ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গরমে করোনার প্রাদুর্ভাব কমে!

প্রকাশিত: ০৭:৪৬, ১৭ মার্চ ২০২০

গরমে করোনার প্রাদুর্ভাব কমে!

চলতি বছর বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়া শুরু হওয়ায় এটিই এখন বিশ্বের সকল মানুষের দুশ্চিন্তার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাণঘাতী ভাইরাসটি ফ্লুর মতো হলেও এর সঙ্গে ফ্লুর বেশ পার্থক্য রয়েছে। ফ্লু সহজেই ছড়িয়ে পড়ে মানুষের প্রাণের জন্য হুমকি হয়ে ওঠে না, তবে এটি অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে মানুষের শরীরকে আক্রান্ত করে ফেলে। সিএনএন। উষ্ণ আবহাওয়ায় করোনার প্রার্দুভাব কমে যায়। আসলে আমরা এখন জানি যে, সে ধারণা ঠিক নয়, ভুল। করোনাভাইরাস উষ্ণ আবহাওয়ায়ও ছড়াতে পারে। বর্তমান গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, দেখা গেছে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এ এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে আক্রান্ত ১-২ শতাংশ করোনা রোগীকে মেরে ফেলেছে, সে তুলনায় শীলকালীন ফ্লুতে ০.১ শতাংশ মানুষ মারা গেছে। এদিকে করোনাও ফ্লুর মতো ছোঁয়াচে রোগ হলেও করোনা ফ্লুর চেয়েও অনেক গুণ ভয়াবহ। বিশেষ করে, কোভিড-১৯ এর জন্য কোন ধরনের ভ্যাকসিন ওষুধ আবিষ্কার না হওয়ায় এর ভয়াবহতা দিন দিন বেড়ে চলছে। অন্যদিকে একটি অঞ্চলের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তারা গবেষণায় দেখেছেন, করোনাভাইরাসটি ফ্লুর মতো আচরণ করছে। গত সপ্তাহে নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মার্কিন চিকিৎসা বিষয়ক গবেষক নেলসন মিশেল বলেন, ‘এটি হলো শ্বাসপ্রশ্বাস সংক্রান্ত ভাইরাস এবং শীতকালে এরা প্রায় সব সময়ই আমাদের সমস্যার মধ্যে ফেলে দেয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সকলে ঘরের ভেতরে আবদ্ধ আছি। জানালাগুলো বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সুতরাং আমরা এটিকে ইনফ্লুয়েঞ্জা অথবা ফ্লু ঋতু বলতে পারি।’ ইনফ্লুয়েঞ্জা শীতে বাড়ে এবং গ্রীষ্মে কমে যায়। যার কারণে শীত হলো ফ্লুর ঋতু, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের জন্য। তবে শীতে আচরণগত ভিন্নতাও প্রভাব ফেলতে পারে। মিশেল জানান, করোনাভাইরাস ফ্লুর মতো আচরণ করতে পারে এবং উষ্ণ আবহাওয়ায় কম সঙ্কট তৈরি করতে পারে। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে জানান, শীত এলে এর আচরণ আবারও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। এদিকে আশা জাগানিয়া তথ্য হলো, করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশের সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে তুলনামুলক উষ্ণ আবহাওয়ায় রোগীরা থাকলে তারা অন্তত শীতের সময়ের চেয়ে কম ভোগান্তিতে পড়বে। এছাড়া এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে সেটি সংগ্রহ করে নিতে পারলে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। মিশেল সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘এ কারণে এটি বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, এখন আমরা কিসের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি।’ তবে ভাইরাসটি যদি ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো আচরণ না করে, তখন কি হবে? আর ভাইরাসটির কারণে এ বছর যদি সংক্রমণের হার বেড়ে যায়, তাহলে কি হবে? সিঙ্গাপুরে এখন পর্যন্ত অন্তত এক শ’টি করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মতো দেশগুলোতে বর্তমানে শীতকাল চলছে। ওই দেশগুলোতেও ইতোমধ্যে কয়েক ডজন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সিরেকাস ইউনিভার্সিটির জনস্বাস্থ্য বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ব্রিটানি কেমুশ বলেন, ফ্লু ও কোভিড-১৯ শীতকালীন রোগ। তবে আমরা জানি না, অন্য ঋতুতে এর কেমন প্রভাব পড়তে পারে।’ তিনি বলেন, ‘এই ভাইরাস বিষয়ে আমরা এখনও তেমন কিছু জানি না। গ্রীষ্মে যদি এর প্রাদুর্ভাব কমতে থাকে, তাহলে পরবর্তী শীতের মাসের জন্য প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব হবে।’
×