ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি খোলা থাকায় বাড়ছে অসন্তোষ

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ১৬ মার্চ ২০২০

 স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি খোলা থাকায় বাড়ছে অসন্তোষ

বিভাষ বাড়ৈ ॥ করোনাভাইরাসের কবল থেকে জনগণকে রক্ষায় বিশ্বের অন্তত ৬১ দেশ এমনকি পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গেও স্কুল কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে করোনাভাইরাস শনাক্তের প্রেক্ষাপটে দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের অব্যাহত দাবির পরও স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখার ঘটনায় অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপে প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। করোনা থেকে রক্ষায় জনসমাগম এড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সর্বশেষ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় বিশ^বিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ছে আন্দোলন। মন্ত্রণালয়ের কর্মকা-কে জনবিরোধী উল্লেখ অনেক প্রতিষ্ঠানে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অনশন, স্মারকলিপি ও প্রতিবাদ সমাবেশে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ চেয়ে রিট হয়েছে হাইকোর্টে। রবিবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ডাকেই অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীরা অনশন, স্মারকলিপি দিয়ে অবিলম্বে প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। বহু বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে অন্যদেরও প্রতিবাদমুখর হওয়ার ডাক দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের দাবির পর বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ হয়ে গেছে ক্লাস পরীক্ষা। রাজধানীর অন্যতম ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল স্কলাস্টিকা বন্ধ ঘোষণা ছাড়াও বহু প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী অভিভাবকরা অবিলম্বে বন্ধের দাবি তুলেছেন। ঘোষণা ছাড়াই প্রতিষ্ঠানে সন্তানদের পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন অধিকাংশ অভিভাবক। প্রাথমিকের শিশুদের কথা চিন্তা করেও কেন প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নিচ্ছেনা তা নিয়েও ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা অথবা গ্রীষ্মকালীন ছুটি নির্ধারিত সময়ের আগেই কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। এমন অবস্থার পরেও কেন শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বসে আছে সেই প্রশ্নই এখন সামনে চলে এসেছে। ইতোমধ্যেই গোটা বিশ্বে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়া নোভেল করোনাভাইরাসে ( কোভিড-১৯) শিক্ষাব্যবস্থা বড় হুমকি হয়ে সামনে চলে এসেছে। ইতোমধ্যে ৬৩টি দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয়ভাবে বন্ধ করা হয়েছে ৪০টি দেশে। আঞ্চলিকভাবে আংশিক বন্ধ করা হয়েছে ২৩টি দেশে। এসব দেশে ৬৬ কোটি ৩৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯৪৭ জন শিক্ষার্থী ঝুঁকিতে রয়েছে। সব মিলিয়ে পুরোপুরি ও আংশিক বন্ধ হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১০০ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। ঝুঁকি এড়াতে সর্বশেষ পার্শ্ববর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে শুরু থেকেই যেন উল্টোপথে হাঁটছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশে ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের মতো পরিস্থিতি হয়নি’ গত বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির এমন বক্তব্যের পর রবিবার পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের অবস্থান ছিল একই। একই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য হচ্ছে, বন্ধের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের দিকে তারা তাকিয়ে আছেন। তবে আগের দুদিনের মতো রবিবারও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে কি না সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে শুধু পরামর্শ দিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জনসমাগম এড়ানোর তাগিদ দিয়ে বলছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে কি না সেই সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। এরপর শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি আবারও বলেছেন, স্কুল বন্ধের মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। কেবল স্থানীয় পর্যায়ে করোনা ছড়িয়ে পড়লেই স্কুল বন্ধের কথা ভাববে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রাজধানীর ভাসানী স্টেডিয়ামে জাতীয় স্কুল হকি প্রতিযোগিতার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি কখনও এমন অবস্থা দেখা যায় স্থানীয় পর্যায়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে যাচ্ছে তখন আমরা প্রয়োজন বোধে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেব। এখন পর্যন্ত স্কুল বন্ধ করার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। প্রয়োজন হলে অবশ্যই আমরা স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেব। এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপে অসন্তুষ্ট হয়ে রবিবার সকালেই সকল স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ চেয়ে হাইকোর্ট রিট করা হয়েছে। এ রিটে দেশের স্থল-নৌ এবং বিমানবন্দরও বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ এ রিট করেন। