ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে টাইগারদের জয় ৯ উইকেটে;###;বাংলাদেশ-জিম্বাবুইয়ে

টি২০তেও হোয়াইটওয়াশ জিম্বাবুইয়ে

প্রকাশিত: ১১:২৭, ১২ মার্চ ২০২০

টি২০তেও হোয়াইটওয়াশ জিম্বাবুইয়ে

মিথুন আশরাফ ॥ জিম্বাবুইয়েকে দ্বিতীয় টি২০তে ৯ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ জয় করে নিয়েছে বাংলাদেশ। একমাত্র টেস্টে জয়ের পর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। এরপর টি২০ সিরিজেও সফরকারীদের একই লজ্জা দিল টাইগাররা। প্রথমবারের মতো কোন দলের বিরুদ্ধে সব ফরমেটের পূর্ণাঙ্গ সিরিজের সব ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ। টেস্ট ম্যাচটি ছাড়া বাংলাদেশ ও জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে সব ম্যাচেই আগে ব্যাটিং করে জিতেছে বাংলাদেশ। এবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচটিতে এসে বাংলাদেশ টসে জিতলেও ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওপেনার তামিম ইকবাল, পেসার শফিউল ইসলাম ও স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে বিশ্রামে রেখে ওপেনার নাঈম শেখ ও অভিষিক্ত পেসার হাসান মাহমুদকে ঝালিয়ে নেয়া হয়। আর একাদশে ফিরেন পেসার আল-আমিন হোসেন। জিম্বাবুইয়ে ডোনাল্ড তিরিপানোকে শেষ ম্যাচটিতে বিশ্রামে রাখে। ব্রেন্ডন টেইলরের (৫৯*) দুর্দান্ত ইনিংসের পরও একাধিক ক্যাচ হওয়া থেকে জিম্বাবুইয়ে ব্যাটসম্যানরা বেঁচেও ৭ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১১৯ রানের বেশি করতে পারেনি সফরকারীরা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টি২০তে সর্বনি¤œ রানও করে জিম্বাবুইয়ে। বল হাতে আল-আমিন ও মুস্তাফিজ ২টি করে উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে লিটন কুমার দাশের অপরাজিত ৬০ ও সৌম্য সরকারের অপরাজিত ২০ রানে ১ উইকেট হারিয়ে ১৫.৫ ওভারে ১২০ রান করে জিতে বাংলাদেশ। লিটন কুমার দাশ ও নাঈম মিলে এমনই দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকেন, ৬ ওভারে ৪৪ রান স্কোরবোর্ডে জমা হয়ে যায়। যেভাবে ব্যাটিং করতে থাকেন দুই ওপেনার মনে হয় প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে ১০ উইকেটের জয়টি পেয়ে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু তা আর হয়নি। দলের ৭৭ রানে গিয়ে নাঈম (৩৩) আউট হয়ে যান। লিটন আবারও হাফ সেঞ্চুরি করেন। ৩৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন। তুখোড় ফর্মে আছেন। ১৪তম ওভারেই ১০০ রান করে ফেলে বাংলাদেশ। লিটন ও সৌম্য মিলে ৪৩ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়ে দেন। লিটন ৪৫ বলে ৮ চারে অপরাজিত ৬০ রান করেন। আর সৌম্য ১৬ বলে ২ ছক্কায় অপরাজিত ২০ রান করেন। বাংলাদেশ সহজেই ২৫ বল হাতে রেখে জিম্বাবুইয়েকে প্রথমবারের মতো ৯ উইকেটে হারায়। একাদশে ফিরে