ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির প্রশ্ন তোলা হাস্যকর ॥ কাদের

প্রকাশিত: ১১:০৯, ১৪ মার্চ ২০২০

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির প্রশ্ন তোলা হাস্যকর ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির প্রশ্ন তোলা হাস্যকর। বিএনপি লুটপাটের জন্য ক্ষমতায় যাওয়ার চক্রান্ত করছে। তারা মুজিববর্ষ বাতিল করতে চেয়েছিল। এখন করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনা করছে। শুক্রবার রাজধানীর ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনের সময় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, যুবলীগের চেয়ারম্যান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের হাতে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে দলের পক্ষ থেকে তৈরি করা প্রচারপত্র হস্তান্তর করেন ওবায়দুল কাদের। সম্মেলন শেষে ধানম-ির প্রিয়াংকা কমিউনিটি সেন্টার, জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের প্রচারপত্র বিলি করেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা হ্যান্ডবিল বিভিন্ন জেলা পর্যায়েও পাঠাচ্ছি। আমরা তৃণমূল পর্যন্ত আমাদের এই ক্যাম্পেন চালিয়ে যেতে চাই। আওয়ামী লীগের মতো সহযোগী সংগঠনগুলোও বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচী নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে যেমন সতর্কতামূলক কর্মসূচী নিয়েছিলাম, তেমনি এ ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দেশের জনগণকে সতর্ক করতে কর্মসূচী নিয়েছি। সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণকে সতর্ক করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একজন ‘ক্যাম্পেনার হয়ে’ প্রতিদিনের বক্তৃতায় এ বিষয়ে কথা বলছেন এবং তাতে দেশে ‘সতর্কতামূলক একটা আবহ’ তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকে তার বক্তব্যে দেশবাসীকে সচেতন করছেন। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বিমানবন্দর, নৌবন্দর ও স্থলবন্দরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা জোরদার করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের দেশে এখন সঙ্কটটি সেভাবে আসেনি। এই সঙ্কট মোকাবেলায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া আছে। জার্মানির চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মার্কেল বলেছেন, করোনাভাইরাসে ৭০ শতাংশ লোক আক্রান্ত হতে পারে। ইতালিতে অনেক মানুষ মারা গেছে। গোটা ইউরোপে এখন ছড়িয়ে পড়েছে। কাজেই আমাদের দেশে যাতে এই রোগটি এসে বিস্তৃত হতে না পারে, সেজন্য যেসব সচেতনতার দরকার, সতর্কতামূলক উদ্যোগ নেয়া দরকার, সে ব্যাপারে দেশবাসীকে প্রতিনিয়ত অবহিত করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। তিনি বলেন, করোনার সতর্কতামূলক ব্যবস্থায় রাজধানীর পাশাপাশি সারাদেশে একই ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শুধু ঢাকা শহরে নয়, তৃণমূল পর্যন্ত এই কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়া হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতালি ফেরত দুজনসহ মোট তিনজন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারা এখন সুস্থ। বিশ্বের প্রায় শতাধিক দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটা বিপদমুক্ত। করোনাভাইরাস একটি বৈশ্বিক সঙ্কট। এই পরিস্থিতিতে দেশবেসীকে ভীত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার শুরু থেকে ‘যথেষ্ট প্রস্তুতি নেয়নি’ বলে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, করোনাভাইরাস প্রস্তুতি শুরু হওয়ার পর থেকে কোথায় কোথায় সরকারের ঘাটতি আছে? আমাদের কিছু কিছু যন্ত্রপাতির সমস্যা থাকতে পারে, কিন্তু সেটা এখন সমাধান হয়ে গেছে। এখন প্রস্তুতিতে কোন কিছুরই ঘাটতি নেই। আওয়ামী লীগের সচেতনতামূলক লিফলেটে ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক হোন’-এমন আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি দেশবাসীকে কিছু সতর্কতামূলক করণীয় মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে ক্ষমতাসীন দলটির পক্ষ থেকে। করণীয় সম্পর্কে বলা হয়েছে- ‘ঘন ঘন সাবান পানি দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত পরিষ্কার করুন, হ্যান্ডশেক, কোলাকুলি থেকে বিরত থাকুন। জ্বর, সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীরে ব্যথা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, আগে খাবার ভাল করে ধুয়ে নিন এবং সিদ্ধ করুন, হাঁচি- কাশির সময়ে টিস্যু অথবা কাপড় দিয়ে বা বাহুর ভাঁজে নাক-মুখ ঢেকে ফেলুন। ব্যবহৃত টিস্যু ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলুন ও হাত পরিষ্কার করুন, জনবহুল স্থানে বা গণপরিবহনে মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন। যথাসম্ভব জনসমাগম পরিহার করুন, যেখানে-সেখানে থুথু ফেলবেন না, ময়লা কাপড় বেশি দিন জমিয়ে রাখবেন না, দ্রুত ধুয়ে ফেলুন।
×