ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুজিব শতবর্ষে প্রত্যেক গৃহহীন বস্তিবাসীর গৃহ বরাদ্দে একটি পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৮:০৯, ১৭ মার্চ ২০২০

  মুজিব শতবর্ষে প্রত্যেক গৃহহীন বস্তিবাসীর গৃহ বরাদ্দে একটি পরামর্শ

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রত্যেক গৃহহীনের জন্য গৃহ বরাদ্দের সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিকে দেশবাসীসহ আপামর জনগণ স্বাগত জানিয়েছে। পাশাপাশি মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে এই উদ্যোগটি গৃহহীনদের মাঝে একটি গৃহের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। এক জরিপে প্রতীয়মান হয় যে, ঢাকা শহরে যতগুলো বস্তি রয়েছে তাতে প্রায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার পরিবার অতি মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রতিনিয়তই কোন না কোন বস্তিতে আগুন লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওই দরিদ্র ও অসহায় পরিবারগুলো। এদের স্থায়ী ব্যবস্থা হলে তাদের সারা জীবনের বাসস্থানের একটি ব্যবস্থা হবে। প্রত্যেক পরিবারকে ৫০০ বর্গফুটের একটি করে ফ্ল্যাট করে দিলে গধীরসঁস প্রতি ফ্ল্যাটে ৮ লাখ টাকা খরচ হবে। আমার পরামর্শ, ঢাকার অদূরে ২৫ বিঘা জমির মধ্যে কয়েকটি ২৫ তলা বিল্ডিং করতে হবে, যাতে করে প্রায় ১০ হাজার পরিবারের বাসস্থানের ব্যবস্থা হবে। প্রতি ফ্ল্যাট ৮ লাখ টাকা হিসেবে ১০ হাজার ফ্ল্যাটের সম্ভাব্য ব্যয় ৮০০ কোটি টাকা হতে পারে। ঢাকা শহরে করাইল, মিরপুর, কমলাপুর বস্তিসহ আনাচে-কানাচে ছোটখাটো সকল বস্তির সবার একটি স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা যাবে। এতে করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নও হবে। ঢাকা সিটিতে যানজট, মাদকদ্রব্যসেবীসহ অসামাজিক কার্যকলাপ যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে ওই সমস্ত বস্তিবাসীর একটি প্রভাব রয়েছে। একটি স্থায়ী ব্যবস্থা হলে যানজট, মাদকদ্রব্যসেবীদের অবাধ চলাফেরা ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ হবে। এতে করে ঢাকা শহরের মানুষ নিরাপদ- নির্বিঘ্নে বসবাস ও চলাফেরা করতে পারবে। তাতে করে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের সুনাম অক্ষুণ্ণ থাকবে। মানবিক কারণে দেশ ও জাতির স্বার্থে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করলে প্রধানমন্ত্রী জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পরও বস্তির জনগণ আপনাকে স্মরণ করবে। বর্তমানে আপনি জনস্বার্থে দেশে অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন এবং কিছু প্রকল্প শেষ হয়েছে। তাই গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণের প্রকল্পটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এই প্রকল্পে টাকার উৎস হিসেবে বিদেশী দাতা সংস্থাগুলোর অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত আছে। যেমন- সৌদি আরব, জাপান, মালয়েশিয়া, কাতার, দুবাইসহ মুসলিম দেশগুলো। তাছাড়া মানবিক কারণে আরও অনেক দেশই সাহায্য করবে। প্রধানমন্ত্রী বহুবারই বলেছেন গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দেবেন। কিছু গৃহ নির্মাণ করেছেন, যা বিচ্ছিন্নভাবে আছে। একটি সামাজিক ব্যবস্থার উন্নতির জন্য এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। বিদেশী বহু কোম্পানি আছে যারা মানবতার খাতিরে সাহায্য হিসেবে আর্থিক অনুদান দেবে। তবে আমাদের পরিকল্পনার প্রতি সদিচ্ছা থাকতে হবে। আমি অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি, ঢাকা শহরের বস্তির কারণে বহু ছেলেমেয়ে নষ্ট হচ্ছে এবং বিপথগামী হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। সরকার যদি এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে চায় তা হলে চায়নিজ ও জাপানিজরা ১ বছরের মধ্যে এই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করে দিতে সক্ষম হবে। বাকিটা সরকারের সিদ্ধান্ত ও সহযোগিতা। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ রইল, মানবিক কারণে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সম্মতি জ্ঞাপন করবেন। লেখক : প্রাক্তন সংসদ সদস্য
×