ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চসিক নির্বাচন

রেজাউল ও শাহাদাতের বিরামহীন প্রচার

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ১২ মার্চ ২০২০

রেজাউল ও শাহাদাতের বিরামহীন প্রচার

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে চলছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ সকল দলের প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচার। প্রতিদিন কোন না কোন এলাকায় চলছে গণসংযোগ। মহানগরীর ৪১টি ওয়ার্ডকে বিভিন্নভাগে ভাগ করে নেমেছেন কর্মী-সমর্থকরা। কোথাওবা মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী নিজেই, আবার কোথাওবা তাদের সমর্থকরা যাচ্ছেন ভোটারদের কাছে। সঙ্গে থাকছেন সিনিয়র স্থানীয় নেতারা। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রচারে প্রাধান্য পাচ্ছে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা, অপরদিকে বিএনপির প্রচারে আসছে উন্নয়নের পাশাপাশি দেশে গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে ধানের শীষের পক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহবান। চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বুধবার গণসংযোগ চালান মহানগরীর মোহরা, চান্দগাঁও ও ষোলোশহর এলাকায়। এ সময় তিনি বর্তমান সরকার আমলে বাস্তবায়িত এবং বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্প তুলে ধরে নির্বাচিত হলে উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, চলমান প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে নগর জীবনে দুর্ভোগ অনেকটাই দূর হবে। চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ হাতে নিয়েছেন। সেজন্য নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গণসংযোগে গেলে সেখানে সাধারণ মানুষের বিপুল সাড়া মেলে। প্রার্থী ও তার সঙ্গীরা ভোটারদের মধ্যে প্রচারপত্র বিলি করেন। প্রদান করেন এলাকায় উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ সাবেক চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, চসিক প্যানেল মেয়র জোবাইদা নার্গিস খান এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা। চসিক নির্বাচন সামনে রেখে এদিন মহানগর যুব মহিলা লীগের সঙ্গে মত বিনিময় করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। বক্তব্যে তিনি বলেন, দলের আদর্শিক স্বার্থ সমুন্নত রেখে ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র স্বার্থগুলোকে পরিহার করে ঐক্যের ভিক্তি সুদৃঢ় করতে হবে। আমরা যদি তা পারি তাহলে এ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থীকে কেউ ঠেকাতে পারবে না। মোশাররফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জনবান্ধব সরকার। তিনি সমাজের অনগ্রসর ও পশ্চাৎপদ শ্রেণীর জীবনমান উন্নয়নে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধীসহ বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর বিশাল অংশকে ভাতার আওতায় এনেছেন। এর ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমানের শ্রী বৃদ্ধি হয়েছে। সরকারের সমস্ত অর্জন ও সফলতা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে জনগণের মন জয় করে চসিক মেয়র পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী করা আমাদের সকলের নৈতিক ও আদর্শিক দায়িত্ব। অনুষ্ঠানে দলীয় মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমার কোন চাওয়া-পাওয়া নেই। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলায় আদর্শিক ও সামষ্টিক স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়ে আসছি। যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা প্রতিটি এলাকায় ঘরে ঘরে আমার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সালাম পৌঁছে দিন। আমার পূর্বসূরি মেয়র এবিএম মহীউদ্দীন চৌধুরী এবং বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন চট্টগ্রামের উন্নয়নে যে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখেন, আমি মেয়র নির্বাচিত হলে অগ্রাধিকার ভিক্তিতে সেগুলো বাস্তবায়ন করব। চট্টগ্রাম মহানগর যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক অধ্যাপিকা সায়রা বানু রৌশনীর সভাপতিত্বে ও মমতাজ বেগম রোজীর সঞ্চলনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময়র সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা জসিম উদ্দীন শাহ প্রমুখ। মতবিনিময় সভায় যুব মহিলা লীগের ৪৩টি ওয়ার্ডের সাংগঠনিক নেত্রীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির প্রার্থী ডাঃ শাহাদাত হোসেন বুধবার গণসংযোগ চালান চান্দগাঁও, বহদ্দারহাট, পশ্চিম ষোলোশহর, বিবিরহাট, হামজারবাগ, আতুরার ডিপো ও আমিন কলোনি এলাকায়। এ সময় তিনি জয়ের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমরা জেতার জন্যই মাঠে নেমেছি। নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামকে একটি সুন্দর ও পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তুলব। মুজিববর্ষ উপলক্ষে চসিকের বর্ণাঢ্য কর্মসূচী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য কর্মসূচী গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে নগরীর সকল গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, সড়কদ্বীপ ও পার্কে আলোকসজ্জা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অভিযান, আতশবাজি, চসিক পরিচালিত স্কুলগুলোর ১৫ হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে অনুষ্ঠান এবং উন্নয়নের চলমান প্রকল্পগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন ইত্যাদি। বুধবার দুপুরে চসিকের ৫৬তম সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্তগুলোর কথা জানান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। চসিক মেয়র বলেন, আগামী ১৭ মার্চ শুরু হচ্ছে মুজিববর্ষ, যা ২০২১ সালের ১৭ মার্চ শেষ হবে। এ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য কর্মসূচীর আওতায় সকল স্থাপনাসহ নগরীর সকল গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, সড়ক দ্বীপ, মোড় ও পার্কে আলোকসজ্জা এবং বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত বিলবোর্ড স্থাপন করছে। গৃহীত কর্মসূচী প্রতিপালনে কার্পণ্য করা যাবে না। পরিচ্ছন্ন গ্রাম, পরিচ্ছন্ন শহর বিনির্মাণে চসিক স্বল্প ও মধ্যম মেয়াদী কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। এই কর্মসূচীর আওতায় নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে ১০ সেলের মাধ্যমে ১৭ মার্চ রাত ৮টায় আতশবাতি জ¦ালানো, একই সময়ে ১৫ স্থান থেকে ফানস উড়ানো হবে। ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২০ উদ্যাপনের লক্ষে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চসিক পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১৫ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০১০ জন মুজিবকোর্ট পরিহিত শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। মেয়র চলমান প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, গুণগতমান অক্ষুণœ রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে হবে। চসিকের কারণে মুজিববর্ষের কর্মসূচী যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে বিষয়ে সকলকে সর্তক করেছেন সিটি মেয়র।
×