ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চলাচল নিরাপদ করতে নির্মাণ করা হচ্ছে ২০ স্টপেজ

যশোর-খুলনা মহাসড়কে ব্যয় বেড়েছে ৩৭ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০৯:০১, ১৫ মার্চ ২০২০

যশোর-খুলনা মহাসড়কে ব্যয় বেড়েছে ৩৭ কোটি টাকা

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোর-খুলনা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল আরও নিরাপদ করতে ৮৬টি সংযোগ সড়ক, ২০টি বাস স্টপেজ ও ৮টি কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। এ কাজে নির্মাণ ব্যয় আরও ৩৭ কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর বেনাপোল সড়কের সব স্থানে গাছের কারণে ১০ ফুট বাড়ানো সম্ভব না হওয়ায় ব্যয় কমেছে ২১ কোটি টাকা। প্রায় ৭শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক দুটির উন্নয়নের কাজ এগিয়ে চলছে। সূত্র জানায়, যশোর-খুলনা মহাসড়কটি শহরতলির পালবাড়িমোড় থেকে নওয়াপাড়ার রাজঘাট পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার ১০ ফুট চওড়া করে নতুনভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে এ সড়কটির উন্নয়নে ব্যয় ধরা হয় ৩২১ কোটি টাকা। এর পর সড়কটি খানিকটা উঁচু হওয়ায় পার্শ্ববর্তী সড়ক থেকে যানবাহন এ সড়কে ওঠায় খানিকটা সমস্যা হচ্ছিল। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সংযোগ সড়ক উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তারা সড়কের দু’পাশের ৮৬টি সংযোগ সড়কের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ৮৬টি সড়ক লম্বায় ২৫ ফুট করে উন্নয়ন করা হচ্ছে। এ নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এছাড়া সড়কটিতে যানবাহন চলাচল আরও নিরাপদ করতে সড়ক বিভাগ বিভিন্ন পয়েন্টে পৃথকভাবে ২০টি বাস স্টপেজ নির্মাণ করছে, যাতে যানবাহনগুলো বিভিন্ন বাজারে যাত্রী ওঠানামা করাতে সড়কের পাশের স্টপেজে গিয়ে থামবে। এখান থেকেই যাত্রীরা নিরাপদে যানবাহনে চলাচল করবে। একই সঙ্গে সড়কের ভাঙ্গাচোরা আরও ৮টি কালভার্ট নতুনভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব খাতে সড়কটির নির্মাণ ব্যয় আরও ৩৭ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫৮ কোটি টাকা। এদিকে, যশোর- বেনাপোল মহাসড়কটি শহরের দড়াটানা মুজিব সড়ক থেকে শুরু হয়ে বেনাপোল চেকপোস্ট পর্যন্ত ৩৮ কিলেমিটার ১০ ফুট বাড়িয়ে নতুনভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এ কাজের বরাদ্দ দেয়া হয় ৩২৮ কোটি টাকা। কিন্তু সড়কটি নির্মাণে ঠিাকাদার শতবর্ষী গাছের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে সড়কের সবস্থানে ১০ ফুট করে তারা বর্ধিত করতে পারেনি। এ কারণে বেনাপোল সড়ক উন্নয়নের বাজেট ২১ কোটি টাকা কমিয়ে ৩০৭ কোটি টাকা করা হয়েছে। এ হিসেবে সড়ক দুটির নতুন করে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৬৫ কোটি টাকা। যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের তদারকিতে সড়কের গোটা উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালিত হচ্ছে। সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর বেনাপোল সড়কের কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দেয় সড়ক বিভাগ। এর আগে একই বছরের ১৮ মার্চ খুলনা সড়ক উন্নয়ন কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয়। দুটি সড়কের কাজ সমাপ্তির সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর। এ সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় সময় বাড়িয়ে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে মহাসড়ক দুটির উন্নয়ন কাজ চলছে। গত দেড় বছরে খুলনা সড়কের উন্নয়ন কাজ এগিয়েছে ৮০ ভাগ ও বেনাপোল সড়কের কাজ এগিয়েছে ৬৫ ভাগ। আলোচিত এ দুটি মহাসড়ক উন্নয়নের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ও খুলনার তাহের এ্যান্ড ব্রাদার্স, মাহবুব এ্যান্ড ব্রাদার্স ও তমা কনস্ট্রাশন এ্যান্ড কোং। শুরু থেকেই মহাসড়ক দুটির পাশে বসবাসকারী ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সড়ক উন্নয়ন কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। যার কারণে ঠিকাদার নির্দিষ্ট সময়ে এ সড়ক দুটির কাজ শেষ করতে পারছে না। এ বিষয়ে যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, খুলনা সড়কের পার্শ্ববর্তী মানুষের ও বাজারের সমস্যার কথা বিবেচনা করে সংযোগ সড়কগুলো উন্নয়ন করা হচ্ছে। এ জাতীয় ৮৬টি সড়ক ২৫ ফুট করে উন্নয়ন করা হচ্ছে। এছাড়া, সড়ক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ২০ বাস স্টপেজ করা হয়েছে। যাতে এ সড়কে মানুষ দুর্ঘটনা কবলিত না হয়। যদিও বর্ধিত এ বাজেট এখনও অনুমোদন হয়নি। তিনি বলেন, যশোরের প্রধান দুটি মহাসড়কের দেড় বছর মেয়াদী উন্নয়ন কাজ শেষ হবার সময় ছিল ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর। সেটি আগামী জুন মাস পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। ঠিকাদার এ দুটি সড়কের কাজ শেষ করতে খুব বেশি পিছিয়ে নেই। যশোর-খুলনা মহাসড়কের কাজ ৮০ ভাগ এগিয়েছে, আর বেনাপোল সড়কের কাজ এগিয়েছে ৬৫ ভাগ। কোন দুর্যোগ না ঘটলে ২০২০ সালের জুন মাসের মধ্যে এ দুটি প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
×