ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঋতু পরিবর্তন এবং চুলের যত্ন

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ১৬ মার্চ ২০২০

ঋতু পরিবর্তন এবং চুলের যত্ন

এখন এমন একটা ওয়েদার চলছে যে, না গরম আবার না শীত। আর কাছেই চলে আসছে গরমকাল। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টা যেমন আমাদের হেলথ, স্কিনের ওপর প্রভাব ফেলে তেমনি চুলও কিন্তু বাদ যায় না। কারণ, টেম্পারেচারের পরিবর্তনের ফলে হিউমিডিটি আমাদের চুলের ওপর প্রভাব ফেলে। যত হিউমিডিটি বেশি থাকে চুল তত ফ্রিজি হয়ে যায়। এই সময় অনেকেই খেয়াল করে থাকবেন চুলগুলো অনেক বেশি রাফ লাগছে। তাই ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টাতে চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে দরকার এক্সট্রা কেয়ার। যাতে আপনি সবসময় পান সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর চুল। লিখেছেন -সাবিহা রহমান মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করুন যেহেতু হাল্কা হালকা গরম পড়া শুরু হয়েছে তাই, বাতাসে হিউমিডিটি বেশি। যার ফলে চুলে রুক্ষতাও বেশি দেখা দিবে। এই অবস্থায় কোন হার্শ টাইপের শ্যাম্পুর ব্যবহার আপনার চুলকে বানিয়ে দেবে আরও রাফ। তাই ব্যবহার করুন ভাল মানের একটা মাইল্ড শ্যাম্পু। কারণ, মাইল্ড শ্যাম্পুতে এসএলএস (SLS) অর্থাৎ সোডিয়াম লরাইল সালফেট (Sodium lauryl sulphate)-এর মতো হার্ষ কেমিক্যাল থাকে না। যার ফলে মাইল্ড শ্যাম্পুগুলো চুলের ন্যাচারাল অয়েল অপসারণ করে ফেলে চুলকে রুক্ষ বানিয়ে দেবে না। ডিপ কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টাতে চুলে এক্সট্রা ময়েশ্চারের দরকার পরে। তাই একটা রিচ ডিপ কন্ডিশনিং হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন, যেটা এ্যাসেনশিয়াল অয়েলসমৃদ্ধ। মার্কেটে এই ধরনের হেয়ার মাস্ক কিনতেই পাবেন। আর যদি চান তবে বাড়িতেই ন্যাচারাল ইনগ্রিডিয়েন্টসের সাহায্যে ডিপ কন্ডিশনিং হেয়ার মাস্ক বানিয়ে নিতে পারবেন। এ জন্য যা যা লাগবে- ১. কোকোনাট মিল্ক ২. ডিম ৩. অলিভ অয়েল ৪. এ্যাভোক্যাডো। (এ্যাভোক্যাডো না থাকলে কলা ব্যবহার করতে পারেন)। যেভাবে বানাবেন এবং ব্যবহার করবেন প্রথমে একটি এ্যাভোক্যাডো কাঁটা চামচের সাহায্যে ম্যাচ করে নিন। এরপর এর সঙ্গে ২ টেবিল চামচ কোকোনাট মিল্ক, ১টা ডিম, ১ চা চামচ অলিভ অয়েল নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর চুলের সিঁথি কেটে কেটে নিয়ে মাস্কটি চুলের গোড়া এবং পুরো চুলে লাগিয়ে নিন। ৪০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। ঋতু পরিবর্তনে চুলের যতœ নিতে রেগুলার হেয়ার অয়েলিং হেয়ার অয়েলিং শুধু সিজন চেঞ্জিংয়ের জন্য না। সব সময়েই খুবই ইম্পরট্যান্ট। কারণ, হেয়ার অয়েলিংয়ের ফলে চুলের স্ক্যাল্প নারিশ হয়, চুলের ড্রাইনেস দূর হয়। এ ছাড়া অয়েল ম্যাসাজের ফলে ব্লাড সার্কুলেশন বৃদ্ধি পায়। তাই চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সপ্তাহে ৩ দিন আপনার পছন্দের হেয়ার অয়েল চুলে লাগিয়ে নিন। অন্তত ৫ মিনিট হেয়ার অয়েলটা চুলের স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ম্যাসাজ করে নিতে ভুলবেন না। হেয়ার অয়েল ওভারনাইট রাখলেই ভাল। আর হাতে সময় কম থাকলে ১ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলতে পারেন। ঋতু পরিবর্তনে চুলের যত্ন নিতে এ্যালোভেরা জেল ম্যাসাজ চুলের স্ক্যাল্পে এ্যালোভেরা জেল ম্যাসাজ করতে পারেন। এ্যালোভেরা জেল চুলের অতিরিক্ত সেবাম দূর করে, স্ক্যাল্পের ইচিং দূর করে, সুদিং এফেক্ট দেয় এবং অতিরিক্ত সেবাম প্রোডাকশন কমায়। চুলের স্ক্যাল্পে এ্যালোভেরা জেল নিয়ে ম্যাসাজ করুন কিছুক্ষন। এরপর ২০ মিনিট রেখে একটি মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। হিট স্টাইলিং টুলস এড়িয়ে চলুন স্টাইল করতে গিয়ে আমরা তো চুলে অহরহ হিট ব্যবহার করেই থাকি। বিশেষ করে এই ঋতু পরিবর্তনের সময়টাতে চুলের জন্য হিটটা খুবই ক্ষতিকর। এতে চুল আরও বেশি ড্যামেজ হয়ে যেতে থাকে। তাই যতটা সম্ভব হিট স্টাইলিং টুলস থেকে চুলকে দূরে রাখতে হবে। খুব দরকার পরলে হিট স্টাইলিং টুলস ব্যবহারের আগে অবশ্যই চুলে হিট প্রোটেকশন স্প্রে লাগিয়ে নিবেন। এ ছাড়া চাইলে অল্প করে এ্যালোভেরা জেল বা আর্গান অয়েলও পুরো চুলে লাগাতে পারেন। একই কাজই দেবে। গরম পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন এই ওয়েদারেও অনেকে হট ওয়াটার দিয়ে শাওয়ার নিতে আরামবোধ করেন। কিন্তু এতে করে আপনার চুলের কত ক্ষতি হচ্ছে তা কি জানেন? হট ওয়াটার চুলকে ড্রাই এবং রাফ করে দেয়। যতই মাইল্ড শ্যাম্পু আর হেয়ার মাস্ক লাগান, হট ওয়াটারে চুল ধুলে তা কোনো কাজেই দেবে না। তাই শ্যাম্পু করার সময় ওয়ার্ম ওয়াটার এবং কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধোয়ার সময় কোল্ড বা রুম টেম্পারেচারে থাকা ওয়াটার ব্যবহার করুন। ইউভি ড্যামেজ থেকে চুলকে রক্ষা করুন যেহেতু আমরা ঠান্ডা থেকে গরমের দিকে চলে আসছি, তাই সূর্যও দিন দিন কড়া হচ্ছে। যেটা চুলের ওপরে এফেক্ট ফেলে। যার ফলে চুল এবং স্ক্যাল্প ড্রাই হয়ে যায়। এ জন্য বাইরে গেলে চুলগুলো কোন আমব্রেলা, হ্যাট বা সিল্কের স্কার্ফ এর সাহায্যে ঢেকে নেয়াই ভাল। এ ছাড়া চাইলে হেয়ার সানস্ক্রিনও ব্যবহার করতে পারেন। রেগুলার চুলের আগা ট্রিম করুন চুল দেখতে সুন্দর এবং হেলদি লাগুক, এ জন্যই তো আমরা চুলের এত কেয়ার করি। তাই না? কিন্তু এই ওয়েদারে অতিরিক্ত ড্রাইনেসের ফলে চুলের আগা ফাটা দেখা দেয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না। আর চুলের আগা ফেটে গেলে সেটা আর যাই হোক, দেখতে হেলদি আর সুন্দর লাগে না। তাই, অবশ্যই রেগুলার চুলের আগা ট্রিম করবেন। হেলদি ডায়েট শুধুমাত্র ইন্টারন্যাল কেয়ারই যথেষ্ট নয়। ভেতর থেকে যত্নটাও জরুরী। চুল এবং স্ক্যাল্প হাইড্রেটেড রাখতে প্রচুর পানি, জুস পান করুন। এ ছাড়া ডায়েটে ভিটামিন এবং নিউট্রিয়েন্টস যুক্ত ফল রাখুন।
×