ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘চাপ উপভোগ করি’

প্রকাশিত: ১০:১৬, ১৬ মার্চ ২০২০

  ‘চাপ উপভোগ করি’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাসের আতঙ্ক চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। মুশফিকুর রহিমও এ নিয়ে শঙ্কিত। তবে সচেতন এবং সতর্ক থাকা নিয়ে জোর দিয়েছেন মুশফিক। বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের (বিডিপিডিসিএল) এবারের আসরের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। তিনি ১২৪ বলে ১১ চার ও ৪ ছক্কায় ১২৭ রান করেন। ২০১৭ সালের তিন বছর পর মুশফিক ঢাকা লীগে সেঞ্চুরি পান। লিস্ট এ ক্রিকেটে এটি তার ১২তম সেঞ্চুরি। আবাহনী লিমিটেডের হয়ে প্রথমবার খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি হাঁকান মুশফিক। তার সেঞ্চুরিতে প্রথম ম্যাচেই জয় তুলে নেয় আবাহনী। শুরুতেই ৬৭ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও কঠিন পরিস্থিতিতে সেঞ্চুরি করার পর ম্যাচ শেষে মুশফিক জানান, ‘আমি চাপ উপভোগ করি।’ লীগের প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি। আবাহনীর হয়ে প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি করা নিয়ে মুশফিক বলেন, ‘গত বছর তো খেলিনি, দুই বছর হয়ে গেছে। ভাল লাগছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি বাংলাদেশে আবাহনী টপ টিম। শুরুটা ভাল হওয়ায় ভাল হয়েছে। তিনি বললেন (সেঞ্চুরি) এটা আসলে মাথায় ছিল না। তবে ভাল লাগছে। প্রথম ম্যাচ ছিল। সবাই নার্ভাস ছিল। এটাই স্বাভাবিক। চ্যাম্পিয়ন দলের ওপর সবসময় চাপ থাকে। যতই ছোট দল বা বড় দল হোক, জেতার জন্যই আবাহনী খেলে। দিনশেষে দল জিতেছে এটাই আনন্দের। করোনার প্রভাবে লীগে ক্রিকেটারদের হ্যান্ডশেক না করতে বার্তা দেয়া হয়েছে। কিন্তু নিয়মিত অভ্যাস কী আর দ্রুতই বদলানো যায়? তাই ক্রিকেটাররা মাঝে মধ্যে হাত মিলিয়েছেনও। এ নিয়ে মুশফিক হাসিমুখে বলেন, ‘মাঝে মাঝে ভুলে যাই। এখনও পরিণত হয়নি। এটা নিয়ে সবাই একটু শঙ্কিত। যতটুকু সচেতন এবং সতর্ক থাকা যায়। ম্যাচের আগে করোনার ব্যাপারে বিসিবি থেকে যে বার্তা ছিল তাও জানান মুশফিক, ‘হ্যান্ডশেক করতে নিষেধ করা হয়েছে। পানি পানের বিরতিতে একটু দূরে থাকতে বলা হয়েছে। সবাই চেষ্টা করছে। পানির বোতলও প্রত্যেকে আলাদাভাবে খাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি সচেতন থেকে খেলার। পাঁচ উইকেট দ্রুত পড়ে যাওয়ার পর কঠিন পরিস্থিতিতে সেঞ্চুরি করেছেন। দলও জিতেছে। মুশফিক এমন চাপ উপভোগ করেন বলেই জানান, ‘সবসময় এই চাপগুলো আমি উপভোগ করি। এই নিজিসগুলো উপভোগ করলে খেলোয়াড় হিসেবে আরও দুই ধাপ এগিয়ে দেবে। আমি সবসময় এটা উপভোগ করি। শুধু আবাহনীর জন্যই না, যে পর্যায়েই খেলি ঘরোয়া বা আন্তর্জাতিক আমার দলের জয়ে আমার অবদান যেন বেশি থাকে এটাই মাথায় থাকে। সত্যি বলতে একটু নার্ভাস ছিলাম। যেটা বললাম আবাহনী কিন্তু সবসময় চ্যাম্পিয়ন দলই গড়ে। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে চায়। আমি, মোসাদ্দেক আর সাইফউদ্দিন অসম্ভব ভাল ব্যাটিং করেছে। উইকেট শুরুতে কঠিন ছিল। প্রথম রান করতে মুশফিককে ২০ বলের ওপরে খেলতে হয়েছে। এমনটি কেন হলো? মুশফিক বলেন, ‘আমি নিজেও হয়তো ভুলে গেছি, টেস্টেও হয়তো এটা হয়নি, প্রথম রান করতে এত বল লেগেছে। আমার নিজের একটা বিশ্বাস ছিল, আমি যদি টিকে থাকি, সেট হয়ে যেতে পারি তাহলে এটাকে গ্রিপ করতে পারব। চেষ্টা ছিল আমি যেন একটা জুটি গড়ে তুলি। আমার কাজটা সহজ করে দিয়েছে মোসাদ্দেক। পরবর্তীতে সাইফউদ্দিনও। দর্শকহীন মাঠেই খেলা হচ্ছে। দর্শকরা সতর্ক অবস্থায় মাঠে আসতে চাইলেও পারছেন না। এই দর্শকদের জন্য বার্তা দিয়েছেন মুশফিক, ‘অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড ম্যাচটাও দেখেছি, মাঠে কেউ নেই। বল বাউন্ডারিতে যাচ্ছে, লোকি ফার্গুসন নিজে গিয়ে বল কুড়িয়ে আনছে। সেখানে বাংলাদেশের মানুষ তো ক্রিকেট পাগল। তারা যেন নিজেদের সচেতন রাখে বা বসলেও দূরত্ব বজায় রাখে। মাস্ক ব্যবহার করে। কারণ একজনের হলে অন্যজন আক্রান্ত হতে পারে। আমি মনে করি তাদের অবশ্যই সচেতন থাকা উচিত। তারা যদি আমাদের ভালবাসতে পারে, আমাদেরও তাদের ভালবাসা উচিত। আমার অনুরোধ থাকবে, সবাই যেন সচেতন থাকে। আপনি যখন বিকেএসপিতে ছিলেন সেই সময় কোন দলকে সমর্থন করতেন? মুশফিক বিস্তারিত জানান, ‘রোমাঞ্চ বলতে, আবাহনী মোহামেডানের অনেক গল্প শুনেছি। ওই সময় শুনেছি দল হেরে যাওয়ার পর রাত হয়ে গেলেও দল বের হতে পারছে না। আমার ওইগুলো দেখার সৌভাগ্য হয়নি। আসলে এখন আন্তর্জাতিক ম্যাচ এত বেশি দেখে হয়তোবা তাদের সময় বের করে লীগের ম্যাচ দেখা কঠিন হয়ে যায়। সত্যি বলতে ওই সময় মোহামেডানের সাপোর্টারই ছিলাম। যখন দেখলাম না আবাহনী সবসময় সেরা দল বানায় এবং ফুটবলে, ক্রিকেটে তারাই চ্যাম্পিয়ন হয় আসতে আসতে আবাহনীর প্রতি আমার দুর্বলতা বাড়ে। সাপোর্টার হিসেবে, আপনি সবসময় চাইবেন জয়ের ভেতরে থাকে এমন দলকে সাপোর্ট করতে। সেদিক থেকে আবাহনী সেরা।’
×