ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রূপগঞ্জকে হারিয়ে দিল ওল্ড ডিওএইচএস, তাইবুলের সেঞ্চুরিতে জিতল প্রাইম দোলেশ্বর

মুশফিকের সেঞ্চুরিতে আবাহনীর শুভ সূচনা

প্রকাশিত: ১০:১৬, ১৬ মার্চ ২০২০

মুশফিকের সেঞ্চুরিতে আবাহনীর শুভ সূচনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগ (বিডিপিডিসিএল) শুরু হয়েছে রবিবার। প্রথমদিনেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। তিনি এবার প্রথমবারের মতো আবাহনী লিমিটেডের হয়ে খেলছেন। প্রথমবারে প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে লীগের মিশন শুরু করেছেন। মুশফিকের ১২৭ রানের ইনিংসে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে ৮১ রানে হারিয়েও দিয়েছে আবাহনী। বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মিশনে খেলতে নেমে শুভ সূচনাও করেছে। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ২৫ রানে হারিয়ে দিয়েছে ওল্ড ডিওএইচএস স্পোর্টিং ক্লাব। তাইবুর রহমানের সেঞ্চুরিতে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৮ রানে হারাল প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। আবাহনী-পারটেক্স ম্যাচ, মিরপুর ॥ প্রথম বিভাগ থেকে উঠে আসা পারটেক্স বিপদে ফেলে দিয়েছিল আবাহনীকে। ৬৭ রানেই আবাহনীর ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিল। টস জিতে আগে ব্যাটিং করে লিটন কুমার দাস, নাঈম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, আফিফ হোসেন ধ্রুবর মতো ব্যাটসম্যানদের হারায় আবাহনী। এমন অবস্থায় একজন ব্যাটসম্যানের বড় ইনিংস খেলা আর বড় জুটি ছাড়া কোন গতিই ছিল না। ম্যাচ বাঁচাতে হলে এর বিকল্প কোন পথও ছিল না। এবার প্রথমবারের মতো আবাহনীতে নেয়া হয় মুশফিককে। নেতৃত্ব আর ব্যাটিং শৈলী দিয়ে দলকে শিরোপা জয় করাবেন মুশফিক এমন আশাই করা হচ্ছে। মুশফিকও লীগে আবাহনীর হয়ে নিজের প্রথম ম্যাচেই সেই দায়িত্ব পালন করে দেখিয়ে দিলেন। যে জন্য মুশফিককে নেয়া হয়েছে তা যে সঠিক তা বুঝিয়ে দিলেন। সপ্তম উইকেটে গিয়ে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে নিয়ে ১৬০ রানের জুটিও গড়েন। দলের যখন ২২৭ রান হয় তখন মুশফিক আউট হয়ে যান। আউট হওয়ার আগে ১২৪ বলে ১১ চার ও ৪ ছক্কায় ১২৭ রান করেন মুশফিক। ২০১৭ সালের তিন বছর পর মুশফিক আবার ঢাকা লীগে সেঞ্চুরি হাঁকান। ১১২ বল খেলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ১০০ রানে পৌঁছান মুশফিক। লিস্ট এ ক্রিকেটে ১২তম সেঞ্চুরি করেন মুশফিক। দ্বিতীয় ম্যাচ যখন খেলতে নামবেন তখন ৩০০তম লিস্ট এ ম্যাচ খেলবেন মুশফিক। দলকে ২২৭ রানে নিয়ে গিয়ে যখন আউট হন মুশফিক, কিছুক্ষণ পর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও (৬১) দলের ২৩২ রানে গিয়ে আউট হয়ে যান। মুশফিক ও মোসাদ্দেকের এমন ইনিংসের পরও বড় স্কোর গড়া যাচ্ছিল না। তাতে বিপদ ঘনিয়ে আসার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১৫ বলে ৫ ছক্কায় অপরাজিত ৩৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেললে ৭ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৮৯ রান করে আবাহনী। এ রানের জবাব দিতে গিয়ে ৪৮.৪ ওভারে ২০৮ রান করতেই অলআউট হয়ে যায় পারটেক্স। দলের হয়ে নাজমুল হোসেন মিলন ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন। মেহেদী হাসান রানা ৪ উইকেট শিকার করেন। স্কোর ॥ আবাহনী ইনিংস- ২৮৯/৭; ৫০ ওভার; লিটন ০, নাঈম ০, শান্ত ১৫, মুশফিক ১২৭, বিপ্লব ১৪, আফিফ ৩, সৈকত ৬১, সাইফউদ্দিন ৩৯*, তাইজুল ১৭*; জয়নুল ৩/২৮, তাসামুল ২/২৯। পারটেক্স ইনিংস- ২০৮/১০; ৪৮.৪ ওভার; মিলন ৫৩, তাসামুল ৪৩, ধিমান ৩৬, রিজভি ২৪; রানা ৪/৫৫, তাইজুল ২/৩০। ফল ॥ আবাহনী ৮১ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মুশফিকুর রহিম (আবাহনী)। ওল্ড ডিওএইচএস-রূপগঞ্জ ম্যাচ, বিকেএসপি ॥ বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে রূপগঞ্জকে হারিয়ে দিয়েছে ওল্ড ডিওএইচএস। গত আসরে দাপট দেখানো রূপগঞ্জ এবার প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খেয়েছে। টস জিতে ওল্ড ডিওএইচএসকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় রূপগঞ্জ। সুযোগটি পেয়ে খুব বড় স্কোর গড়তে পারেনি ওল্ড ডিওএইচএস। ৪৯ ওভারে ২৩০ রান করতেই অলআউট হয়ে যায়। দলের হয়ে দুই ওপেনার আনিুসল ইসলাম ইমন ৫৯ ও রাকিন আহমেদ ৪৮ রান করেন। ওপেনিং জুটিতেই ১০৬ রান করে ওল্ড ডিওএইচএস। কিন্তু এরপর যে ব্যাটিং ধস নামে, ২৩০ রানের বেশি করতে পারেনি তারা। সোহাগ গাজী ৩ উইকেট শিকার করেন। জবাব দিতে নেমে ৫০ ওভারে ২০৫ রান করতেই গুটিয়ে যায় রূপগঞ্জ। পিনাক ঘোষ ৫৩ ও সানজামুল ইসলাম ৪০ রান করেন। ম্যাচসেরা অভিষেক দাস ও মোহাম্মদ রশিদ ৩টি করে উইকেট নেন। স্কোর ॥ ওল্ড ডিওএইচএস ইনিংস- ২৩০/১০; ৪৯ ওভার; ইমন ৫৯, রাকিন ৪৮, মাহমুদুল ৩৫, প্রিতম ৩৩, অভিষেক ১৪; সোহাগ ৩/৫৪। রূপগঞ্জ ইনিংস- ২০৫/১০; ৫০ ওভার; পিনাক ৫৩, সানজামুল ৪০, সোহাগ ৩২; রশিদ ৩/৩৫, অভিষেক ৩/৪৪। ফল ॥ ওল্ড ডিওএইচএস ২৫ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ অভিষেক দাস (ওল্ড ডিওএইচএস)। প্রাইম দোলেশ্বর-ব্রাদার্স ম্যাচ, ফতুল্লা ॥ ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে হারের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল প্রাইম দোলেশ্বর। শেষ পর্যন্ত রক্ষা মিলে। টস হেরে আগে ব্যাটিং করে তাইবুর রহমানের ৯৪ বলে ৭ চার ও ৫ ছক্কায় করা অপরাজিত ১১০ রানের ইনিংসে ৭ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৩৮ রান করে প্রাইম দোলেশ্বর। রান খুব বেশি হয়নি। ব্রাদার্সও জয়ের সম্ভাবনা ভালভাবেই তৈরি করেছিল। ২১৯ রান পর্যন্ত চলে যায় তারা। হাতে তখনও ৩ উইকেট থাকে। ওভার থাকে ৩টি। জিততে রান দরকার থাকে ২০। জুনায়েদ সিদ্দিকী যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন, আরেক প্রান্ত আগলে থাকলে জয় মিলে যেতে পারত। কিন্তু দলের ২১৯ রানে আলাউদ্দিন বাবু আউট হওয়ার পর দলের ২৩০ রানে গিয়ে নাঈম ইসলাম জুনিয়র রান আউট হয়ে যান, হারের সম্ভাবনা তৈরি হয়। ৫০ ওভার শেষ হওয়ার ২ বল বাকি থাকতে যখন সেঞ্চুরি থেকে ৩ রান দূরে থাকা জুনায়েদও (৯৭) আউট হয়ে যান, তখন অলআউট হয়ে যায় ব্রাদার্স। জয়ের আশা পূরন হয়নি। তুষার ইমরান ৫১ রান করেন। তৃতীয় উইকেটে জুনায়েদ ও তুষার মিলে ৯২ রানের জুটি গড়েই জয়ের আশা তৈরি করেন। তা আর মিলেনি। প্রাইম দোলেশ্বরই শেষ পর্যন্ত জিতে যায়। তাইবুর ম্যাচ সেরা হন। রেজাউর রহমান ৪ উইকেট শিকার করেন। স্কোর ॥ প্রাইম দোলেশ্বর ইনিংস- ২৩৮/৭; ৫০ ওভার; তাইবুর ১১০*, ইমরান ৩৪; সাকলাইন ২/২৭। ব্রাদার্স ইনিংস- ২৩০/১০; ৪৯.৪ ওভার; জুনায়েদ ৯৭, তুষার ৫১, রাহাতুল ৩১; রেজাউর ৪/৩৬। ফল ॥ প্রাইম দোলেশ্বর ৮ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ তাইবুর রহমান (প্রাইম দোলেশ্বর)।
×