ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন বাস্তবায়ন ও মুজিববর্ষে করণীয়

প্রকাশিত: ০৯:০১, ১৪ মার্চ ২০২০

জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন বাস্তবায়ন ও মুজিববর্ষে করণীয়

স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ শব্দটি উচ্চারণ করলেই বঙ্গবন্ধু শব্দটি উচ্চারিত হয়। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। যেন একটি ছাড়া অন্যটি বেমানান বা অসম্পূর্ণ। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে পৃথক করা যায় না। দুটি শব্দই বাংলা ও বাঙালীর চির প্রেরণার উৎস। তাই মুক্তিযুদ্ধের সর্বজনস্বীকৃত জাতীয় স্লোগান জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। যদিও কলঙ্কময় ’৭৫ পরবর্তীতে স্লোগান ২টি প্রায় নিষিদ্ধ ছিল। বঙ্গবন্ধুর আত্মজা জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব নেয়ার পর জাতি চৈতন্য ফিরে পায় এবং বাংলাদেশ ও জাতির পিতার মতাদর্শে বিশ্বাসী কিছু সাহসী মানুষ স্লোগানটি দিয়ে উদ্দীপ্ত হয়। আজও সরকারী বেসরকারী অধিকাংশ মানুষ জয় বাংলা, স্লোগানটি দিতে চায় না। অথচ ঔপনিবেশিক পাকিস্তান আমলে এমন কোন সরকারী কর্মকর্তা খুঁজে পাওয়া কষ্টকর ছিল, যিনি পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলেননি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েও যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, তারা জয় বাংলা স্লোগানের বিরোধিতা করেছে। তাহলে আজ কি এ কথা বলা যাবে- যারা জয় বাংলা বলতে চায় না, তারা স্বাধীনতার পক্ষে নয়? তবে একটি কথা বলাই যায়-স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের সুবিধাভোগ করবেন আর মুক্তিযুদ্ধের বা মহান স্বাধীনতার স্লোগানটি বিশ্বাস করবেন না, তা কি হতে পারে? এ বিষয়ে সমাজ বিজ্ঞানী বা মনোবিজ্ঞনীরা বিশ্লেষণ দিতে পারবেন। একইভাবে প্রশ্ন এসে যায় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী নয় বলেই কি স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধু যে সব জাতীয় দিকনির্দেশনা জাতিকে প্রদান করেছিলেন, তা জাতির নবপ্রজন্মের সম্মুখে তুলে ধরা হয়নি? দেশে জ্ঞানী গুণীসহ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহচরদের এটা কি বিস্মৃতি নাকি-সুবিধাবাদীদের ভোগবাদী চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকার কারণে অথবা সুবিধাভোগীরা স্বঅবস্থান ছেড়ে গণমানুষের কাতারে দাঁড়াতে পারেননি? সমাজ বিজ্ঞানীরা আগামীতে নিশ্চয়ই এ বিষয়ে যথার্থ উত্তর খুঁজে পাবেন। এসব বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা উদ্দেশ্য নয়। উদ্দেশ্য হচ্ছে-স্বাধীন বাংলায় জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধু বিষয়ে জাতীয় কি নির্দেশনা ছিল? বলার অপেক্ষা রাখে না যে কোন জাতি গঠনে সর্বাগ্রে যা প্রয়োজন, তা হলো শিক্ষা বা জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা কি হবে? স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে জাতি গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাবিষয়ক দিক নির্দেশনা বা দর্শন কী ছিল? মানবিক দর্শন নির্ভর রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করতেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বিশ্বাস করতেন মানুষকে সত্যিকার স্বাধীনতার স্বাদ দিতে হলে অবশ্যই তার ভেতরের সুপ্ত প্রতিভা ও প্রবল আকাক্সক্ষাকে জাগিয়ে তুলতে হবে। জাগরণের এ ভিত্তিভূমির হাতিয়ার হিসেবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমনস্ক শিক্ষা দর্শনকেই তিনি অধিকতর গুরুত্ব দিয়েছেন। স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ড. কুদরাত-ই খুদা শিক্ষা কমিশনের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘বর্তমান শিক্ষার নানাবিধ অভাব ও ত্রুটি বিচ্যুতি দূরীকরণে শিক্ষার মাধ্যমে সুষ্ঠু জাতি গঠনে এবং দেশকে আধুনিক জ্ঞান ও কর্মশক্তিতে বলীয়ান করার পথ নির্দেশের উদ্দেশ্যেই সরকার এ কমিশন নিয়োগ করেছেন।’ ১৯৭৪ সালের মে মাসে শিক্ষা কমিশনের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। সেখানে সকল স্তরে সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা চালু, ভবিষ্যত কর্মসংশ্লিষ্ট কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে । মূলত বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় প্রণীত ঐ প্রতিবেদনে শিক্ষায় বৈষম্যমুক্তি, সকল মানুষের সমান অধিকার, বিজ্ঞানভিত্তিক সার্বজনীন শিক্ষা এবং শিক্ষা-উত্তর কাজ পাওয়ার নিশ্চয়তার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ড. কুদরত-ই খুদার নেতৃত্বাধীন শিক্ষা কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণকালে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘আমি চাই আমার জনগণ যেন খেয়ে পরে সুন্দর জীবনযাপন করতে পারে। তাই আমি চাই কৃষি স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে।’ বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন তাঁর দেশের নাগরিকরা সেই শিক্ষায় দীক্ষিত হোক, যার মাধ্যমে মানুষ গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, দেশপ্রেম, মানবতা, নৈতিক মূল্যবোধে জাগ্রত হওয়ার পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অধিকতর প্রয়োগমুখী জ্ঞান ও দক্ষতার শিক্ষার মাধ্যমে সৃজনশীলতা এবং সামাজিক অগ্রগতি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মুক্তিতে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। তিনি শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালের ১৯ আগস্ট ছাত্রলীগের সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে সাবলীল ভাষায় বলেছিলেন- ‘কাজ কর, কঠোর পরিশ্রম কর, না হলে বাঁচতে পারবে না। শুধু বিএ, এমএ পাস করে লাভ নেই। আমি চাই কৃষি কলেজ, কৃষি স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল ও কলেজ, যাতে সত্যিকারের মানুষ পয়দা হয়। বুনিয়াদি শিক্ষা নিলে কাজ করে খেয়ে বাঁচতে পারবে।’ স্বাধীনতার পূর্বে যখনই তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পেয়েছেন-তখনই তা কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা বিস্তারে উদ্যোগী হয়েছেন। ১৯৫৪ সালে তৎকালীন সরকারের শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে সর্বাত্মকভাবে জনস্বার্থে ব্যবহার করে তারই মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ‘পূর্ব পাকিস্তান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করেন। যা স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ‘ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট’ হিসেবে পরিচিত। তিনি যথার্থভাবে উপলব্ধি করেছিলেন, শিল্পাঞ্চলে শিল্প কারখানা পরিচালনায় মধ্যম স্তরের প্রকৌশল জনবলের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। তাছাড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট যদি শিল্পাঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে ছাত্রছাত্রীরা“ঙহ ঃযব লড়ন প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ প্রকৌশলী হিসেবে গড়ে উঠবে। তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী শেখ মুজিবের এই সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা শুধু রাজনৈতিক বিজ্ঞতার স্বাক্ষর বহন করে না, বরং উন্নয়ন উৎপাদন ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষার প্রতিই তিনি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তৎকালীন সময়ের তরুণ রাজনৈতিক নেতা শেখ মুজিবের ঐ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রম পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় যে, বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন যে, প্রাগ ঐতিহাসিক যুগ থেকে সমাজ পরিবর্তনের মূল হাতিয়ার ছিল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির একেকটি আবিষ্কার। সমাজ সভ্যতার অগ্রগতির ইতিহাসই হলো প্রযুক্তির নব নব উদ্ভাবনের ইতিহাস। যা তৎকালীন তরুণমন্ত্রী শেখ মুজিবের নিকট সুস্পষ্ট ছিল। তাই তিনি সরকারী সুযোগের সদ্ব্যবহার করে পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বুঝেছিলেন প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন মানবসম্পদ গড়তে পারলে মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়া সম্ভব। বঙ্গবন্ধুর এই প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্ত আজ জাতিকে নতুনভাবে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করছে। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের সরকার জাতির পিতার প্রদর্শিত পথের বিপরীতমুখী ছিল বিধায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর জাতি গঠনের দর্শনসমূহ প্রায় হারিয়ে যাচ্ছিল। দিকভ্রান্ত জাতির এই সংকটকালীন সময়ে রাষ্ট্রের দায়িত্বভার অর্পিত হয় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ওপর। তারই প্রেক্ষিতে বাঙালী জাতি পুনরায় তার অস্তিত্ব রক্ষার চেতনা ফিরে পায় এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে ও জাতির পিতার শিক্ষা দর্শন বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সামগ্রিক শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তি বা কারিগরি শিক্ষাকে মূল¯্রােতধারায় পরিণত করার লক্ষ্যে ন্যূনতম ৫০% কারিগরি শিক্ষা