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, শিক্ষা সচিব, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে। তিনি জানান, দেশে ৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় যদি শিক্ষার্থীরা করোনায় আক্রান্ত হয়, তা হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাই স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবিতে রিট করা হয়েছে। আর দেশের সীমান্ত এলাকা বিশেষ করে স্থল, নৌ এবং বিমানবন্দর দিয়ে মানুষের যাতায়াত অব্যাহত রয়েছে, তাই এসব বন্দরও বন্ধের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। আইনজীবী জানান, সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মোঃ মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানির জন্য রিটটি উপস্থাপন করা হতে পারে। আবেদনে দেশের সব বন্দরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত এবং বন্দরের প্রবেশমুখে মনিটরিংয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না এবং করোনাভাইরাস থেকে জনগণকে রক্ষায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এদিকে জনকণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা অথবা গ্রীষ্মকালীন ছুটি নির্ধারিত সময়ের আগেই কার্যকর করার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। প্রায় একই দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। কর্তৃপক্ষের কোন সিদ্ধান্ত না দিলেও শিক্ষা কার্যক্রমে উপস্থিত হননি প্রায় অর্ধশত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ জরুরী বৈঠক ডেকেছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। রবিবার বিকেলে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাস ইতোমধ্যে বিশ্বের ১৫০টি দেশে বিস্তার লাভ করেছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সতর্কতার অংশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনসমাগম, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ ঘোষণা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে প্রায় আড়াই হাজার মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামানের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছে ডাকসু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নেতারা উপাচার্য বরাবর এ স্মারকলিপি প্রদান করে। স্মারকলিপিতে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্পর্কিত পাঁচ দফা রাখে ডাকসু নেতারা। সেগুলো হলো: বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক বন্ধ ঘোষণা বা গ্রীষ্মকালীন ছুটি এগিয়ে আনা; বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যে কোন ধরনের সভা-সমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করা; আবাসিক হলগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ ও সাবানের ব্যবস্থা করা; অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আপদকালীন মেডিক্যাল ইউনিট স্থাপন এবং বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গণজমায়েত ও গণপরিবহন নিয়ন্ত্রণ করা। বিশ্ববিদ্যালয়েল ক্লাস পরীক্ষা ও আবাসিক হলগুলো সাময়িকভাবে বন্ধের দাবিতে চার শিক্ষার্থী অনশন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে সন্ধ্যায় স্থগিত করা হয়েছে। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাবি প্রশাসন করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য কোন উদ্যোগ না নিলেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। অর্ধশত বিভাগের শিক্ষার্থীরা সকলের সম্মতির ভিত্তিতে শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে একাডেমিক কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখার পক্ষে হলেও প্রশাসনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরাও শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিতের দাবিতে মানববন্ধন করেছে। রাজু ভাস্কর্যের সামনে তারা এ মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন শেষে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। করোনার প্রাদুর্ভাব স্বাভাবিক অবস্থায় না আসা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। রবিবার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের ১১২জন ক্লাস প্রতিনিধি একত্রিত হয়ে এক ঘণ্টা আলোচনার পর তারা এই ঘোষণা দেন। নিজেরাই ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে তারা বলেছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচী চলবে। এর আগে শনিবার ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের শিক্ষার্থীদের ঘোষণায় পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছে বুয়েট। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই বিভাগের প্রধানের মাধ্যমে লিখিত দাবি জানিয়ে বর্জন করছেন শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদের সভাপতিত্বে এক সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের সভা-সমাবেশে আপাতত নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। বিদেশ থেকে আগত কোন শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উন্মুক্তভাবে ঘোরাফেরা না করে তাকে নিজ বাসায় কোয়ারেন্টাইন থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়। এছাড়া দেশ-বিদেশের তবলীগ দল বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদে অবস্থান না করার বিষয়টি তদারকি করার জন্য সংশ্লিষ্ট মসজিদ কমিটিকে অনুরোধ করা হয়। করোনাভাইরাস আতঙ্কে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অনুষদের শিক্ষার্থীরা। অনুষদীয় ছাত্র সমিতির নেতৃবৃন্দ গণস্বাক্ষর নিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছেন। তবে সরকারের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার কোন সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন উপাচার্য লুৎফুল হাসান। প্রাণঘাতী মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) বন্ধের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের পাশে মৌন অবস্থান কর্মসূচিতে তারা এ দাবি জানান। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘করোনা মোকাবেলায় রাবির সক্ষমতা ০ শতাংশ’, ‘ক্যাম্পাস এখনও বন্ধ হয়নি, প্রশাসন চায় আমার করোনা হোক’, ‘মাস্ক ও প্রাথমিক সচেতনতা কি যথেষ্ঠ’, ‘রাবি ক্যাম্পাস বন্ধ হোক’ এমন লেখাসংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিজেরাই ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছেন।
×