে আসেন কাউন্সিলর প্রার্থীরাই। কাউন্সিলর নিয়ে তাদের মধ্যে যত বিরোধই থাকুক না কেন, ভোট দিতে এসে নিশ্চয়ই মেয়র পদে ভোট দিয়ে যাবেন। পোস্টারবিহীন নির্বাচনে এক কাউন্সিলর প্রার্থী ॥ চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে পোস্টারবিহীন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে আলোচিত হয়েছেন ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমন। তিনি ওই ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ঠেলাগাড়ি প্রতীকে।
×