নিজের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই ওপেনার তিনাশে কামুনহুকামওয়েকে (১০) আউট করে দেন আল-আমিন। আর অভিষেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে নিজের প্রথম ওভারের শেষ বলেই ৩ রানে থাকা ব্রেন্ডন টেইলরকে আউট করে দিতে পারতেন হাসান মাহমুদ। যদি আল-আমিন ক্যাচটি ধরতে ব্যর্থ না হতেন। ১২ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ১৬ রানেই দ্বিতীয় উইকেট হারিয়ে বসত জিম্বাবুইয়ে। কিন্তু আল-আমিনের ক্যাচ মিসে তা হয়নি। পাওয়ার প্লেতে ৬ ওভারে ৩১ রান করার পর ১০ ওভারে গিয়ে ৬২ রান করে জিম্বাবুইয়ে। দলের ৫৭ রানের সময় মেহেদী হাসানের বলে ২৩ রানে থাকা ক্রেইগ আরভিন ‘রিভিউ’ নিয়ে এলবিডব্লিউ থেকে বাঁচেন। তবে ইনিংস আর বেশি বড় করতে পারেননি। আফিফ হোসেন ধ্রুব নিজের প্রথম ওভার করতে এসে প্রথম বলেই আরভিনকে (২৯) আউট করে দেন। আরভিন আর টেইলরের ৫৭ রানের জুটি ভেঙ্গে দেন আফিফ। দলের ৬৯ রানে আরভিন আউটের পর উইলিয়ামসন (৩) ব্যাট হাতে নেমে বেশিদূর যেতে পারেননি। মেহেদী বেশিদূর যেতে দেননি। দলের ৭৬ রানে উইলিয়ামসকে আউট করার পর রানের খাতা খোলার আগেই সিকান্দার রাজাকেও আউট করার সুযোগ মিলে। মেহেদীর ঘূর্ণি বলে লংঅনে শট খেলেন সিকান্দার। সহজ ক্যাচ ধরতে পারেননি সৌম্য। সাইফউদ্দিন এসে সিকান্দারকে (১২) আউট করে দেন। কিন্তু ওপেনিংয়ে নামা টেইলরকেই আউট করা যাচ্ছিল না। একবার ‘নতুন জীবন’ পেয়ে দলকে ভালভাবেই এগিয়ে নিয়ে যান। ১৭ ওভারে ১০০ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে জিম্বাবুইয়ে। যখন দলের রান ১০৮ হয় তখন টিনোটেন্ডা মুটুম্বদজিকে (৩) আউট করে দেন মুস্তাফিজ। টেইলর বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৪২ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন। তবে ওয়েসলি মাধেভেরেকে রানের খাতাই খুলতে দেননি মুস্তাফিজ। শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুইয়ে ১১৯ রান করতে পারে। এর আগে খুলনায় দুই দলের মধ্যকার প্রথম টি২০ ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সর্বনি¤œ ১২৩ রান করেছিল জিম্বাবুইয়ে। এবার সেই রানের চেয়েও কম করে। তবে যে টেইলর ৩ রানে আউট হতে পারতেন, তিনি ৪৮ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন। তার এই ইনিংসেই জিম্বাবুইয়ে যতটা পথ পাড়ি দিতে পারে। কিন্তু স্কোরবোর্ডে রান বেশি জমা হয়নি। আর তাই বাংলাদেশ ৯ উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়ে জিম্বাবুইয়েকে টি২০ সিরিজেও হোয়াইটওয়াশ করে। স্কোর ॥ বাংলাদেশ-জিম্বাবুইয়ে দ্বিতীয় টি২০ টস ॥ বাংলাদেশ (ফিল্ডিং)। জিম্বাবুইয়ে ইনিংস- ১১৯/৭; ২০ ওভার; টেইলর ৫৯*, আরভিন ২৯, সিকান্দার ১২, কামুনহুকামওয়ে ১০; আল-আমিন ২/২২, মুস্তাফিজ ২/২৫। বাংলাদেশ ইনিংস- ১২০/১; ১৫.৫ ওভার; লিটন ৬০*, নাঈম ৩৩, সৌম্য ২০*; এমপফু ১/২৭। ফল ॥ বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী।
×