ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ ॥ স্বামীসহ অন্যরা পলাতক

প্রকাশিত: ১১:১০, ১৫ মার্চ ২০২০

টাঙ্গাইলে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ ॥ স্বামীসহ অন্যরা পলাতক

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ১৪ মার্চ ॥ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের বারান্দায় বসে তিনদিন ধরে মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে কান্না করে যাচ্ছেন আলম মিয়া। তিনি বলেন, আমি গরিব বলে আমার মেয়ে আলেয়া বেগম (১৯) হত্যার বিচার কি পাব না। আমার কান্না কি কেউ শুনবে না। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। যারা আমার মেয়েডারে মাইরা ফালাইছে তাদের ফাঁসি চাই। গত তিন ধরে মেয়ের লাশ মর্গে পড়ে রয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। কিন্তু ডাক্তার বলছে পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনের সঙ্গে লাশের শরীরের চিহ্নের মিল না থাকায় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ছাড়া ময়নাতদন্ত হবে না। এ ঘটনায় এই হত্যাকা-ের সঠিক বিচার পাবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তিনি। নিহত আলেয়ার পিতা আলম মিয়া আরও জানান, তার বাড়ি টাঙ্গাইলের সখীপুরের বহেড়াতৈল গ্রামে। সখীপুর উপজেলার বেড়বাড়ি খন্দকার পাড়া গ্রামের সোহেল মিয়ার ছেলে জনি মিয়ার সঙ্গে তার মেয়ে আলেয়াকে প্রায় ছয়মাস আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেন। বিয়ের সময় এক লাখ টাকা দেয়ার শর্তে নগদ ৫০ হাজার টাকা, দেড় ভরি স্বর্ণালঙ্কার যৌতুক হিসাবে দেয়া হয়। বিয়ের তিনমাস পর থেকে বিদেশ যাওয়ার জন্য আলেয়া বেগমকে বাকি ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বিভিন্ন সময় চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন তার স্বামী। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মেয়ের শ^শুরবাড়ির লোকজন ফোন করে বলেন, তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এরপর তিনি আলেয়ার স্বামীর বাড়িতে গিয়ে বাড়ির উঠানে মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। লাশের কাছে গিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ক্ষত চিহ্ন দেখতে পান। এ সময় আলেয়ার স্বামী, শ^শুর-শাশুড়িসহ বাড়ির অন্যান্য লোকজন ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে সখীপুর থানার উপ-পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহাল করেন। গলায় ফাঁসের বিষয়টি তিনি সুরতাহালে উল্লেখ করেন। পরে লাশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করেন। এ বিষয়ে সখীপুর থানার উপ-পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ বলেন, লাশের আত্মীয়স্বজনের সামনে সুরতহাল করা হয়েছে। সুরতহাল তৈরির পর লাশ বেশি সময় থাকলে তার শরীরের পরিবর্তন হতে পারে। চিহ্ন মুছে যেতে পারে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মূল বিষয়টি বেরিয়ে আসবে। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম সজীব জানান, প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন ও লাশের প্রকৃত অবস্থার সঙ্গে সুরতহালের প্রতিবেদনের মিল না থাকায় বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় শুক্রবার ময়নাতদন্ত হয়নি। পরে শনিবার বিকেলে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এনে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে।
×