ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টি২০তে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লক্ষ্য জিম্বাবুইয়ের

জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চায় টাইগাররা

প্রকাশিত: ১১:০০, ১১ মার্চ ২০২০

জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চায় টাইগাররা

মিথুন আশরাফ ॥ বাংলাদেশ ও জিম্বাবুইয়ের মধ্যকার দ্বিতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আজ। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টায় ম্যাচটি শুরু হবে। ম্যাচটিতে বাংলাদেশ জিতলেই সিরিজ জয় করবে। জিম্বাবুইয়েকে টি২০তে হোয়াইটওয়াশ করবে। প্রথম টি২০তে ৪৮ রানে জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। এখন দ্বিতীয় টি২০তেও জিম্বাবুইয়েকে হারালে জিম্বাবুইয়ের এবারের বাংলাদেশ সফরে শতভাগ সাফল্য কুড়িয়ে নেবে টাইগাররা। দল যে অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল তা থেকে নিজেদের সামলে নিয়েছে। এখন শেষ ম্যাচটিতেও জিম্বাবুইয়েকে হারানো গেলেই হয়। বাংলাদেশ টি২০ দলের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেছেন, ‘আমরা যেভাবে ব্যাটিং করে যাচ্ছি তা অসাধারণ। তামিম ও লিটন মিলে শুরুটা দারুণ করছে। সৌম্য (শেষ ম্যাচে) দুর্দান্তভাবে শেষ করেছে ইনিংস। বোলাররাও যেভাবে নিজেদের মেলে ধরছে তা দুর্দান্ত। আমরা যেভাবে খেলছি সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেই হবে।’ বোঝাই যাচ্ছে, দ্বিতীয় টি২০তেই দাপট দেখিয়েই জয়ের আশা করছেন মাহমুদুল্লাহ। জিম্বাবুইয়েকে এবার হারিয়েই চলেছে বাংলাদেশ। টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারানোর পর জিম্বাবুইয়েকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। এরপর সোমবার প্রথম টি২০তেও জিম্বাবুইয়েকে উড়িয়ে দিয়েছে। সৌম্য (৬২*) ও লিটনের (৫৯) দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের সঙ্গে তামিমের (৪১) শুরুর নৈপুণ্যে ২০০ রান করে বাংলাদেশ। জিম্বাবুইয়ে ১৫২ রানেই অলআউট হয়ে গিয়ে ৪৮ রানে হারে। জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে রেকর্ড গড়ে জিতে বাংলাদেশ। জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে নিজেদের টি২০ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। আবার বল হাতে যে মুস্তাফিজ ৩ উইকেট শিকার করেন, সঙ্গে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব হ্যাটট্রিকের আশা জাগিয়ে ৩ উইকেট নেন; তাতে স্বস্তিও ফিরে। টি২০ ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো দুই শ’ রানের স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ স্কোর গড়ার রেকর্ডও হয়ে যায়। জিম্বাবুইয়েকে পাত্তাই দেয়নি বাংলাদেশ। একটা সময় ছিল যখন জিম্বাবুইয়ের কাছে একেবারেই পাত্তা পেত না বাংলাদেশ। নাস্তানাবুদ হতো। ১৯৯৭ সাল থেকে টানা ২০০৪ সাল পর্যন্ত তাই চলে। কিন্তু ২০০৫ সালে যেই জিম্বাবুইয়েকে প্রথমবার টেস্টে হারানো যায়, প্রথমবার সিরিজ জয় করে নেয়া যায়; সেই থেকে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের দাপট শুরু হয়ে যায়। এখন তো জিম্বাবুইয়েকে হেসে খেলে হারায় বাংলাদেশ। ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে যখন জিম্বাবুইয়েকে প্রথম সিরিজে হারায় বাংলাদেশ, এক মাস পরই আন্তর্জাতিক টি২০ ক্রিকেটের পথ চলা শুরু হয়। বাংলাদেশ ও জিম্বাবুইয়ে পরের বছরই টি২০ খেলাও শুরু করে দেয়। তবে এবারের সফরের আগে কখনই বাংলাদেশের মাটিতে তিন ফরমেটের পূর্ণাঙ্গ সিরিজ একবারও হয়নি। এবারই প্রথম হয়েছে। আর প্রথমবারেই বাংলাদেশ বাজিমাত করেছে। জিম্বাবুইয়ের মাটিতে এর আগে ২০১৩ সালে অবশ্য তিন ফরমেটের সিরিজ হয়েছে। সেই সিরিজের ওয়ানডে ফরমেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। টেস্ট ও টি২০ সিরিজে ড্র করেছিল। এরপর থেকে বাংলাদেশ শুধু জিতেই চলেছে। একবারও আর বাংলাদেশের কোন সিরিজে হার হয়নি। ড্র হয়েছে। তবে হার হয়নি। এবারও সেই ধারাবাহিকতা বজায় থেকেছে। আজ জিম্বাবুইয়েকে হারালে টেস্ট, ওয়ানডের পর টি২০ সিরিজও জয় করে নেয়া হবে। সঙ্গে জিম্বাবুইয়েকে টি২০ সিরিজেও হোয়াইটওয়াশ করবে বাংলাদেশ। আজ যদি বাংলাদেশ জিতে তাহলে এবার টানা ছয় ম্যাচে জিম্বাবুইয়েকে হারানোও হবে। যেভাবে বাংলাদেশ দল জিম্বাবুইয়েকে নাস্তানাবুদ করে চলেছে তাতে তো জিম্বাবুইয়েকে হারানো খুবই সম্ভব। জিম্বাবুইয়ে অধিনায়ক শন উইলিয়ামস বলেছেন, ‘আমরা শট নির্বাচনে ভুল করছি। আরেকটি রাত আছে। শেষ রাত। এ রাতে ছয় নম্বর (হার) হতে পারে। তবে আশা করছি এই রাত আমাদের দিকে ঘুরে আসবে।’ যেভাবে একের পর এক ম্যাচ হেরে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন জিম্বাবুইয়ে ক্রিকেটাররা আর আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়ে আছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা, তাতে কী রাত জিম্বাবুইয়ের হতে পারে? তা বাংলাদেশেরই হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। দাপট যে দেখিয়েই চলেছেন টাইগাররা। আজ শেষবারের মতো দ্বিতীয় ও শেষ টি২০তে তা দেখিয়ে দিলেই হলো। জিম্বাবুইয়েকে শূন্য হাতে দেশে ফেরানো হয়ে যাবে।
×