বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দলে অনুপ্রবেশকারী যাতে না ঢুকে সেজন্য দলের নেতাকর্মীদের সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের মধ্যে কিছু সুযোগসন্ধানী ও সুবিধাবাদীদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। দল থেকে এসব সুযোগসন্ধানীকে বের করে দেয়ার কাজ চলছে। আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল, অনেকে দল করে কিন্তু নেতৃত্বে আসতে পারেন না। তাই আওয়ামী লীগ ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনার প্রতি অবিচল আস্থাশীল ব্যক্তিরাই আগামীতে নেতৃত্বে আসবেন।
বুধবার ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ের নতুন ভবনে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কথা বলেন। পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে করোনাভাইরাস নিয়ে রাজনীতি না করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস একটি বৈশ্বিক দুর্যোগ। তাই বিএনপিকে বলবÑ এ নিয়ে প্রশ্ন কিংবা রাজনীতি না করতে। রাজনৈতিক বাদানুবাদ না করে একযোগে কাজ করা প্রয়োজন। তাদের বলব সবকিছুর মধ্যে রাজনীতি না খোঁজার জন্য।
তিনি বলেন, বিএনপির কাজই হচ্ছে সমালোচনা করা। তারা ভুল খোঁজার রাজনীতি করছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বলব এ বিষয়ে একটু পড়াশোনা করার জন্য। করোনাভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করা যায় না। সংক্রমিত হওয়ার ১৪ দিন পরে তার দেহে করোনাভাইরাস আছে কিনা সেটি নির্ণয় করা যায়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস একটি বৈশ্বিক দুর্যোগ। অর্থনৈতিক ও কারিগরি সক্ষমতা আমাদের চেয়ে বেশি হওয়া সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, বেলজিয়াম, সিঙ্গাপুরসহ পৃথিবীর প্রায় এক শ’টি দেশ করোনাভাইরাস থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দেশে এ রোগের চিকিৎসার জন্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। সেই মোতাবেক কার্যক্রম চলছে।
বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বার বার হত্যার চক্রান্ত করা হয়েছে। তার পরেও তিনি দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। কিন্তু এদেশে রাজনীতির নামে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত রাজনীতির নামে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। রাজনীতির নামে এমন সহিংসতা সমসাময়িক সময়ে পৃথিবীর কোথাও হয়নি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, দলের অধীনে সরকার, সরকারের অধীনে দল নয়। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংগঠনিক কর্মকা-ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। প্রধানমন্ত্রী একদিকে সরকার পরিচালনা করছেন, অন্যদিয়ে দলের খোঁজ-খবর রাখছেন। শেখ হাসিনাই আমাদের দলের অফুরন্ত প্রেরণার উৎস। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কোন সর্মসূচী বাতিল করা হয়নি, পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
আলোচিত পাপিয়া ইস্যুতে জড়িয়ে নাম প্রকাশ করায় একটি পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে কিছু কাল্পনিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সত্যতা যাচাই না করে সংবাদ মাধ্যমে এ ধরনের তালিকা প্রকাশ করলে সে দায় তারা এড়াতে পারেন না। যাচাই-বাছাই ছাড়া নাম প্রকাশ করা দায়িত্বশীলতার মধ্যে পড়ে না। দায়িত্বহীনতার দায় তাদের নিতে হবে। একজন সংসদ সদস্য এ বিষয়ে আদালতে মামলা করেছেন। কেউ সংক্ষুব্ধ হলে আইনের আশ্রয় নিতেই পারেন।
এ সময় রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খানসহ নাটোর জেলা, থানা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
