ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পুরো স্পেন লক ডাউন

প্রকাশিত: ০৭:৩৪, ১৬ মার্চ ২০২০

পুরো স্পেন লক ডাউন

করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে স্পেন তার ৪ কোটি ৬০ লাখ লোককে লক ডাউন করে ফেলেছে। প্রতিবেশী ফ্রান্সও আইফেল টাওয়ার, ল্যুভর মিউজিয়াম, ক্যাফে ও রেস্তরাঁসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার লোকজনের মাঝে আরও দূরত্ব বজায় রাখতে ও করোনা দমনে ব্যাপকভিত্তিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এপি ও বিবিসি। শনিবার ও রবিবারও বিশ্বব্যাপী আরও সীমান্ত বন্ধ করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ডের ওপরও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেবে। এর কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশের ভ্রমণকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। ফিলিপিন্সের হাজারো পুলিশ ও সৈনিক ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানী ম্যানিলাতে অভ্যন্তরীণ পর্যটক ঠেকাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। গত বছরের শেষ দিকে যেখানে ভাইরাস উৎপত্তি হয় সেই চীন তার কঠোর বিধিনিষেধ অব্যাহত রেখেছে। চীন সঙ্কট থেকে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে, তবে এপিসেন্টার ইউরোপে স্থানান্তরিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ভাইরাসে ১ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং ৫ হাজার ৬শ’র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ইইউ’র বৃহৎ দুই দেশ স্পেন ও ফ্রান্স ইতালির পথ অনুসরণ করে জরুরী বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। স্পেনে জরুরী কেনাকাটা, ওষুধ ক্রয় কিংবা কাজ ছাড়া মানুষজনের ঘরের বাইরে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। ইতালির পর ইউরোপের মধ্যে স্পেনেই সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১৯১ জন। ফ্রান্সে মারা গেছে ৯১ জন। সেখানে ক্যাফে, রেস্তরাঁ, সিনেমা হল এবং বেশিরভাগ দোকানপাটই এখন বন্ধ। সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটা ইতালিতে গত সোমবার থেকে লক ডাউন চলছে। মৃতের সংখ্যা ১৪৪০ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ইউরোপই এখন করোনাভাইরাস সংক্রমণের কেন্দ্রে রয়েছে। ৪ কোটি ৬০ লাখের বেশি জনসংখ্যার দেশ স্পেনে ৬ হাজার ৩০০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছে। শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো স্যানচেজের স্ত্রী বেগোনা গোমেজকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই ১ হাজার ৮০০ জন আক্রান্তকে শনাক্ত করা হয়েছে। বেশিরভাগই রাজধানী মাদ্রিদে। দেশটিতে জরুরী অবস্থাও জারি করা হয়েছে। স্যানচেজ অধিবাসীদের অতি জরুরী কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। সব জাদুঘর, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং ক্রীড়াঙ্গন বন্ধ থাকবে। রেস্তরাঁ এবং ক্যাফে শুধু হোম ডেলিভারি করতে পারবে। তবে ব্যাংক ও পেট্রোল স্টেশনের মতো জরুরী সেবা সংস্থা খোলা থাকবে। দেশজুড়ে স্কুলগুলো আগেই বন্ধ করা হয়েছে। জরুরী অবস্থা দুই সপ্তাহ জারি থাকবে। তবে প্রয়োজন হলে এবং পার্লামেন্ট অনুমোদন করলে বাড়বে। ৬ কোটি ৩৫ লাখ মানুষের দেশ ফ্রান্সে ৪ হজার ৪০০ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। শনিবার গ্রিনিচ মান সময় রাত এগারোটায় শুরু হওয়া নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে রেস্তরাঁ, ক্যাফে, সিনেমা হল এবং নাইটক্লাব। কম জরুরী সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে বন্ধের আওতায়। খাবারের দোকান, ওষুধের দোকান, ব্যাংক, তামাকের দোকান ও পেট্রোল স্টেশন নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এদুয়ার্দ ফিলিপ্পে। রবিবারের স্থানীয় নির্বাচন বাতিল করা হয়েছে। ধর্মীয় ভবনগুলো খোলা থাকবে, তবে সমাগম এবং অনুষ্ঠানসমূহ বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকবে।
×