ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফরাসী সঙ্গীতশিল্পী মানু চাওয়ের গানে মুগ্ধ দর্শকশ্রোতা

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ১২ মার্চ ২০২০

ফরাসী সঙ্গীতশিল্পী মানু চাওয়ের গানে মুগ্ধ দর্শকশ্রোতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সঙ্গীতপ্রেমীদের জন্য সন্ধ্যাটি ছিল মনোরম। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তন বুধবার সন্ধ্যায় দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতিতে কানায় কানায় ভর্তি। বেশিরভাগ দর্শক ছিল বিদেশী। বিকেল থেকে জাতীয় নাট্যশালার লবিতে দর্শকের ছিল সরব উপস্থিতি। প্রিয় সঙ্গীতশিল্পী মানু চাওকে এক নজর দেখা এবং তার কণ্ঠের গান শোনার অভিপ্রায়ে অনেক বিদেশী পরিবারসহ হাজির হয়েছেন শিল্পকলা একাডেমিতে। জীবন বিধ্বংসী করোনাভাইরাসের আতঙ্ক উপেক্ষা করে অগণিত দর্শকের উপস্থিতি নজর কেড়েছে। স্পেনীয় বংশোদ্ভূত ফরাসী সঙ্গীতশিল্পী মানু চাও। কোন এক সময়ে প্যারিসের পথঘাট, স্টেশন আর মেট্রোতে গান করতেন তিনি। আবার হট প্যান্টস এবং লস কারায়্যসের মতো ব্যান্ডের সঙ্গে গান করার সুযোগও হয়েছিল তার। নানা ভাষা ও বিচিত্র সুরভঙ্গি আয়ত্তে নিয়ে গাইতে গাইতে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। স্পেনীয়, ফরাসী, ইংরেজী, ইতালীয়, গ্যালিসীয়, পর্তুগিজ ছাড়াও কয়েকটি ভাষায় গান করেন। খ্যাতিমান ব্রিটিশ সাংবাদিক নাইজেল উইলিয়ামসন এই শিল্পীকে নিয়ে লিখেছেন, মানু চাওকে বব মারলে এবং জো স্ট্রামার উত্তরসূরি বললে ভুল হবে না। বহু দেশ মাতিয়ে তিনি এসেছেন বাংলাদেশে। রাজধানীর সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে জনপ্রিয় শিল্পী মানু চাওয়ের একক কনসার্টের আয়োজন করেছে ঢাকার আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ। এ কনসার্টে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশের ফরাসী দূতাবাস ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। মানু ভাই এ্যান্টনি চাও, চাচাত ভাই সান্টি এবং কয়েক বন্ধুকে নিয়ে ১৯৮৭ সালে গড়ে তুলেছিলেন গানের দল মানো নেগ্রা। ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল দলটি। বিশেষ করে ইউরোপে এ দল পেয়ে যায় একচেটিয়া খ্যাতি। ১৯৯৪ সালে মানো নেগ্রা ভেঙ্গে যায়। এর পর দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায় নতুন সব গান রেকর্ড করে কাটিয়ে দেন মানু। ১৯৯৮ সালে সেই গানগুলো নিয়ে ক্লানদেসতিনো নামে একটি এ্যালবাম প্রকাশ করেন। শুরুতে তেমন জনপ্রিয়তা না পেলেও একপর্যায়ে ফ্রান্সে সেই গানগুলো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষ করে ‘বঙ্গো বং’ এবং ‘ক্লাসদেসতিনো’ গান দুটি। ১৯৯৯ সালে শ্রেষ্ঠ গানের এ্যালবাম হিসেবে ভিকটোয়াহে দ্য লা মুজিক এ্যাওয়ার্ড জিতে নেয় সেটি। বিশ্বব্যাপী ৫০ লাখের বেশি বিক্রি হয় সেটি। সহ¯্রাব্দের সন্ধিক্ষণে ঘরছাড়া ও অভিবাসীদের নিয়ে গান থাকায় মানুর এ্যালবামটি বিশ্ব পপ মিউজিকের গুরুত্বপূর্ণ গানের এ্যালবাম হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠানে শিল্পী মানু চাও সেই এ্যালবামের জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করেন। দর্শক সারি থেকে প্রতিটি গানের শেষে করতালি দিয়ে শিল্পীকে অভিনন্দন জানান। এর পর তিনি বিভিন্ন ভাষার গান শুনিয়ে দর্শককে মুগ্ধ করেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল স্পেনীয়, ফরাসী, ইংরেজী, ইতালীয়, গ্যালিসীয়, পর্তুগিজ ভাষার গান। মঞ্চে উঠে মানু সবাইকে শুভেচ্ছা জানান এবং বাংলাদেশের আতিথেয়তা সম্পর্কে খুবই সন্তুষ্টির কথা প্রকাশ করেন।
×