ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এসএসএফের ফায়ারিং রেঞ্জ আধুনিকায়ন করা হবে

প্রকাশিত: ১১:৫০, ১৫ মার্চ ২০২০

এসএসএফের ফায়ারিং রেঞ্জ আধুনিকায়ন করা হবে

ওয়াজেদ হীরা ॥ স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ফায়ারিং রেঞ্জ আধুনিকায়ন করবে সরকার। এর মাধ্যমে এসএসএফ সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা বাড়বে। সেই সঙ্গে আধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অস্ত্র চালনার পারদর্শিতা বৃদ্ধি করাও একটি উদ্দেশ্য। প্রকল্প বাস্তবায়নের এতে ব্যয় হবে ৫১ কোটি ৫৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। চলতি জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্র্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও প্রকল্প তথ্যে জানা গেছে, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) বা বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী বিশেষ সংস্থা। দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, জাতির পিতার পরিবারবর্গসহ রাষ্ট্র কর্তৃক ঘোষিত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকে এই বাহিনীর সদস্যরা। এসএসএফ বেসামরিক প্রশাসন, নিরপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে দেশ ও দেশের বাইরে উল্লেখিত ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় যে কোন ধরনের হুমকি থেকে রক্ষা ও সেগুলো প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন। এছাড়াও এসএসএফ সদস্যরা অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বাসভবন ও অফিসে নিরাপত্তা দিয়ে থাকেন। সংস্থাটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনস্ত। আরও জানা গেছে, অতীতের তুলনায় বর্তমানে এসএসএফ’র কার্যপরিধি এবং চ্যালেঞ্জ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিধির প্রেক্ষাপটে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। একই সঙ্গে প্রতিটি মুহূর্তে এই বাহিনীকে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। দৈনন্দিন দায়িত্ব পালন ছাড়াও বিদেশ থেকে আগত ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা প্রদানের মাধ্যমে এসএসএফ যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তাদের পারদর্শিতার প্রমাণ রাখছেন। এ দক্ষতা ও যোগ্যতার পেছনে তাদের রয়েছে একনিষ্ঠ প্রশিক্ষণ। মৌলিক প্রশিক্ষণ বিভিন্ন বিষয়ে তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণের পাশপাশি মাঠ পর্যায়ে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এ লক্ষ্য অর্জনে এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে আরও চৌকস করে গড়ে তুলতে ১৯৯৯ সালে ফায়ারিং রেঞ্জ নির্মাণ করা হয়। রেঞ্জটি প্রায় ২০ বছরের পুরনো। তাই আধুনিক প্রশিক্ষণের সঙ্গে তাল মেলানোর জন্য পুরাতন ফায়ারিং রেঞ্জটি অপসারণপূর্বক সেখানে আধুনিক মানের ফায়ারিং রেঞ্জ নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ বিষয়ে বলেছেন, এই বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা দেয়, দেশের বাহিরের অতিথিদের নিরাপত্তা দেয়, তাই এদের সবসময় আধুনিক প্রশিক্ষণের মধ্যে থাকতে হয়। এটি তারই একটি অংশ। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৯৮৫ বর্গমিটারের ফায়ারিং রেঞ্জ নির্মাণ। যার মধ্যে থাকবে ফাউন্ডেশন, সুপার স্ট্রাকচার, অভ্যন্তরীণ পানি সরবরাহ এবং পয়ঃনিষ্কাশন, অভ্যন্তরীণ বিদ্যুতায়ন, গ্যাস সরবরাহ, ভূ-গর্ভস্থ জলাধার। এছাড়া ২৪৩ দশমিক ৮৩ মিটার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, একটি অর্নামেন্টাল গেট নির্মাণ, ১৩৯ দশমিক ৩৫ বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ করা হবে। বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন ও তার যন্ত্রপাতি কেনা হবে একসেট। এছাড়াও ভূমির উন্নয়নসহ নানা ধরনের আনুষঙ্গিক কাজ হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। প্রকল্পটি নেয়ার আগে বাস্তবায়নকারী সংস্থার মাধ্যমে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে। সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রকল্পটি সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়। প্রকল্পটি নিয়ে গতবছর সেপ্টেম্বরে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কতিপয় সিদ্ধান্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে একনেকে উপস্থাপন এবং তা অনুমোদন দেয়া হয়। পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) শামীমা নার্গিস মতামত দিতে গিয়ে বলেছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এসএসএফ সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।
×