বাস্তবায়নে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন শুরু করেছে। বর্তমান সরকারের জাতি গঠনমূলক কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা বিস্তারের কার্যক্রমে নানামুখী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রতিবন্ধকতা প্রত্যাশিত নয়। প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন ২০২০ সালে সকল উচ্চ বিদ্যালয় পর্যায়ে কারিগরি শিক্ষা কোর্স প্রবর্তন করতে। কিন্তু তা করা সম্ভব হয়নি। অতঃপর সিদ্ধান্ত হয় ২০২১ সালে শুরু করার। তাও যথাযথ বাস্তবায়ন হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কেননা, ২০২১ সালে কারিগরি শিক্ষা কোর্স প্রবর্তন করতে হলে ৫/৬ মাস পূর্বেই কয়েক হাজার শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করে সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে কোর্স শুরুর ২/৩ মাস পূর্বে শিক্ষকদের পোস্টিং দেয়া প্রয়োজন। যার কোন প্রস্তুতি এখনও লক্ষণীয় নয়। একইভাবে বিগত দীর্ঘ ৩০ বছর থেকে পলিটেকনিকসমূহে দ্বিতীয় শিফটে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলেও এখন পর্যন্ত কোন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। সকল পলিটেকনিকে ১০/১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য যে ৩ হাজার শিক্ষক ছিল, তাদের দিয়েই প্রায় ৫০/৫৫ হাজার শিক্ষার্থীকে শিক্ষাদান করা হচ্ছে। অথচ ৫০/৫৫ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ১৩ হাজার শিক্ষক কর্মচারী প্রয়োজন। তাও গত কয়েক মাস পূর্বে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা দেয়ার পর জানা গেল পলিটেকনিকে ১৩ হাজার শিক্ষক কর্মচারীর প্রয়োজনীয়তা সংশ্লিষ্টদের উপলব্ধিতে এসেছে। প্রশ্ন হচ্ছে গত ৩০ বছর আমরা কী করেছি? অধিকন্তু ইনস্টিটিউটসমূহে সরকারী টার্গেট পূরণে ২/৩ গুণ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলেও দীর্ঘদিন কোন নতুন ক্লাস রুম বা ল্যাব সৃষ্টি করা হয়নি। বিশ্বব্যাপী ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতিলগ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা প্রদান করলেও বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করতে আমরা কি ব্যর্থ হচ্ছি? যেখানে প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন থেকে বলে আসছেন প্রযুক্তি শিক্ষা ব্যতীত বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা যাবে না। সরকার প্রযুক্তি শিক্ষাকে অগ্রাধিকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে আখ্যায়িত করে জরুরী পদক্ষেপের নির্দেশনা প্রদান করলেও তা নানা নিয়ম কানুনের কথা বলে বিলম্বিত করা হচ্ছে। তখন কি বলা যাবে-জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জাতি গঠনের শিক্ষা দর্শন বাস্তবায়নে তাঁর জন্মশতবর্ষে আমরা সফল হব? বর্তমানে স্বাধীনতার পক্ষের জননন্দিত সরকারের শুভ উদ্যোগের প্রেক্ষিতে সমগ্র জাতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুর দর্শনের ভিত্তিতে আমাদের সকলের উচিত হবে ঘুষ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিরোধে করণীয়, দেশের কৃষক শ্রমিক মেহনতি গণমানুষের প্রতি সম্মানসূচক আচরণ, দারিদ্র্য দূরীকরণে করণীয়, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সামরিক- বেসামরিক কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন, সমবায়ভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাপক কর্মসূচী নিয়ে সুদৃঢ় অঙ্গীকারে জাতীয় ঐক্যবদ্ধতা সৃষ্টি করা। আমার মনে হয় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর এ বছরে এদেশের প্রতিটি সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে বর্তমান থেকে আগামী এক বছরের জন্য ৩টি বিষয়ে যথা (১) কে কতটুকু উন্নয়ন করতে পারি, (২) কি সেবা বৃদ্ধি করতে পারি, (৩) সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও আত্মত্যাগের বিষয় প্রচার ও জনসংযোগ কার্যক্রম পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে নানামুখী লোক দেখানো বাহুল্য কর্মসূচী পরিহার করে বঙ্গবন্ধুর মানবিক ও সামাজিক দর্শন ও আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করে তার যথার্থ বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। যদি সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, সংস্থা রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে পরিকল্পনামাফিক উদ্যোগী হয় তাহলে জাতির পিতার চির কাক্সিক্ষত ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। সফল ও সার্থক হবে মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন। লেখক : সভাপতি, আইডিইবি
×